বছর কয়েক আগেও দমদম পার্কের বাসিন্দারা রসিকতা করে বলতেন মেঘ করলে বাঙুরের রাস্তায় জল জমে। এখন রসিকতাটা কার্যত উল্টে গিয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে যেখানে দমদম পার্কের বিভিন্ন বাড়িতে জল ঢুকেছে, জল গ্যারাজেও, সেখানে বাঙুরের রাস্তাঘাট শুকনো। বাঙুরের বাসিন্দারা বলছেন, ‘দমদম পার্ক ভাসছে, বাঙুর হাসছে’।
দমদম পার্ক ও বাঙুরে জল জমার জন্য দুই এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান অনেকটাই দায়ী। দু’দিকে যশোহর রোড ও ভিআইপি রোড উঁচু হওয়ায় দুই এলাকার অবস্থান বেসিনের মতো।
কিন্তু কী ভাবে পাল্টে গেল বাঙুরের পরিচিত জলছবি? বাঙুরের পুর প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, বাসিন্দারা আগের চেয়ে সচেতন। তাঁরা প্লাস্টিক বর্জন করেছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা ঘুরে দেখতেন, কেউ প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন কি না। প্লাস্টিক রোধে প্রচারও চলেছে। স্থানীয় কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “এখানে কেউ প্লাস্টিক ব্যবহার করেন না। কোনও চাষি বাঙুর বাজারে সব্জি বেচতে এলেও কাগজের প্যাকেট ব্যবহার করেন। যখন প্লাস্টিক ব্যবহার করা হত, তখন দেখা যেত নিকাশি নালার মুখ প্লাস্টিকে আটকে।”
এলাকাবাসীরা জানান, নিকাশি নালাগুলো সারা বছর ধরে পরিষ্কার হয়। এক বাসিন্দা বলেন, “যখন ফ্ল্যাট কিনে থাকতে শুরু করি, অনেকে রসিকতা করতেন, নৌকোও কিনে রাখুন। বর্ষায় কাজে আসবে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কিন্তু দিব্যি হেঁটে বাড়ি ফিরেছি।”
বাঙুরের বাসিন্দারা যেখানে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন, দমদম পার্কের বাসিন্দারা সেখানে প্রচুর টাকা রিকশা ভাড়া দিচ্ছেন। এক বাসিন্দা জানালেন, দমদম পার্কের পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্ক যেতে লাগছে ৫০ টাকা। দক্ষিণ দমদম পুরসভার কয়েক জন প্রতিনিধির মতে, বাঙুরে পাম্প হাউস তৈরিও জল না জমার একটা বড় কারণ। সারা বছর চলে তিনটি পাম্প। নিকাশি নালাগুলোতে প্লাস্টিক না জমে থাকায় জল দ্রুত বেরোয়। দমদম পার্ক এলাকার কাউন্সিলর সমীর চট্টোপাধায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পরের বছর পাম্প বসবে দমদম পার্কেও। আদৌ তা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়েই এলাকার মানুষ। |