চাকদহে ‘ডাকাতি’
স্বামীকে ‘ঘরে বাঁধতে’ ডাকাতির গল্প স্ত্রীর
‘অন্য’ সম্পর্ক রয়েছে স্বামীর। স্ত্রী’কে জানিয়েই তিনি যান সেখানে। মনে মনে ‘তেলে বেগুনে’ জ্বললেও কোনও ভাবেই স্বামীকে সংসারে বাঁধতে না পেরে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন নদিয়ার চাকদহের বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের মিঠু সেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরই মনে হয়েছে, আত্মহত্যা করলে স্বামী কি শাস্তি পেলেন তা তো আর দেখা হবে না!
তাই মঙ্গলবার স্বামী বেরিয়ে গেলে নিজেই ডাকাতির গল্প ফাঁদলেন। গল্পটি আরও বিশ্বাসযোগ্য করতে ‘ডাকাতদের’ ফেলে যাওয়া একটি চিঠির প্রতি তদন্তকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চেয়েছিলেন মিঠুদেবী। আর তাতেই কাল হল আঁকাবাঁকা অক্ষরে লেখা ওই চিঠি ডাকাতদল কেন ফেলে যাবে এই প্রশ্ন তো ছিলই। তার পাশাপাশি চুড়িদার ও হাতে ব্রেসলেট পরা দশাসই চেহারার এক মহিলা ডাকাতের কথা বারবার বলায় সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারীদের। এই অঞ্চলে মহিলা ডাকাতের কোনও খবর পুলিশের কাছে কখনও ছিল না। তাই এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে মহিলার অভিযোগ পাওয়ার পরে বুধবার দফায় দফায় তাঁকেই জেরা করতে শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে স্বীকার না করলেও জেরায় শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়েন মিঠুদেবী। পুলিশকে স্বামীর অন্য সম্পর্কের কাহিনী শোনান। স্বামীকে শায়েস্তা করতেই যে তিনি মরিয়া হয়ে এই ডাকাতির গল্প বানিয়ে অভিযোগ করেছেন তাও জানান। এরপরে তাঁর স্বামী পেশায় দলিল লেখক শান্তিবাবুকে পুলিশ ডেকে পাঠায়। শান্তিবাবুও বাদকুল্লার এক মহিলার সঙ্গে নিজের প্রণয়ের কথা স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন আর সে পথে পা বাড়াবেন না বলে। তদন্তকারীরা জানান, ওই মুচলেকায় নিজের স্ত্রী’র প্রতি মনোযোগী হবেন এবং সংসারে মন দেবেন বলেও শান্তিবাবু নিজেই লিখেছেন। পুলিশ জানিয়েছে আপাতত দু’জনকেই বাড়িতে একসঙ্গে থাকতে বলা হয়েছে।
শান্তিবাবুর কথায়, ‘‘মিঠু যা করেছে তাতে আমার উচিত শিক্ষা হয়েছে। ডাকাতির গল্পে লোক জানাজানি হল ঠিকই। তবে ঢের হয়েছে, আর নয়।’’
ঘটনার মোড় যে এভাবে ঘুরে যাবে মিঠুদেবী তা নিজেও ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি। ঘটনার পরে প্রথমে পুলিশকে ডাকাতদের ধরার ব্যাপারে রীতিমতো চাপও দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু নিজেই ধরা পড়ে গিয়ে এখন নিজেও লজ্জ্বিত মিঠুদেবী বলেন, ‘‘স্বামীকে অন্য নারী-সঙ্গ থেকে রুখতে এটাই আমার শেষ অস্ত্র ছিল। তাতে আমার মান-সম্মান সব গেল। এরপরও যদি ও না শোধরায় তাহলে কি হবে জানি না।’’ তবে নিজের স্বীকারোক্তিতে মিঠুদেবী জানিয়েছেন, আত্মহত্যার কথা ভাবতে গিয়ে ডাকাতির গল্প ফাঁদার কথা আচমকাই মনে এসেছিল। ভাবামাত্র আর দেরি করেননি। ছেলের অঙ্ক খাতার পাতা ছিঁড়ে বাঁ হাতে ডাকাতের চিঠি লিখেছিলেন। তারপর নিজেই আলমারি থেকে শাড়ি-কাপড় বের করে বিছানায় রেখে মোবাইলের সিম ভেঙে, মোবাইল চার্জারের তার হাতে জড়িয়ে, মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে বসেছিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় সেন বাড়ির অন্যরা বুঝতেও পারেননি যে গোটাটাই সাজানো।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.