মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মার্টফোন ও আইপ্যাডে স্বচ্ছন্দ। সোস্যাল ওয়েবসাইটেও তাঁর বিচরণ। তা হলে তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়া থেকে তাঁর সৈন্য-সামন্তরাই বা কেন দূরে থাকেন! পুরুলিয়ার ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতিদের তাই প্রশিক্ষণ শিবিরে রীতিমতো গুরুত্ব দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির পাঠ দেওয়া হল।
ছ’দিনের কর্মশালার একটি দিনের পুরোটাই তাঁদের কম্পিউটারের সাহায্যে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে ওয়াকিবহাল করার চেষ্টা চলল। অপেক্ষাকৃত তরুণরা এতে উৎসাহ দেখালেও বয়ষ্কদের কেউ কেউ জানালেন খাতাপত্রেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ। নেহাত প্রয়োজন পড়লে কম্পিউটারের কাজকর্মের ব্যাপারে তাঁরা দফতরের আধিকারিকদের উপরে ভরসা রাখবেন।
রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধিকাংশ কাজ ‘সরল’ নামের একটি সফটওয়ারের মাধ্যমে করা হয়। তার সঙ্গেই ভাল করে পরিচয় করানো হল পঞ্চায়েত সমিতির কর্ণধারদের। প্রশিক্ষকরা তাঁদের দেখালেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যে সমস্ত উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালন করে, তার সমস্ত তথ্য রাখা থাকে বিভিন্ন ফাইলে। একে একে ফাইল খুলে মঙ্গলবার সদস্যদের বোঝালেন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার জন্য এই সফটওয়ার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুমন কুমার নন্দী। |
সুমনবাবু বলছিলেন, “আগে বড়বাবুর দেওয়া হিসেবের খাতা দেখে পরিকল্পনা কষা হত। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেই হিসেব ‘আপ টু ডেট’ না থাকায় কাজে নেমে দেখা যেত টাকার জোগান তুলনা কম রয়েছে। কিন্তু কম্পিউটারে ওই ধরণের ভুল হওয়ায় সম্ভাবনা নেই। কোন প্রকল্পে পঞ্চায়েত সমিতির হাতে কত টাকা রয়েছে, ট্রেজারিতে কত রয়েছে, ব্যাঙ্কে কত জমা রয়েছেসব হিসেব থাকে। সময়ে সময়ে তা ‘আপ টু ডেট’ হয়ে যায়। এই সফটওয়ার নিয়ে কাজ করতে করতে আরও অনেক সুবিধার কথা জানা যাবে।” প্রোজেক্টরের মাধ্যমে এই ‘ক্লাসঘরে’ তখন বাধ্য ছাত্রের মতো একমনে শুনছিলেন বলরামপুর, ঝালদা ২, বান্দোয়ান, বরাবাজারের মতো জঙ্গলমহল বা রঘুনাথপুরের মতো শিল্পাঞ্চল এলাকার সভাপতি, সহ-সভাপতিরা। অনেকে আবার উসখুসও করছিলেন। তাঁদের মধ্যে আড়শার সহ-সভাপতি শেখ সালে মহম্মদ প্রশ্ন করলেন, “এলাকার উন্নয়ন করার জন্য কম্পিউটার জানা কি আবশ্যক? খাতাপত্রে হিসেব লিখে হবে না?” সুমনবাবু বললেন, “ব্যাপারটাকে একদম সহজ ভাবে নিন। কম্পিউটার থেকে ‘প্রিন্টআউট’ বের করে নেবেন। একেবারে খাতার মতোই সব তথ্য দেখতে পাবেন। খাতা হারিয়ে যাওয়ার মতো ভয় এক্ষেত্রে নেই। স্বচ্ছতাও থাকবে।”
আবার কাশীপুরের সভাপতি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার সৌমেন বেলথরিয়া সহকর্মীদের বোঝাচ্ছিলেন, কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করার কত সুবিধা। অফিসে আধিকারিকদের কাছে সবাই যেন ভালও করে শিখে নেন। বরাবাজারের সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতো, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতো, রঘুনাথপুর ২ ব্লকের সভাপতি মণীষা ঘোষরা কর্মশালা থেকে বেরিয়ে বললেন, “শেখার তো কোনও বয়স নেই। প্রতিদিনই কত কী শিখছি। এ বার না হয় কম্পিউটারও শিখে নেব।”
চালকের মৃত্যু। পাথর খাদান থেকে পাথর বোঝাই করে উপরে ওঠার সময় ট্রাক উল্টে মৃত্যু হল চঞ্চল শেখ(৩০) চালকের। তাঁর বাড়ি বীরভূমের মাড়গ্রামের একডালা গ্রামে। সোমবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে নলহাটির লখনামারা এলাকায়। মঙ্গলবার খাদানের জল থেকে ট্রাকটি উদ্ধার করে চালকের মৃতদেহ বের করা হয়। |