রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে সায়, যুদ্ধ এড়াল সিরিয়া
মিত্র দেশ রাশিয়ার আবেদনেই শেষমেশ সাড়া দিল সিরিয়া। যার জেরে দেশে মার্কিন সামরিক হানার সম্ভাবনা রুখতে সমর্থ হল বাশার আল আসাদের সরকার। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে দেশে মজুত রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে রাশিয়ার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে সিরিয়া।
দেশে আশু যুদ্ধের আশঙ্কা দূর হতেই এ দিন দামাস্কাসে বিরোধীদের উপরে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালিয়েছে আসাদের বাহিনী। গত ২১ অগস্ট রাসায়নিক গ্যাস হামলার জেরে মার্কিন হুঁশিয়ারির পর থেকে এই প্রথম আবার অশান্ত হয়ে উঠল দামাস্কাস।
রাশিয়ার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতও। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন জানান, সামরিক সমাধানের পথ কখনওই বাঞ্ছনীয় নয়। সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্রের সম্ভার পুরোটাই সমর্পণ করুক, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ নিয়ে ভারতও ইতিবাচক সাড়াই দেবে।
ওভাল অফিস থেকে বেরিয়ে হোয়াইট হাউসের পথে বারাক ওবামা। মঙ্গলবার। ছবি: রয়টার্স।
সিরিয়ার তরফে সাড়া মেলার কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বলেন, “সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণ করলে হামলার পরিকল্পনা পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়া হবে।” এর পাশাপাশিই তিনি বলেন, “এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। আমার ভীষণ ভাবে ইচ্ছে ছিলই, যদি কোনও ভাবে সামরিক অভিযানের পথ থেকে সরে আসা যায়, তার চেয়ে ভাল কিছু হয় না।”
গত কাল লন্ডনে যে ইঙ্গিত প্রথম দিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই যুদ্ধ এড়ানোর কি কোনও রাস্তা নেই? কেরি বলেছিলেন, আসাদ যদি তাঁর দেশে মজুত সব রাসায়নিক অস্ত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সমর্পণ করেন, তা হলে অভিযানের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তবে কেরি এই প্রস্তাবে জোর দেননি, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ওই প্রস্তাবে সায় দেবেন না।
কিন্তু প্রস্তাবটি নিয়ে কূটনৈতিক পথে কিছুটা অগ্রসর হয় রাশিয়া। সিরিয়ার বিদেশমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মোয়াল্লেম বলেন, তাঁর দেশ রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে রাশিয়ার প্রস্তাবে দ্রুত সাড়া দিয়েছে। তার কারণ, যে কোনও অবস্থায় মার্কিন আগ্রাসন রোখাই লক্ষ্য ছিল তাদের। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভ্রভ বলেন, “মারাত্মক অস্ত্র সরবরাহের প্রক্রিয়া যাতে ঠিক পথে হয়, তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।”
সিরিয়ার পাশে থাকা ফ্রান্সের তরফেও একই সুর শোনা গিয়েছিল। তারা রুশ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েও ভরসা রেখেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের উপরে। রাসায়নিক অস্ত্র সমর্পণে রাষ্ট্রপুঞ্জের খসড়া প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে ওলাঁদ প্রশাসন জানিয়েছিল, সিরিয়া অস্ত্র সমর্পণ না করলে চরম ফল ভুগতে হবে। এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে চিনও।
সিরিয়া অস্ত্র সমপর্ণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি এড়ানোয় সব মহলে স্বস্তির আবহ দেখা গেলেও আফশোস করতে শোনা গিয়েছে সে দেশের বিরোধীদের। দামাস্কাসে এ দিন ফের আসাদ বাহিনীর হানায় উদ্বিগ্ন তারা। “ওরা আবার এ দিকে যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। আন্তর্জাতিক কোনও চাপ আর ওদের উপরে নেই। সেটা ভেবে শাসক দল আরও উল্লসিত,” বলছেন দামাস্কাসের ছোট্ট জেলা মৌয়াদামিয়ার বিদ্রোহী ওয়াসিম আল আহমেদ। এই জেলাটিও রাসায়নিক গ্যাস হামলার নির্মম সাক্ষী।
সিরিয়ার রাজধানীর শহরতলি এলাকা আরবিনের বিদ্রোহী সামি বলছেন, “রাশিয়ার এই প্রস্তাব সস্তা গিমিক ছাড়া আর কিছুই নয়। আরও গণহত্যার জন্য সময় দেওয়া হল আসাদকে।” তাই এখনও বিরোধী গোষ্ঠী চাইছে, রাশিয়ার উদ্যোগ সত্ত্বেও আমেরিকা যেন হামলার পরিকল্পনা থেকে পিছু না হটে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.