ডিওয়াইএফ কর্মীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল হাবরায়। সিপিএমের দাবি, পুরভোটের আগে রাজনৈতিক কারণেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে ওই যুবককে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তিন জনকে গ্রেফতার
|
গোপাল বিশ্বাস। |
করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার গভীর রাতে হাবরার শ্রীনগর এলাকার বাসিন্দা ডিওয়াইএফ কর্মী গোপাল বিশ্বাস (২৭) ওরফে বাপ্পার মোবাইলে একটি ফোন আসে। তারপরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান গোপাল। স্থানীয় গীতা শ্মশানে গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। সেখানেই চেলাকাঠ দিয়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় ওই যুবককে। মারধরের খবর শুনে বাড়ির লোকজন গিয়েছিলেন শ্মশানে। গোপালের দিদি টুম্পা বণিক জানান, শ্মশানে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ভাই। হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, রাজনৈতিক কারণেই এই খুন। হাবরা পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের ঋজিনন্দন বিশ্বাসের কথায়, “আমাদের যুব সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন গোপাল। পুরভোটের আগে বাম প্রার্থীদের হয়ে প্রচার চালাচ্ছিলেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে।” |
দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে হাবরা থানার সামনে প্রায় আধ ঘণ্টা যশোহর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বামফ্রন্ট। আজ, শুক্রবার বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে হাবরা শহরে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকা হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় গোপালের বাড়িতে আসেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন কোনও রাজনৈতিক দল যখন মানুষের আস্থা হারায় তখনই তাঁরা এ ধরনের ঘটনা ঘটায়।”
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য দাবি করেছেন, দুষ্কৃতীদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, “মনোতোষ, বিপ্লব, সুব্রতরা কোন দলের লোক, তা হাবরার মানুষ খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।” বামফ্রন্টের ডাকা বন্ধের রাজনৈতিক ভাবে বিরোধিতা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বিপ্লব ঘোষ ওরফে চিমা, সুব্রত রায় এবং মনোতোষ ঘোষ নামে গোপালের তিন বন্ধুর নামে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহত যুবকের মা সবিতাদেবী। বিপ্লব, সুব্রতকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা পড়েছে জয় সিংহ নামে আরও এক যুবক। মনোতোষ-সহ কয়েক জনের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বারাসতের এসডিপিও সুবীর চট্টোপাধ্যায় এসেছিলেন ঘটনাস্থলে। ভাস্করবাবু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কিছু যুবকের মধ্যে মদ খেয়ে গণ্ডগোলের জেরেই এই খুন।” হাবরা থানা সূত্রের খবর, ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হওয়া, মাতলামি করার অভিযোগে এর আগে তিন বার গ্রেফতার হয়েছিলেন গোপাল। ধৃত চিমা ও সুব্রতর বিরুদ্ধেও অসামাজিক কাজেরও অভিযোগ আছে। |