সিনেমা সমালোচনা...
১০০% মস্তি
মাত্র এক মাস আগের জয়পুর ভ্রমণের স্মৃতি এখনও টাটকা। তারই মধ্যে ‘শুধ্ দেশি রোম্যান্স’ দেখতে গিয়ে হাওয়া মহলের উলটো দিকের ওই চায়ের দোকান, সিটি প্যালেসের মূল ফটকের সামনে কামান, আজমের ফোর্টের সিঁড়িগুলো, কিংবা ফোর্টের ভেতরে নীল গলিগুলো এরকম হাজারটা নিদর্শন জয়পুরের ওই বহুস্তরীয়, রঙিন, সদা চঞ্চল, অন্তর্মুখীনতা বিবর্জিত সমাজ ও লোকজীবনের সমগ্র ছবিটা সিনেমার পরদায় উঠে আসতে দেখে এটা স্বীকার করতেই হল যে, বলিউড ছবিও এখন রীতিমত বাস্তবচারী। তাতে কমার্শিয়াল দিকটা কিছুমাত্র পশ্চাদমুখী হয়নি।
‘শুধ্ দেশি রোম্যান্স’ একটা ভরপুর উপভোগ্য ছবি হয়ে ওঠে দুটো বৈশিষ্ট্যের জন্য।
, ব্যাকড্রপে অথেনটিক ও স্বয়ংক্রিয় জয়পুর থাকায়। আর
, অবশ্যই গল্পের জোরে।
অথচ মজাটা এখানেই যে গল্পের চরিত্ররা এই ভারতের যে কোনও জায়গায় এমনকী জয়পুরের মতো ছোট শহর থেকে শুরু করে মেট্রো সিটিগুলোতেও সমানভাবে সত্য বলে বিবেচিত হতে পারত এই নব্য সময়ে। কেন এ কথা বলছি, বোঝাতে গল্প একটু বলতেই হবে।
শুধ্ দেশি রোম্যান্স
সুশান্ত সিংহ রাজপুত, পরিণীতি, ঋষি কপূর
নায়ক রঘুরাম সীতারাম (সুশান্ত সিংহ রাজপুত) আদতে এক ট্যুরিস্ট গাইড। আর সে একই সঙ্গে ঋষিকপূরের নকল বরযাত্রী সাপ্লাই কোম্পানিতে পার্টটাইম কাজ করে। রঙিন স্যুট-টাই পরে সে নানান বিয়েতে কখনও বরের ভাই সেজে, কখনও দুবাইওয়ালে চাচার ছেলে সেজে গিয়ে বিয়ের আসর জমায় ও এই ভাবে দু’পয়সা রোজগার করে। কিন্তু এ বার সে নিজেই বিয়ে করতে যাচ্ছে আর তার নকল বিয়ের বরযাত্রীতে এক হাজার টাকার বিনিময়ে তার দিদির ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে স্বয়ং পরিণীতি চোপড়া।
বরযাত্রীর বাসে চড়ে কনের গ্রামে যেতে যেতে সারারাত রঘুরাম সীতারাম পরিণীতির কাছে নিজের বিয়ে করা নিয়ে তৈরি হওয়া মনের দ্বন্দ্ব আর বিষণ্ণতার কথা বলতে বলতে যায়। যাকে সে চেনে না, জানে না, ভালবাসে না, তাকে কী করে বিয়ে করতে যাচ্ছে, এই দুশ্চিন্তায় ছটফট করতে করতে সে বলে, পরিণীতির মতো মেয়ে পেলে সে বিয়ে করতে এত ভয় পেত না। যাওয়ার পথে প্রেম-ট্রেম না হলেও রঘুরাম আর পরিণীতি চুম্বনেও প্রবিষ্ট হতে দ্বিধা করে না! এই অবধি ঠিক ছিল, কিন্তু বিয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বরমালা পরার প্রাক্মুহূর্তে বিয়ে নিয়ে অনিশ্চিত ও নার্ভাস রঘুরাম বাথরুম যাওয়ার নাম করে পালায় ছাদ-টাদ টপকে! অর্থাৎ ‘দুলহা ভাগ গ্যয়া’!
গল্পের এই ট্যুইস্টের পর একের পর এক ট্যুইস্ট আধারিত এক মজাদার ছবি ‘শুধ্ দেশি রোম্যান্স’। ‘রান অ্যাওয়ে গ্রুম নয়, রান অ্যাওয়ে ব্রাইডও এই ছবিতে। যে মেয়েটিকে বিয়ের মঞ্চ থেকে ফেলে পালিয়েছিল রঘুরাম, সেই তারা নাম্নী মেয়েটির ফিরে আসাও আছে রঘুবীরের জীবনে। আছে তার মিষ্টি প্রতিশোধও!
জমজমাট মুচমুচে ‘শুধ্ দেশি...’-তে অসাধারণ অভিনয় ঋষিকপূরের। তাক লাগানো অভিনয় নায়ক-নায়িকাদেরও। কী ভাবে খুব সামান্য জায়গা থেকে শুরু হয়ে তারার চরিত্রটি সিনেমার দ্বিতীয় অর্ধে দর্শক মনের একেবারে কাছে চলে এল সেটাও এখানে দেখার। আসলে এটাই আবার প্রমাণ হল যে ছবির আসল নায়ক তার চিত্রনাট্য!
সিনেমার গানগুলো যথেষ্ট শ্রুতিমধুর। আগেই বলেছি জয়পুর এখানে সমান্তরাল একটা চরিত্র বিশেষ। সেট, ক্যামেরা সবই সেই পরিবেশকে চরমভাবে ফুটিয়ে তুলতে সেরা কাজটাই করে গেছে।
এ এমনই এক ছবি, যেখানে নায়ক-নায়িকা লিভ-ইন করে কিন্তু মহল্লায় পরিচয় দেয় ভাই-বোন হিসেবে। ফলে এ সিনেমা দেখতে বসলে একেবারে বদমেজাজি লোকজনও পরদায় অসংখ্য অদৃশ্য ‘স্মাইলি’ দেখতে পাবেন। আর ভাবনার উপাদান? পেলেও পেতে পারেন, কিন্তু ১০০% বিনোদন পাবেনই পাবেন ‘শুধ্ দেশি রোম্যান্স’-য়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.