ঝাড়া দেড় ঘণ্টার উপরে ট্রেন বন্ধ। লোকজন চটে কাঁই। কিন্তু যাদের জন্য এত কাণ্ড, তাদের টিকির দেখা নেই।
বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা। নিউ ইয়র্ক সাবওয়ে সার্ভিসের একাংশে ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হল। আরও সঠিক ভাবে বললে ‘বি’ আর ‘কিউ’ লাইনে ব্রুকলিন এলাকার দু’টি স্টেশন, কিংস হাইওয়ে এবং ডিক্যাল্ব অ্যাভিনিউয়ের মধ্যে প্রায় ৬ মাইল রাস্তায় ট্রেন চলাচল স্থগিত থাকল।
কেন? কারণ, ওদের দু’জনের কোনও তোয়াক্কা নেই। গায়ে কালো ছোপ, বয়স বড়জোর বছরখানেক। তারা হেঁটে বেড়াচ্ছে লাইনের মধ্যে। মা ষষ্ঠীর বাহনদের মরতে দেওয়া তো চলে না! অগত্যা মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটি-র (এমটিএ) কর্তারা থার্ড রেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেন! “৬০০ ভোল্টের ছ্যাঁকা খেলে বাঁচা মুশকিল”, বললেন এমটিএ-র মুখপাত্র কেভিন অরিট্জ। |
নিউ ইয়র্কাররা রেললাইনে অনেককেই ঘুরে বেড়াতে দেখতে অভ্যস্ত। তাদের কেউ ইঁদুর, কেউ ছুঁচো। বেড়ালও দেখা যায়, তবে মাটির উপরে। গলিঘুঁজিতে। কিন্তু এই দু’জন এক বার দেখা দিয়ে গেল কোথায়? খোঁজ খোঁজ। এমটিএ-র কর্তারা লাইনে নেমে পড়লেন। আয় আয়, তু তু সব বৃথা। ঘণ্টা কাবার হয়ে গেল! এ বার যাত্রীদের মধ্যে ধৈর্য কমতে শুরু করেছে। ট্রেন বন্ধ থাকায় ভিড় জমে যাচ্ছে। কাজের দেরি হয়ে যাচ্ছে! জটলার মধ্যেই ছিলেন জনৈক যাত্রী উইলসন বার্টন। তিনি আবার এমটিএ-র প্রাক্তন কর্মী। বিরক্ত হয়ে বললেন, “হুঁঃ, টাকাটাই নষ্ট! এমটিএ-র যেন আর কোনও কাজ নেই!”
বিরক্তিটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে লাগল! হাজার হোক, কাজের দিনে অনন্ত সময় ধরে ট্রেন বন্ধ রাখা চলে না! তত ক্ষণে নিউ ইয়র্ক পুলিশ হাজির হয়েছে! ভিড় সামলাতে ব্যস্ত তারা। দেড় ঘণ্টা গড়িয়ে দু’ঘণ্টার দিকে এগোতে ট্রেন ফের নড়ল! কিন্তু মার্জারদের দেখা নেই। কোথা যে উধাও হল...!
অবশেষে সন্ধে ছ’টা। সকালে ঠিক যেখানে প্রথম দেখা গিয়েছিল, সেখানেই ফিরে এল ওরা। সেই কালো ছোপ ছোপ, ছোট ছোট থাবা, সরু লেজ সেই এক নির্বিকার ভাব! এ বার আধ ঘণ্টার মধ্যে পাকড়াও এবং সটান কাছের একটি হোমে চালান! এমটিএ মুখপাত্র জুডি গ্লেভ খুশি মনে বললেন, “কী করব বলুন! লাইনে কিছু নড়াচড়া করতে দেখলে ট্রেন থামিয়ে দেওয়াই কন্ডাক্টরের কাজ।” সংস্কার নয়, এটা নিয়মের ব্যাপার!
কিন্তু তার পর সাবওয়েতে অতগুলো ঘণ্টা ট্রেন আবার পুরোদমে চলল, থার্ড রেলে বিদ্যুৎ রইল সব কিছুর মধ্যে ওরা দু’জন ছিল কোথায়? বাঁচলই বা কী ভাবে? যাত্রীরা বলছেন, বেড়াল বলে কথা! ন’টা জীবন বাঁচে ওরা। ম্যাও-মন্ত্রের জোর কম নাকি! |