ঋতু শেষের বিষণ্ণতা
কোনও মানুষের মৃত্যুর ঠিক পরপর তার কাজ নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে বসাটা সহজ নয়। একটা কুণ্ঠা চাই বা না চাই, মনের মধ্যে জুড়ে বসে। বিশেষত সেই প্রয়াণ যদি হয় অকাল এবং আকস্মিক, তা হলে সমস্যাটা আরও বাড়ে। বেদনার রেশ ভাবনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলতে চায়।
কী ভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাব ভাবছিলাম। সুবিধা করে দিল শেষ ছবির নামটা সত্যান্বেষী। সত্য অন্বেষণ এবং কথনের দায় অতএব সমালোচকের ঘাড়ে চাপতেও বাধ্য!
মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবিতেই দখল দু’দু’টো জাতীয় পুরস্কার।ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রস্থানও তেমনই রাজকীয় তেহাই দিয়ে হোক এমন একটা প্রত্যাশা স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সত্যের খাতিরে বলতেই হচ্ছে, সেটা ঘটল না।ঋতুশেষের শুক্রবার আর একটা ‘উনিশে এপ্রিল’ বা ‘দোসর’ বা ‘আবহমান’-এর জন্ম দিল না।
অথচ সুযোগ ছিল পুরোমাত্রায়। পারিবারিক পরিমণ্ডল, সম্পর্কের সূক্ষ্ম মোচড় এবং অব্যর্থ ফেমিনিন দৃষ্টিকোণঋতুপর্ণর বরাবরের জোরের জায়গা। সেই বুনোটই ম্যাজিক দেখাতে পারত ব্যোমকেশে! চেষ্টাও ছিল সেটাই।ঋতুপর্ণর ‘সত্যান্বেষী’র গল্প শরদিন্দুর ‘চোরাবালি’ থেকে অনেকটা আলাদা। তাতে আপত্তির কিছু নেই। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যুর কাহিনিকে ভেঙেচুরে আরও বহুস্তরী হিউম্যান ড্রামার দিকে ঝুঁকবেনঋতু, এটাই তো প্রত্যাশিত। ‘সত্যান্বেষী’ সেই প্রত্যাশার চিহ্ন রেখে গিয়েছে, সেটা পূরণ করতে পারেনি। গোটা ছবিটাই নিষ্প্রাণতায় ভুগেছে। এঋতু শেষ টেলিছবি ‘রাঙা পিসিমা’রঋতু, কোনও মতেই ‘শুভ মহরতে’রঋতু নন।
অ্যাপল অ্যাপ স্টোর (আই ফোন) অথবা গুগল প্লে স্টোর (অ্যান্ড্রয়েড) থেকে
ABP AR Appটি ডাউনলোড করে এই ছবিটি স্ক্যান করুন।
আর খেলুন আনন্দplus কনটেস্ট। সঠিক উত্তরদাতাদের জন্য থাকবে পুরস্কার
বাঁধনটা যে আলগা, সেটা ধরতাই থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায়। নইলে প্রথম দৃশ্যেই কালীগতি খামোখা মেয়েকে শোনাবেন কেন, “তোরা আর এই তোরঙ্গ ছাড়া আমার কিছু নেই!” তথ্যটা দর্শকের জানা জরুরি হতে পারে, বাবার অবস্থা মেয়ের তো অজানা নয়!ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত দিয়ে চিত্রনাট্যের এই বেসিক ট্রিক-টা গোলমাল হবে, এমনটা তো ভাবা যায় না!
আর এই যে শুরুতেই গোলমালটা শুরু হল, গোটা ছবি জুড়ে অজস্র ফাঁক এবং দুর্বল গাঁথুনি সেটাকে আর থামতে দিল না। হিমাংশু জানিয়েছিল, এলাকার বাঘেরা সবাই এখন রাজবাড়িতে স্টাফড। অজিত গোটা রাজবাড়ি ঘুরে দেখল, শিকারের নমুনা তাকে দেখানো হল না। পিকনিকের দৃশ্যে ব্যোমকেশ সবাইকে দিয়ে একটা নাম লেখানোর খেলা খেলে। পরে সে অজিতকে বলছে, সকলের হাতের লেখার নমুনা রইল। সে নমুনা রহস্যভেদে কোন কাজে লাগল? কোন চরিত্র কার নাম লিখল, তা থেকেই বা কী এমন মোক্ষম সূত্র বেরিয়ে এল? রহস্যের জট বোনা এবং খোলা, এই দুয়েরই কারসাজি এ ছবিতে বড্ড ম্যাড়মেড়ে। আর সেটা হলে, গোয়েন্দা গল্পে কী বা থাকে? ব্যোমকেশ তার ব্যোমকেশত্বই বা প্রমাণ করে কীসে?
সুজয় ঘোষকে ব্যোমকেশ নির্বাচন করাটা বড় চমক ছিল, সন্দেহ নেই। সুজয়ের চেহারা এবং কণ্ঠস্বরে একটা পেলবতা আছে। সাধারণ ভাবে মানুষ ডাকসাইটে গোয়েন্দার যে রকম ছবি কল্পনা করে, তার থেকে আলাদা। ভেবেছিলাম, সেটাই হয়তোঋতুপর্ণর তুরুপের তাস হতে যাচ্ছে।ঋতুপর্ণ বলেই আশা করেছিলাম, বোধহয় গোয়েন্দা ইমেজের সঙ্গে জড়িত ম্যাচিসমো-র ছকটাই তিনি ভাঙতে চাইছেন। হয়তো চেয়েছিলেনও। কিন্তু আর একটা রজিত কপূর হল না! দিনের শেষে গোয়েন্দাকে তো গোয়েন্দা হতে হবে! নরমসরম মানুষটাকেও কোথাও তো একটা জ্বলে উঠতে হবে। সেই বারুদটা চিত্রনাট্যেও নেই, সুজয়ের অভিনয়েও পেলাম না। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের অজিত চেহারায় পৃথুল হলেও অভিনয়ে তুলনায় স্মার্ট। কিন্তু ব্যোমকেশ-অজিতের মধ্যেকার যে রসায়ন, সেটা ঠিক জমেনি। হিমাংশু-অলকার (ইন্দ্রনীল-অর্পিতা) শীতলতা যেন এই দুই বন্ধুর মধ্যেও কিছুটা চারিয়ে গিয়েছে। মানতে হচ্ছে, আবির-শাশ্বতর কম্বিনেশন এর চেয়ে বেশি জমাটি ছিল। অলকার চরিত্রটার মধ্যেই বিশ্বাসযোগ্যতার খামতি থাকায় আন্তরিক চেষ্টাতেও অর্পিতা বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেননি। চাষি-মজুরের জীবনযন্ত্রণা সত্য জেনেও নাগাড়ে গণসঙ্গীত শুনতে যেমন ভাল লাগে না, তেমনই নারীর একাকীত্ব জাতীয় কাহিনিও ইদানীং বড় ক্লান্তিকর ঠেকে। বরং ভাল লাগে ইন্দ্রনীলকে আর কালীগতির ভূমিকায় অব্যর্থ আবিষ্কার, অধ্যাপক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শিবাজীর শীর্ণ, ভাঙাচোরা চেহারা আর কথা বলার নিজস্ব স্টাইল, যা যাদবপুরের ক্লাসরুমকে এক সময় মুগ্ধ করে রাখত, সেটা কালীগতিতে দারুণ খেটে গিয়েছে।
কিন্তু তার পর?
ঋতুপর্ণর ছবি এমনিতে চিরকালই ইনডোর-প্রধান। এ নিয়ে অনেক বার তিনি সমালোচিতও হয়েছেন। পাশাপাশি এটাও সত্যি, সেটা তাঁর ট্রেডমার্ক স্টাইলও বটে। কিন্তু গল্পে জঙ্গল-শিকার-চোরাবালির মতো উপাদান মজুত থাকতে, উত্তরবঙ্গের লোকেশন হাতে থাকতে, পরিচালক সেটা ব্যবহার করবেন না? ঘরের বাইরে কতটুকু বেরোল ক্যামেরা? নিসর্গটাই তো গা-ছমছমে রহস্য ঘনিয়ে তুলতে পারত। কিন্তু সেটা কাজেই লাগানো হল না। ঋতুপর্ণর ছবিতে এত কাল সংলাপের বাহুল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠত। কিন্তু সংলাপ রচনায় তাঁর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। ‘সত্যান্বেষী’তেঋতুপর্ণর সংলাপও হতবাক করে দিল। ব্যোমকেশ-অজিত-হিমাংশু-অলকা সব্বাই মুড়িমুড়কির মতো ইংরেজি বলছে! শুধু ইংরেজিই বলছে না! রীতিমতো হাল ফ্যাশনের ইংরেজি বলছে! রিলেশনশিপ কমপ্যাটিবিলিটি, বেসিক ইনস্টিংক্ট, অ্যাকাডেমিক ইন্টারেস্ট-এর মতো শব্দবন্ধের ছড়াছড়ি! শব্দ ব্যবহারের যে একটা ইতিহাস-ভূগোল থাকে, তা নিয়েঋতুপর্ণ ঘোষ সচেতন নন এটাও কি শেষ লগ্নে এসে ভাবতে হবে? অথচ এই ক’বছর আগেই তো কান আটকে গিয়েছিল ‘আবহমানে’ অনন্যার একটা সামান্য খুচরো সংলাপেও! “আমাদের পাড়ার দোকানে মাংসের চপ ভাল ভাজে। আনাব? খাবেন?” ওই উত্তর কলকাত্তাইয়া ঘরানা মেনে ‘ভাল ভাজে’ বলাতে তোঋতুপর্ণই পারতেন! যদি ধরেও নিই, ‘সত্যান্বেষী’র পোস্ট-প্রোডাকশনে নিজে উপস্থিত থাকলে ডিটেলের ছোটখাটো বিচ্যুতি শুধরে নিতেন, কিন্তু চিত্রনাট্য বা সংলাপের ত্রুটি মেরামত করতেন কী ভাবে?
সত্যান্বেষী জীবনস্মৃতি
মুক্তি: সেপ্টেম্বর ফল: আশানুরূপ নয় টিভি প্রিমিয়ার: দূরদর্শন, অগস্ট ফল: সমালোচনার ঝড়
শেষ পর্যায়ে এসে কী হয়েছিলঋতুপর্ণের? শরীরে দিচ্ছিল না? মানসিক ভাবে ক্লান্ত থাকছিলেন? নাকি প্রকৃতির নিয়মেই সৃষ্টিশীলতারও একটা শেষ থাকে!ঋতুপর্ণ হয়তো সেই পর্বটা ছুঁয়ে ফেলেছিলেন! অথবা সাময়িক ভাবে একটা ব্যাড প্যাচের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, যেটা কাটিয়ে ওঠার সুযোগটাই পেলেন না!
এর আগেও একটা সময়ঋতুপর্ণর পরপর বেশ কিছু ছবি প্রার্থিত উচ্চতায় পৌঁছয়নি। ‘খেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘লাস্ট লিয়ার’...। কিন্তু ‘আবহমান’ঋতুকে আবার তাঁর নিজের আসনে ফিরিয়ে দিয়েছিল। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘আরেকটি প্রেমের গল্পে’র বিস্ফোরণ বাকি ছিল। তার পরে এসেছে ‘মেমরিজ ইন মাচর্’ আর ‘চিত্রাঙ্গদা’..।ঋতুপর্ণ কি তা হলে এই পর্বে অভিনেতা হতে গিয়ে, একসঙ্গে অনেক কিছু ভাবতে গিয়ে পরিচালনার দিকটায় খেই হারাচ্ছিলেন?
সন্দেহটা থেকে যাচ্ছে। জীবনস্মৃতি-চিত্রাঙ্গদা-রাঙা পিসিমা-সত্যান্বেষীর মধ্যে একাধিক ওভারল্যাপ নজরে পড়তে বাধ্য। সেটা কাস্টিং (সঞ্জয় নাগ, অনির্বাণ ঘোষ) থেকে শুরু করে, নিজেকে প্রোজেক্ট করার প্রবণতা সবেতেই স্পষ্ট। নির্দ্বিধায় বলা চলে, এর জন্য সব চেয়ে বড় সর্বনাশটা হয়েছে ‘জীবনস্মৃতি’তেই। এবং এ ‘সর্বনাশ’ সে ‘সর্বনাশ’ নয়। এর জন্য কেউ সকল নিয়ে বসে থাকে না।
পিরিয়ড পিস কোনও দিনইঋতুপর্ণর পয়া মাঠ ছিল না। অন্তরমহল থেকে সত্যান্বেষী, চোখের বালি থেকে নৌকাডুবি হয়ে জীবনস্মৃতি সব ক’টাতেই ডেকর এবং কস্টিউমের বাড়াবাড়ি রকম দেখনদারি চোখে পড়ে। চরিত্রগুলো পোস্টারের ছবির মতো হয়ে যায়। গল্পে রক্ত-মাংসের ঘনত্ব হারিয়ে সুপারফিশিয়ালিটি এসে পড়ে।
রবীন্দ্রনাথের ১০০ বছরে তাঁকে নিয়ে সরকারি তথ্যচিত্র বানানোর ভার পেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৫০ বছরেঋতুপর্ণ ঘোষ। কথাটা দু’জনের মধ্যে তুলনা টানার আহাম্মকি থেকে বলা নয়। শুধু এই তথ্যটা মনে করিয়ে দেওয়া, ‘রবীন্দ্রনাথ’ করার আগে সত্যজিৎ কোনও রবীন্দ্র-কাহিনি থেকে ছবি করেননি। ‘জীবনস্মৃতি’ হওয়ার আগেই কিন্তুঋতুপর্ণর ‘চোখের বালি’ আর ‘নৌকাডুবি’ করা হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং ‘জীবনস্মৃতি’র অন্তত ভিস্যুয়াল আদলটা কী রকম হতে পারে, তার একটা আগাম আন্দাজ দর্শকের থাকার কথা। ছিলও। পাশাপাশি আরও অনেক কিছু ছিল।ঋতুপর্ণর পড়াশোনা এবং ওঁর মৌলিক চিন্তার ক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তার মধ্যে প্রধান। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ এবং মহাভারত,ঋতুপর্ণর প্রিয় বিষয়। তাঁর নিবিষ্ট চর্চার ক্ষেত্র। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখালেখিতেঋতুপর্ণ প্রায়শই এমন কিছু মণিমুক্তো ছড়িয়ে রাখতেন, নতুন চিন্তা উস্কে দিতেন যা এই তথ্যচিত্র সম্পর্কে একটা বাড়তি কৌতূহল তৈরি করেই দিয়েছিল।
তাহার নামটি রঞ্জনা
টিভি প্রিমিয়ার: স্টার জলসা, জুন ফল: মোটামুটি
কবিপক্ষ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই চলে গেলেনঋতুপর্ণ। আচমকা এই মৃত্যু যে বিপুল আলোড়ন জাগাল, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। সেটাকে পুঁজি করেই ২২শে শ্রাবণ কাগজে আধপাতা-জোড়া বিজ্ঞাপন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দূরদর্শনে দেখানো হবে ‘জীবনস্মৃতি’। দৃশ্যতই এ বারের ২২শে শ্রাবণের নায়ক রবীন্দ্রনাথ ছিলেন না। ছিলেনঋতুপর্ণ। কত বচ্ছর বাদে কোনও সিনেমা দেখার জন্য মানুষ দূরদর্শন খুলল, সেটা একটা স্বতন্ত্র অনুসন্ধানের বিষয় হতে পারে। কিন্তু যতখানি আবেগ আর ঔৎসুক্য নিয়ে দেখতে বসা, তার দ্বিগুণ হতাশা নিয়ে সে রাতে টিভির রিমোট অফ করতে হয়েছিল। ছবিটা দেখে কিছুতেই বুঝতে পারিনি,ঋতুপর্ণ ঠিক কী করতে চাইছিলেন। ‘জীবনস্মৃতি’ নিয়ে কোনও ডকু ফিচার? রবীন্দ্র-ব্যক্তিত্বের কোলাজ? আমার রবীন্দ্রনাথ? নাকি এই সব কিছুর একটা জগাখিচুড়ি?
শুরুটা হল উনিশ শতক আর ঠাকুরবাড়ির লম্বা দৃশ্যকল্প দিয়ে। সত্যজিতের ছবিতেও সেটা ছিল। পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন ছিল না। তার পর ক্রমে বালক রবি বড় হলেন। কাদম্বরীর মৃত্যুতে ‘আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে’ গানখানা আস্ত শোনা গেল। কিন্তু সেটা ততক্ষণে প্রহসনে পরিণত। কারণ তার আগে সমদর্শী-রাইমাকে নিয়ে আদ্যন্ত ন্যাকা ক’টি দৃশ্য দেখা হয়ে গিয়েছে। ব্যস! এর পর থেকেই রবীন্দ্রনাথ একেবারে গোমড়াথেরিয়াম। সে জমিদারি কাছারিতেই হোক আর বঙ্গভঙ্গের রাখি বাঁধাতেই হোক। তার মধ্যে স্থানে-অস্থানে ঢুকে পড়ছেনঋতুপর্ণ নিজে। কখনও কফির কাপ হাতে রবীন্দ্রনাথ পড়ছেন। কখনও টেকনিশিয়ানদের বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। জলকাদা ভেঙে শ্যুটিং করতে যাচ্ছেন!
‘জীবনস্মৃতি’র শ্যুটিংয়ে মেক আপে সাহায্য করছেন ঋতুপর্ণ
মানে কী এ সবের? সাবজেক্ট আর অবজেক্টের মধ্যেকার যে ‘এনগেজমেন্ট’ সেটাকে পর্দার আড়ালে না রেখে সামনে নিয়ে আসাটা একটা স্টাইল। একটা দর্শনও। মানা গেল। কিন্তু কোনও একটা বিশেষ শৈলী গ্রহণ করলে বা একাধিক শৈলী মেশালে, তার একটা লজিকাল ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা করা তো দরকার। যখন যেমন খুশি কিছু জিনিস প্রক্ষিপ্ত করে গুঁজে দিলে এক্সপেরিমেন্ট হয় না, বালখিল্যতা হয়। সত্যেরে লও সহজে জীবনস্মৃতিতে সেটাই হয়েছে। এডিট টেবিলে অর্ঘ্যকমল মিত্র জালিয়ানওয়ালাবাগের ফুটেজ এডিট করছেন আরঋতুপর্ণ চোখের জল মুছছেন! অথচ চপল আর অভিরূপের মধ্যে বিষয়-বিষয়ীর টানাপোড়েন এইঋতুপর্ণই তো কী দরদ নিয়ে অভিনয় করে দেখিয়েছিলেন ‘আরেকটি প্রেমের গল্পে’! কোথায় গেল সে সব?
রাহুল দেববর্মন হতে পারলেন নাঋতুপর্ণ ঘোষ। অবহেলিত, বিস্মৃতপ্রায় আরডি মৃত্যুর পর প্রবল ভাবে ফিরে এসেছিলেন ‘১৯৪২ আ লভ স্টোরি’ দিয়ে। ইনিংস শেষ করেছিলেন মরণোত্তর সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। জীবনস্মৃতি, রাঙা পিসিমা বা সত্যান্বেষী, কোনওটাইঋতুপর্ণকে সেই সুযোগ দিল না। বাকি রইল, সানগ্লাস। শোনা যাচ্ছে, চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি দেখানো হতে পারে।
শেষ কার্টেন কল।ঋতুপর্ণ, পারবেন তো?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.