|
|
|
|
অমূল্য হচ্ছে সোনা, শখ মেটাতে ভরসা নকলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলডাঙা |
টাকার দাম নামছে হু হু করে। দিনকে দিন মহার্ঘ হচ্ছে সোনা। টাকার অবমূল্যায়নের দরুন গত দু’মাসে প্রতি দশ গ্রাম সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। সোনার অগ্নিমূল্যতে মধ্যবিত্ত বাঙালির হাত পোড়ার উপক্রম। সোনার বিক্রিবাটা কমলেও বিকল্প হিসেবে সিটি গোল্ডের কেনাবেচা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তাই উৎসবের মরসুমে স্বর্ণশিল্পীদের কপালে লম্বা ভাঁজ পরলেও নকল গয়নার কারবারিদের মুখে অবশ্য চওড়া হাসি।
চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সোনার ভরি ছিল ২৫ হাজার। এখন সেই দর প্রায় ৩১ হাজারে এসে ঠেকেছে। তাই স্বর্ণশিল্পীদের মাথায় হাত। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সোনার গয়না তৈরি করতে ক্রেতার পরিমান তলানিতে ঠেকেছে। ব্যবসায় মন্দার জেরে অনেক কারিগরই নিজেদের জাত পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। গয়নাপ্রিয় বাঙালি কিন্তু সোনার গয়নার মুখাপেক্ষী না থেকে ইমিটেশনের গয়নার দিকে ঝুঁকছেন। দুর্গাপুজো থেকে শুরু হওয়া উৎসবের টানা মরসুমে বাঙালি আভিজাত্য বজায় রাখতে ইমিটেশনের উপর ভরসা রাখছেন।
|
কেনাকাটা। বেলডাঙার একটি দোকানে ভিড় ক্রেতার। —নিজস্ব চিত্র। |
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই বাড়ছে ইমিটেশন বা সিটি গোল্ডের চাহিদা। মাত্র হাজার খানেক টাকাতেই মিলছে রকমারি ইমিটেশন গয়না। সিটি গোল্ডের কারবারিরা জানাচ্ছেন, কানের টপ মেলে ৯০ টাকায়। কানের দুল পাওয়া যায় ১৪০ টাকায়। গলার হারের দাম মেরেকেটে ৩৫০ টাকা। ভালমানের নেকলেসের পাওয়া যায় হাজার টাকায়। সোনার মতো দামি না হওয়ায় পথে-ঘাচে ইমিটেশন গয়না চুরি, ছিনতাইয়ের ভয় নেই। তাই মহিলাদের পছন্দের তালিকায় সিটি গোল্ডের গয়না একেবারে প্রথম সারিতে। নানা ডিজাইনের ইমিটেশন গয়নাও মিলছে বাজারে।
বেলডাঙার এক স্কুলের শিক্ষিকা তমালিকা সেন বলেন, “রোজ ট্রেনে চেপে স্কুলে আসতে হয়। চুরি-ছিনতাই আকচার হয়। তাই সোনার গয়না পরার কথা ভাবি না। হাজার খানেকের মধ্যে সিটিগোল্ডের গয়না পরি।” বেলডাঙা শহরের বাসিন্দা নয়নতারা বিবির কথায়, “একবার সোনার গয়না বানালে পরে ডিজাইন পছন্দ না হলে ভেঙেচুরে আর বানানো যায় না। সেটা ব্যয়সাপেক্ষ। কিন্তু দাম কম হওয়ায় সিটিগোল্ডের গয়না হামেশাই পাল্টানো যায়। বড় কোম্পানির ইমিটেশনের গয়না কিনলে লোকে সোনা বলে ভুল করেন।”
বেলডাঙার ব্যবসায়ী গৌতম কানু বলেন, “সিটিগোল্ড, ইমিটেশন, পুঁতি, মুক্তার গয়নার চাহিদা ক্রমবর্ধমান। গহনার রং উঠলে তা পাল্টানো ব্যয়সাপেক্ষ না হওয়ায় গয়নাগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।”
ব্যবসায় মন্দা আটকাতে অনেক সোনার কারবারি দোকানে নামি ব্রান্ডের সিটিগোল্ডের গয়না রাখছেন। শহরে ইমিটেশন, সিটিগোল্ডের দোকানে ভিড় উপচে পড়ছে। বিবাহবার্ষিকী, জন্মদিন, বান্ধবীকে উপহার দিতে সোনার বদলে সিটিগোল্ডই পছন্দ বেলডাঙাবাসীর। |
|
|
|
|
|