এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার খাসবালান্দা পঞ্চায়েতের নাসিরআটি গ্রামের ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে শান্তিরাম মাহালি নামে ওই ব্যক্তিকে শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মহিলাকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধৃতকে এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আদিবাসী ওই মহিলার পরিবার তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত।
এই ঘটনায় রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “এমন ঘটনা ভয়ঙ্কর। বিচারক ইতিমধ্যে ওই সিপিএম সমর্থকের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা ওই ব্যক্তির কঠোর শাস্তির দাবি করছি।” তবে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য স্বজল দাস বলেন, “ধৃত ব্যক্তির সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” ধৃতের বক্তব্য, সম্পত্তির বিবাদের জেরে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মহিলার স্বামী মারা গিয়েছেন। মাহালিপাড়ার বাড়ির একটি ঘরে একাই থাকতেন তিনি। অন্য দু’টিতে তাঁর দুই ছেলে, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে থাকেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে গ্রামে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ছেলেরা কেউই বাড়িতে ছিলেন না। তখনই একা পেয়ে ওই মহিলার ঘরে ঢুকে শান্তিরাম তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। মহিলার দাবি, “চিৎকার করলে ছেলেদের খুন করবে বলে হুমকি দেয় শান্তিরাম। তার পর আমার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালায় সে।”
মহিলার দাবি, বেশ কিছুক্ষণ পড়ে থাকার পর একটু সুস্থ বোধ করলে তিনি চিৎকার করেন। প্রতিবেশী ও তাঁর ছেলেরা ফিরে আসেন। তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন গ্রামে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা চলে। কিন্তু তাতে না মেটায় পরের দিন রাতে থানায় শান্তিরামের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তাঁর ছেলেদের বক্তব্য, “ওই রাতে আমরা রাতে থানায় যাওয়ার জন্য আলোচনা করলে সিপিএমের তরফ থেকে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা তৃণমূল করি। সিপিএমের ভয়ে কেউ এর প্রতিবাদ করছে না।”
তবে অভিযুক্ত শান্তিরামের দাবি, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছিল। অনুষ্ঠানের দিন তাঁকে ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর একটা কাগজে সই করানোর চেষ্টা করেন ওই মহিলা। মারধরও করা হয় তাঁকে। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে ধর্ষণের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। |