|
|
|
|
|
|
|
আকার প্রকার-এ বিশেষ প্রদর্শনী |
চেনা-অচেনা রামকিঙ্কর |
শিল্পবিদ্যার অভ্যাসের মাধ্যমে উদরপুর্ত্তীর ব্যবস্থা ছাড়া বড়লোক হবার ইচ্ছাটা আমার উদ্দেশ্য কখনোই ছিল না, ... একটা বাসনা ছিল। সেটি শিল্প বিদ্যার মাধ্যমে নিজেকে TRANSFORMATION করার...।” লিখছেন রামকিঙ্কর বেজ। শিল্পীর এমন টুকরো টুকরো ভাবনা এ বার উঠে আসছে এক অন্য রকম প্রদর্শনীতে। কোনও শিল্পীকে পরিপূর্ণ ভাবে জানতে ও চিনতে গেলে শুধুমাত্র গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহ দেখলে হয় না। শিল্পীর স্বজন, বন্ধুগোষ্ঠী, পরিচিত জন বা ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছতে পারলে, সেখান থেকেও বেরিয়ে আসে অনেক কিছু। সেই আশা নিয়েই শিল্পকলা ইতিহাসের তরুণ গবেষক দেবদত্ত গুপ্ত গিয়েছিলেন রামকিঙ্করের পরিচিতদের কাছে। কোথাও গিয়ে শিল্পীর কাজ ভাল অবস্থায় পেয়েছেন, কোথাও সাক্ষী থেকেছেন মূল্যবান নিদর্শন একেবারে নষ্ট হওয়ার। কয়েক বছরের পরিশ্রমে তার থেকেই চয়ন করে ১৩ সেপ্টেম্বর হিন্দুস্তান পার্কের ‘আকার প্রকার’ আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে রামকিঙ্কর বেজ-এর প্রদর্শনী (কিউরেটর: দেবদত্ত গুপ্ত)।
দিল্লিতে রামকিঙ্করের যে বিপুলায়তন প্রদর্শনী হয়েছিল, তা কলকাতার শিল্পরসিকদের অনেকেরই দেখার সুযোগ হয়নি। এই প্রদর্শনী খানিকটা হলেও হয়তো সেই অভাব পূরণ করবে। এর আগে আকার প্রকার-এ নন্দলাল বসু ও বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের প্রদর্শনী যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। এ বারের প্রদর্শনীতেও থাকছে রামকিঙ্করের অনেক অদেখা ছবি। |
|
যে সময় রামকিঙ্কর বেঙ্গল স্কুলের ধারায় কাজ করতেন তার বিরল নমুনা থেকে শুরু করে অনেক বিখ্যাত ভাস্কর্যের খসড়া (সঙ্গে ‘কলের বাঁশি’র খসড়া), ছোট ছোট নোটবুক, মন্বন্তরের সময়ে করা লিনোকাট, ব্যক্তিগত সংগ্রহে পড়ে থাকা স্বাক্ষরিত ভাস্কর্য (সঙ্গে তারই একটি), ছেঁড়া পাতায় রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে শিল্পীর এক টুকরো ভাবনা অথবা ভারতশিল্পে যৌনতার স্থান কোথায়, এ রকম নোটও মিলেছে। দেবদত্ত জানালেন, আকার প্রকার-এর অভিজিৎ ও রিনা লাট যেমন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনই তিনি সর্বক্ষণ পাশে পেয়েছেন কলাভবনের কিউরেটর সুশোভন অধিকারীকে, সহায়তা পেয়েছেন বিশিষ্ট ভাস্কর রাধাকৃষ্ণন, গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের জয় ভট্টাচার্য ও নানা জনের কাছে। প্রদর্শনী চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত (৯-১৭ অক্টোবর এবং রবিবার বাদে, রোজ ২-৭টা)।
|
দুর্লভ ছবি |
বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড, জনস্টন অ্যান্ড হফম্যান-এর মতো বিদেশি আলোকচিত্রী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক দিকে ভারতীয় রাজা-মহারাজা, অন্য দিকে সাহেবদের আনুকূল্য আদায় করতে পেরেছিলেন তিনি। রাজা দীন দয়াল (১৮৪৪-১৯০৫) উনিশ শতকের পেশাদার ফটোগ্রাফির জগতে অবিস্মরণীয় নাম (সঙ্গের ছবি)। ইনদওর, হায়দরাবাদ, মুম্বইয়ে স্টুডিয়ো ছিল তাঁর। অন্তত ৩০ হাজার ছবি তুলেছিল রাজা দীন দয়াল অ্যান্ড সন্স। ১৯৮৯-এ ইন্দিরা গাঁধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দি আর্টস (আই জি এন সি এ) তাঁর উত্তরসূরিদের কাছ থেকে প্রায় তিন হাজার গ্লাসপ্লেট নেগেটিভ, স্টুডিয়ো রেজিস্টার, ক্যামেরা ইত্যাদি সংগ্রহ করে। ২০১০-’১১-য় তা থেকে বাছাই ছবির প্রদর্শনীও হয়। এ বার জাতীয় গ্রন্থাগারের ডিজি কিশোরকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে কলকাতায় দেখা যাবে আই জি এন সি এ সংগ্রহের সেই সব দুর্লভ ছবি (ভাষা ভবন আর্ট গ্যালারি, ৬-১৫ সেপ্টেম্বর, ১০-৫টা)। থাকবে চমৎকার ক্যাটালগও। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটেয় উদ্বোধন করবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।
|
প্রকাশক |
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি কলেজ রো-এ একটি আলমারি ভাড়া নিয়ে কলেজ পড়ুয়া এক যুবক শুরু করেন প্রকাশনা ‘তুলি-কলম’। সেই যুবক, কল্যাণব্রত দত্ত-র জন্ম ১৯৩১-এর ২২ জুন ফরিদপুরে। কলকাতায় এসে দাদার তত্ত্বাবধানে আইএ পাশ করে সিটি কলেজে সান্ধ্য বিভাগে ভর্তি হন। পড়াশুনোর পাশাপাশি দুই দাদা মনীন্দ্র-সুব্রতর লেখা ও ছবির সমন্বয় ঘটিয়ে কল্যাণব্রত শুরু করলেন তুলি-কলম। প্রকাশিত হল ছোটদের নানা মনকাড়া বই। ক্রমে তারাশঙ্কর, শৈলজানন্দ, জরাসন্ধ, অবধূত-এর উপন্যাস। মৌলিক উপন্যাস, রচনাবলি, ধর্মগ্রন্থ ও শিশুসাহিত্যের পাশাপাশি অনুবাদ সাহিত্যও। ‘কম দামে ভাল বই’— এটিই হয়ে ওঠে তুলি কলমের পরিচয়। ’৫৮-য় ১এ কলেজ রো-র একতলার তিনটি ঘরে থিতু হয় তুলি-কলম। অসুস্থতার জন্য গত দশ বছর প্রকাশনার কাজ সরাসরি দেখতে না পারলেও বই পাড়ার সঙ্গে ছিল তাঁর নাড়ির টান। সম্প্রতি ৮২ বছর বয়সে চলে গেলেন এই প্রবীণ প্রকাশক।
|
বর্ষামঙ্গল |
দেশ জুড়ে তখন অসহযোগ আন্দোলন। ১৯২১-এ ইয়োরোপ থেকে ফিরে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ১৭ ভাদ্র (১২ অগস্ট) বর্ষাসঙ্গীতের আয়োজন করলেন জোড়াসাঁকো-য়। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘বাংলার চারুকলার ইতিহাসে সেটি একটি বিশেষ ঘটনা।’ নৃত্য নয়। কল্পনা কাব্য থেকে রবীন্দ্রনাথের স্বকণ্ঠে আবৃত্তির মাঝে ছাত্রছাত্রীদের গান। স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ মতাদর্শের দিক থেকে দেশের জনমতের প্রায় একটি বিপরীত প্রান্তে অবস্থান করে এই ঋতু-উৎসব ‘বর্ষামঙ্গল’ সূচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সে সময় প্রবল আলোড়ন তোলে। ৯২ বছর পর সেই উৎসব স্মরণেই ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটেয় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে আবার ‘বর্ষামঙ্গল’ অনুষ্ঠিত হবে সোহিনী গোষ্ঠীর পরিবেশনায়। আয়োজনে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এই উপলক্ষ স্মরণেই ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধে ছ’টায় আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদার প্রতিষ্ঠিত ‘প্রাচীন প্রবাহিনী’ শোভাবাজার নাটমন্দিরে নিবেদন করবে ‘বরষাজলধারার সাথে গাহিতে চাহে গান’। সঙ্গীত পরিচালনায় ও দ্বিতীয় পর্বে একক গানে আচার্য-শিষ্য আশিস ভট্টাচার্য।
|
ফের একসঙ্গে |
ওঁরা অনেকেই মিনার্ভা রেপার্টরিতে অভিনয় করতে এসেছিলেন। রাজা লিয়ার, দেবী সর্পমস্তা বা চন্দ্রগুপ্তর মতো মঞ্চসফল প্রযোজনায় ওঁরা অনেকেই সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখন মিনার্ভা রেপার্টরির চুক্তি শেষ। ওঁরা ক’জন কিন্তু আবার একসঙ্গে কাজ করছেন নিজেদের মতো করে। সঙ্গে আছেন অন্য বন্ধুরাও। শৈলেন ঘোষের গল্প থেকে নাট্যরূপ দিয়ে ‘মা এক নির্ভীক সৈনিক’ নাটক পরিচালনা করছেন কৌশিক কর। বহরমপুরের ছেলে। পড়ানোর কাজ ছেড়ে শুধু থিয়েটারই করবেন ঠিক করেছেন। মিনার্ভায় ওঁদের অভিনয় দেখে খুশি হয়ে কিছু দর্শক অর্থসাহায্য করেছেন। বাকি নিজেদের সম্বল উজাড় করেই নাটকটা তৈরি করছেন কৌশিক আর তাঁর সঙ্গীরা। ২ সেপ্টেম্বর, জ্ঞান মঞ্চে প্রথম অভিনয়।
|
সংলাপে সংলাপে |
এখানে ভ্যাপসা গরম আর ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টি আর ওখানে ঝকঝকে রোদ আর হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা। কনকনে শীতেই তো বাঙালির যত গানবাজনানাটক। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বঙ্গজরা হালে আয়োজন করেছিলেন নাট্যোৎসব। দু-কিস্তিতে। মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটকের মঞ্চায়ন আর শেষ পর্বে নানা রসের শ্রুতিনাটক। প্রয়াণের পর এই সেপ্টেম্বরে তাঁর প্রথম জন্মদিন উপলক্ষে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গুচ্ছকবিতা। একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেক্ষাগৃহে সংলাপে সংলাপে জমাট আনন্দ দিয়ে এলেন বাচিক শিল্পী দম্পতি ঊর্মিমালা ও জগন্নাথ বসু। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ সাউথ ওয়েলস।
|
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র |
|
পূর্ববঙ্গে পঞ্চাশের দশক থেকেই বাংলা ছবির যাত্রা শুরু, ষাটের দশক জুড়ে ঢাকায় তৈরি হয় ১৫৪টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের বাংলা ছবি। বেশ কিছু ছবিতে আসে রবীন্দ্রসংগীত, জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’য় ব্যবহৃত রবীন্দ্রগান ‘আমার সোনার বাংলা’ হয়ে ওঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ছবির দীর্ঘ ইতিহাস ছ’খণ্ডে মলাটবন্দি হল: বাংলাদেশের অন্য সিনেমা (সম্পা: সুশীল সাহা, অভিযান)। আজ ২ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় গোর্কি সদনে গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠানে থাকবেন তানভীর মোকাম্মেল (সঙ্গে তাঁর ‘চিত্রানদীর পারে’-র একটি স্থিরচিত্র), মোরশেদুল ইসলাম, মুনিরা মোরশেদ মুন্নি, নিশাত জাহান রানা, দেবেশ রায়, অরুণ সেন, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় সহ দুই বাংলার বিশিষ্ট জন। দেখানো হবে জহির রায়হানেরই ছবি ‘স্টপ জেনোসাইড’। অভিযান-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব।
|
ট্রাক আর্ট |
এ বারের দুর্গাপুজোয় মিশে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের শিল্প। পণ্যবাহী গাড়ির বহিরঙ্গে ফুল লতা পশু পাখি মাছ এমনকী বহুবর্ণ ক্যালিগ্রাফির বিন্যাসে গড়ে ওঠা এই শিল্প খ্যাতি পেয়েছে ‘ট্রাক আর্ট’ নামে। পেশোয়ারি এই শিল্পকলা সারা বিশ্ব দেখেছে লন্ডন অলিম্পিকে। এই নিয়েই এ বার শিল্পী গোপাল পোদ্দারের ভাবনায় মণ্ডপ গড়ে উঠছে হাতিবাগান নবীন পল্লিতে। পানাগড়ে তৈরি হচ্ছে ট্রাকের ‘বডি’। পাকিস্তান থেকে আসছেন এর শিল্পী হায়দর আলি, সঙ্গে মহম্মদ ইকবাল ও মুখতিয়ার আহমদ। তবে পুজোর ভিড় বাঁচিয়েও দেখা যাবে এই শিল্পকলা, আগামী শনিবার আইসিসিআর-এর স্কাল্পচার কোর্টে শুরু হচ্ছে ট্রাক আর্ট নিয়ে কর্মশিবির ও প্রদর্শনী। কেন্দ্রীয় বিদেশ ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় আসছেন শিল্পীরাও। সহযোগী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আর্ট ইলিউমিনেট্স ম্যানকাইন্ড’-এর (এইম) পক্ষে সোনালী চক্রবর্তী জানালেন, ‘আর্ট অন হুইল্স’ শীর্ষক প্রদর্শনীটি চলবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ১১-৮টা। সঙ্গে তারই একটি ছবি।
|
গোয়েন্দা সাহিত্য |
মেয়েদের বুদ্ধিহীনতার অনড় মিথকে ভেঙে-গুঁড়িয়ে এক গোয়েন্দানির ধারাবাহিক কারবার নিয়ে যিনি বহু দিন আসর মাত করে রেখেছিলেন, তিনি প্রভাবতী দেবী সরস্বতী।— নির্মাল্যকুমার ঘোষ লিখেছেন তাঁর ‘গোয়েন্দানীর সাতকাহন’ নিবন্ধে। প্রভাবতী থেকে নলিনী দাশ, বা আর যাঁরা মেয়ে-গোয়েন্দাদের নিয়ে লিখেছেন, তার একটা খতিয়ান নিবন্ধটিতে। এমনই আরও গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধ কোরক-এর (সম্পা: তাপস ভৌমিক) প্রাক্ শারদ ‘বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্য সংখ্যাটি’তে। ‘বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্য জনপ্রিয় হলেও আজও প্রথম শ্রেণীর পদবাচ্য নয়।’— সম্পাদকের নিবেদন-এ এমন মন্তব্য থেকেই সংখ্যাটি নির্মাণের কারণ টের পাওয়া যায়। প্রথম বাংলা গোয়েন্দা গল্প, বাংলা গোয়েন্দা কাহিনির ইতিবৃত্ত, বিদেশি গোয়েন্দা গল্পের প্রভাব ইত্যাদি আলোচনার সঙ্গে দীপক চ্যাটার্জি, পরাশর বর্মা, অনুকূল বর্মা, ব্যোমকেশ বক্সী, ফেলুদা, কর্নেল, কাকাবাবু’র মতো বাঙালি গোয়েন্দা আর তাঁদের স্রষ্টা-সাহিত্যিকদের নিয়ে আলাদা আলাদা লেখা।
|
রূপকথা নয় |
আমার মামা আপনার সঙ্গে পড়তেন। আপনারা একসঙ্গে পথের পাঁচালি দেখতে গিয়েছিলেন বীণা সিনেমায়।” দাপুটে প্রবীণ অভিনেতা প্রদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম দেখা করতে এসে এ ভাবেই নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন নতুন পরিচালক অংশুমান রায়। ‘অংশুমানের ছবি’র এই অংশটুকু নিজের জীবনেরই ছবি, বলছিলেন পরিচালক অতনু ঘোষ। ‘মামার বন্ধু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। টেলিফিল্ম-এ অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলাম, ‘অংশুমান’-এর মতোই। প্রস্তুতি থাকলেও সব গুলিয়ে বলে বসলাম মামা পড়তেন আপনার সঙ্গে।’ তথ্যচিত্রে হাত পাকানো অতনুর প্রথম ছবি ২০০৯-এ ‘অংশুমানের ছবি’। দ্বিতীয় ছবি ‘তখন তেইশ’ মুক্তি পায় দু’বছর পর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নায়ক করেই অতনুর নতুন ছবি ‘রূপকথা নয়’। ‘গণ্ডির বাইরের মানুষের কথা আমরা ভাবিই না। ছবিতে সৌমিত্র এই জায়গাটাই ভেঙেছেন।’ ছবিতে অবসরপ্রাপ্ত কেরানি সৌমিত্র পার্কে বসে অন্যদের কথা শোনেন। এ ভাবেই কয়েক জনের সমস্যার সঙ্গে তিনি নিজেকে মিশিয়ে ফেলেন। জীবন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতাই তাঁর ভরসা। তা দিয়েই সমস্যাজর্জর মানুষগুলির একরৈখিক মনের ওপর আলো ফেলে সমস্যাকে অন্য ভাবে দেখতে শেখান। এ ভাবে অপরিচিত মানুষের কথা শোনার ফ্যান্টাসি থেকে তিনি বাস্তবে এসে পড়েন। পেরিয়ে যান রূপকথা। ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ‘রূপকথা নয়’। |
|
|
|
|
শিল্পী |
নয় বছরে সেতার বাজিয়ে অভিনন্দন কুড়িয়েছিলেন। সতেরোতে তিনিই এক সঙ্গীত সম্মেলনে দিকপাল সঙ্গীতগুণীদের বিস্মিত করেন। তিনি নিখিলরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৫৬-য় তানসেন সঙ্গীত সম্মেলনে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান, আলি আকবর ও নিখিলের ত্রয়ী-বাদন সাড়া জাগানো ঘটনা। রবিশঙ্কর বিলায়েতের বাদনশৈলী অনুশীলন ও আত্মস্থ করলেও নিজেকে হারিয়ে ফেলেননি। তাই ওঁদের পাশে সেতারের তৃতীয় পার্থ হয়ে রয়েছেন তিনি।
জন্ম ১৯৩১-এর ১৪ অক্টোবর। বাবা জিতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সেতারের হাতেখড়ি। শেখেন মুস্তাক আলি খান ও বীরেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কাছেও। পরে মাইহারে শিখতে যান ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের কাছে। এক দিন তিনি বাজাতে বললে নিখিল পূর্বী বাজান। শুনে খান সাহেব চিৎকার করে ওঠেন ‘পূর্বী নয়, মুরগি বাজায়া মুরগি’। এর পর শুরু হল তালিম— পালটা, মূচ্ছর্র্না, তান মীড়ের অলংকার। লাজুক ও নম্র নিখিলকে দিয়েছিলেন ধ্রুপদী অঙ্গের তালিম। সঙ্গীত ও সেতার ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। ’৫৫-য় আলি আকবর মিউজিক কলেজের শিক্ষক হন। ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘ছুটি’, সত্যজিৎ রায়ের তথ্যচিত্র ‘দি ইনার আই’-তে আবহসঙ্গীতে তাঁর সেতার শোনা গিয়েছে। বিদেশে বহু অনুষ্ঠানে বাজিয়েছেন। ১৯৮৬-র ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন তাঁর জীবনের শেষ অনুষ্ঠান। শীর্ষ ছুঁয়ে যাওয়ার আগে মৃত্যু ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আজ সন্ধে ছ’টায় কলামন্দিরে ‘নিখিল সন্ধ্যা’য় স্বপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিখিল-জীবনী তার ছিঁড়ে গেছে কবে-র (আনন্দ) নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হবে। আয়োজনে নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরাগী সমিতি। |
|
|
|
|
|
|