সম্পাদক সমীপেষু...
ঘরকন্নার দাম নেই
শাশ্বতী ঘোষ (‘কেন মেয়েদের বাইরের কাজ কমছে’, ১২-০৯) ঠিকই বলেছেন যে, বেশির ভাগ ভারতীয় মেয়ে যে ধরনের অর্থকরী কাজের সুযোগ পান, সেগুলি অমর্যাদাকর এবং তা থেকে উপার্জনও খুব কম হয়। কিন্তু এ ধরনের কাজ না করে ঘরকন্না করলেই সংসারে মেয়েদের মর্যাদা বাড়বে— তাঁর এই বক্তব্য বাস্তবোচিত বলে মনে হয় না, যেন কিছুটা হৃদয়হীনও শোনায়।
শাশ্বতীর কথায় আপত্তির দুটি কারণ আছে। প্রথমত, তিনি বলতে চাইছেন, মেয়েদের ঘরের কাজ করা বা না করার স্বাধীনতা আছে। কিন্তু বিভিন্ন সমীক্ষায় বার বার দেখা গেছে, অনেক দূরে যাতায়াত করে দশ-বারো ঘণ্টা হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও বেশির ভাগ ঘরের কাজ মেয়েদের করতে হয়। দ্বিতীয়ত, ঘরের কাজ মেয়েদের মর্যাদা বাড়ায়, এই ধারণার কোনও প্রমাণ নেই।

বহু সমীক্ষা দেখিয়েছে, সমাজ বা পরিবার সে কাজকে স্বীকৃতি দেয় না, তা মেয়েদের পারিবারিক হিংসা থেকে বা পরিত্যক্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে একটুও বাঁচায় না। ঘরের কাজ কেবল অসম্ভব একঘেয়ে নয়, স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর।
অন্য দিকে, উন্নত দুনিয়ায় পরিবারের আয় বাড়লে মেয়েদের কাজের সুবিধে করে দেওয়ার জন্য নানান সরঞ্জাম কেনা হয়, কিন্তু ভারতের গ্রামে পারিবারিক আয় বাড়লে মেয়েদের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শৌচাগারও বাড়িতে তৈরি করা হয় কি? গ্রামে ক’টা বাড়িতে কয়লা, ঘুঁটে বা গুলের আঁচে নিয়মিত রান্না করার বিপদ থেকে মেয়েদের রক্ষা করার চেষ্টা হয়? খুবই নির্ভরযোগ্য এক আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নানা দেশে, বিশেষ করে ভারতে গ্রামের মেয়েদের স্বাস্থ্যহানির এক নম্বর কারণ হল ঘরের ভিতরে দূষণ।
ঘরের কাজ নিয়ে আমাদের ভাবনা বাস্তবসম্মত হওয়া দরকার।
বিপথে যাওয়ার আগে
কিশোর অপরাধী বিষয়ে গত কয়েক দিনের যুক্তিতর্ক দেখে কিছু কথা মনে হল। আমাদের সমাজে সমবয়সি ৫-৭ জন কিশোরের মধ্যে এক দুই জনকে বেশি স্মার্ট বা এঁচড়ে পাকা বলি। কারণ, এরা স্কুলে শিক্ষকশিক্ষিকাদের পোশাকে কালি দেওয়া, পাখার ব্লেড বাঁকানো প্রভৃতি অনেক বদমায়েসি করে থাকে। ক্লাসের বাকিরা হয় সঙ্গী নয়তো দর্শক। অনেকেই আবার স্কুলের গণ্ডি না পেরিয়ে পয়সা উপার্জনে লেগে পড়ে খুবই কমবয়সে। ওই বয়সেই তাদের অনেকের সঙ্গদোষে বহুবিধ নেশাও সঙ্গী হয়ে যায়।
এ ক্ষেত্রে দেখা যায় ১৭-১৮ বছরের অনেকের থেকে বেশ কয়েক বছর ছোট এই কিশোরেরা অনেক বেশিই পরিণত। আরও উন্নতি করে এরাই বিভিন্ন ছোটখাটো অপরাধে নাম লিখিয়ে ফেলে। নিয়মিত নিষিদ্ধ পল্লিতে যাওয়াটা রপ্ত করতেও বেশি সময় লাগে না। এর পর কোনও দিন বড় ভিলেন (ওদের কাছে হিরো) হতে চেয়ে এমনি এমনিই একটা দিল্লি, কামদুনি বা মুম্বই ঘটিয়ে ফেলে।
এই প্রেক্ষিতে এই কিশোরদের নাবালক বলে এখন যদি হোমে পাঠানো হয় সংশোধনের জন্য, সন্দেহ হয় তাতে সত্যিকারের কতটা ফল পাওয়া যায়। বিপথে যাওয়ার আগে এদের জন্য কাজ এবং সুস্থ সমাজ খুবই জরুরি।
ধর্মগুরু আসারাম বাপুর বয়স ও বিতর্কের কারণে পুলিশ শারীরিক পরীক্ষা করাল। চিকিৎসক রিপোর্ট দিলেন উনি শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সক্ষম। ঠিক তেমনই ১৮ বছরের নীচে যে কোনও কিশোর অপরাধীর ক্ষেত্রেও পরিণত মন, মানসিক স্বাস্থ্য, অনুতাপ, কাঠিন্য পরীক্ষা এবং অবশ্যই অপরাধের গুরুত্ব বিবেচ্য হওয়া উচিত।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.