সিরিয়া নিয়ে অনুমতি পেতে মরিয়া ওবামা
সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থন আদায়ে কোমর বেঁধে নামলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সুর বদলে প্রস্তাবিত মার্কিন অভিযানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে নালিশ করল সিরিয়াও।
সিরিয়ায় বিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রেসিডেন্ট বাসার-আল আসাদের সেনাবাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার পরেই সামরিক অভিযানের কথা ভাবতে শুরু করেন ওবামা। কিন্তু, সেই অভিযানে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন পেতে গিয়েই কিছুটা বিপাকে পড়েছেন তিনি। কংগ্রেস আপাতত ছুটিতে। তার উপরে সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন কংগ্রেসের বেশির ভাগ সদস্য। বিরোধী রিপাবলিকান ছাড়াও ওবামার ডেমোক্র্যাটিক পার্টিরও অনেক সদস্য ওবামার আনা প্রস্তাবটিকে সমর্থন করতে রাজি নন।
আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে এখনও যুদ্ধ জারি প্রতিবাদীদের। সোমবার। ছবি: এএফপি
তাঁদের মতে, ওবামা মুখে সীমিত সামরিক অভিযানের কথা বলছেন। অথচ প্রস্তাবটিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা বলা নেই। সিরিয়ায় যে মার্কিন সেনা পাঠানো হবে না তাও বলা হয়নি। লিবিয়ায় মুয়াম্মর গদ্দাফির সঙ্গে বিরোধীদের লড়াইয়ের সময়ে বিমানহানা চালিয়েছিল আমেরিকা ও মিত্ররাষ্ট্রগুলি। সিরিয়ার ক্ষেত্রে ওবামা প্রায় যা খুশি তাই করার অধিকার চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন এক রিপাবলিকান সদস্য।
কংগ্রেসের সমর্থন পেতে গত কাল থেকে উদ্যোগী হন ওবামা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রশাসনের অন্য উচ্চপদস্থ কর্তারা। মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের জন্য হোয়াইট হাউসে সিরিয়া সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। তাতে যোগ দেন অনেক সদস্যই। সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের চিত্র দেখে ব্যথিত অনেক রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট। কিন্তু, সামরিক অভিযানকে সমর্থন করার বিষয়ে মনস্থির করতে পারেননি তাঁরা।
অনেকের মতে, ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার দীর্ঘমেয়াদি অভিযানের স্মৃতি এখনও তাড়া করছে কংগ্রেস সদস্যদের। ২০১৪ সালে মার্কিন বাহিনীর আফগানিস্তান ছাড়ার কথা। কিন্তু, এখনও সে দেশের পরিস্থিতি সামলানোর মতো দক্ষ হয়নি প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সরকার। সিরিয়াতেও মার্কিন সেনা দীর্ঘস্থায়ী লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা নানা শিবিরের।
ওবামা কংগ্রেসের অনুমোদন চাওয়ায় আমেরিকা “ঐতিহাসিক পশ্চাদপসরণ” করছে বলে গত কাল ব্যঙ্গ করেছিল সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম। আজ কিছুটা সুর বদলেছে বাসার-আল আসাদ সরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি-মুনকে একটি চিঠি লিখেছেন সিরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি বাসার আল-জাফরি। তাতে সিরিয়ার বিরুদ্ধে ‘আগ্রাসন’ রুখতে বান কি-মুনকে অনুরোধ করেছেন তিনি। সিরিয়ায় কোনও ব্যবস্থা নিলে তা রাষ্ট্রপুঞ্জের পৃষ্ঠপোষকতায় হওয়া উচিত বলে জানিয়েছে আরব লিগও।
সিরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক অভিযান আল-কায়দা ও তার সহযোগী সংগঠনগুলির হাত শক্ত করবে বলে মন্তব্য করেছেন আসাদ সরকারের মন্ত্রী ফয়জল মুকদাদ। তাঁর মতে, ওই অভিযান গোটা পশ্চিম এশিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দেবে।
এখনও সিরিয়ার পাশেই রয়েছে রাশিয়া ও চিন। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আসাদের পাশে দাঁড়ানোয় এক সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কৌশলে ‘ব্রাত্য’ করার চেষ্টা করেছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি। এখন সে খেলা উল্টে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন পুতিন। তিনি এখনও সিরিয়ার পাশে। সে ক্ষেত্রে সেন্ট পিটার্সবার্গে জি-২০ বৈঠকে ওবামা যোগ দেবেন কি না তা স্থির করতে হবে আমেরিকাকে। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরোভ বলেছেন, “রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের যে প্রমাণ আমরা দেখেছি তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।” সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও তথ্য জোগাড় করতে রাশিয়া সে দেশের উপকূলের কাছে একটি নজরদারি জাহাজ পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স। চিনা বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, সিরিয়ায় একটি দেশ ‘একতরফা অভিযান’ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা বেজিংয়ের।
ইতিমধ্যেই সিরিয়ায় হামলার প্রস্তুতি শুরু করেছে মার্কিন বাহিনী। কংগ্রেসের অনুমোদনের জন্য আপাতত অপেক্ষায় ওবামা প্রশাসন। মার্কিন সামরিক সূত্রে খবর, এই সুযোগে হামলার পরিকল্পনা ফের খতিয়ে দেখছেন সামরিক কর্তারা। সিরিয়ায় হামলায় প্রয়োজনে সাহায্য করার জন্য বিমানবাহী জাহাজ ‘ইউএসএস নিমিৎজ’কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.