ছোটবেলায় বাবাকে সক্রিয় রাজনীতি করতে দেখেছেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেও ছিল প্রায় একই পরিবেশ। ২০০৩ সালে তুফানগঞ্জ-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিসাবে প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে হেরে যান। তবে তাতে রাজনীতিতে আগ্রহ কমেনি। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। এবার সেই পুষ্পিতা
|
পুষ্পিতা ডাকুয়া। |
ডাকুয়ার নামই কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে ঘোষণা করল তৃণমূল। সোমবার কলকাতায় দলের জেলা নেতৃত্ব ও নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই পুষ্পিতা ডাকুয়ার নাম চূড়ান্ত হয়।
দলীয় সূত্রের খবর, সভাধিপতি হিসাবে পুষ্পিতা ডাকুয়ার নামের পাশাপাশি সহকারি সভাধিপতি হিসাবে মাথাভাঙার ললিত প্রামাণিক এবং ভোটের আগে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতি বর্মনকে দলনেত্রী হিসাবে বাছা হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সভাধিপতি হিসাবে পুষ্পিতা ডাকুয়া ছাড়াও সহকারি সভাধিপতি ও দলনেত্রী হিসাবে যথাক্রমে ললিত প্রামাণিক ও চৈতি বর্মনের নাম মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। সার্বিক উন্নয়নে সকলে কাজ করবেন।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি জেলার খারিজা বেরুবাড়ি এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত জিতেন্দ্র নাথ রায়ের মেয়ে পুষ্পিতাদেবী বোনাপাড়া হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে হলদিবাড়ি হাইস্কুলে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হলেও ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেননি। বক্সিরহাটের শালবাড়ির বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ ডাকুয়ার সঙ্গে বিয়ের পর দুই দশকের বেশি সময় থেকে সেখানেই আছেন। দুই পরিবার কংগ্রেস সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত ছিল। পুষ্পিতা দেবীর বাবা একাধিকবার পঞ্চায়েত ভোটেও লড়েন। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবশ্য পরিবারের সকলের সঙ্গে পুষ্পিতা দেবী তৃণমূলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তবে প্রকাশ্য রাজনীতিতে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। ২০০৩ সালে তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার মাধ্যমে প্রথম প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেন।
সেবার সিপিএম প্রার্থীর কাছে তিনি ২৫ ভোটে হেরে যান। ২০০৮ সালে ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচিত হন। তাঁকে তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ায় পরে অবশ্য সভাপতি হিসাবে পুষ্পিতা দেবী অপসারিত হন। বিধানসভা ভোটের আগে দলবদলের হিড়িকে ফের ওই সমিতি তৃণমূল দখল করলে তিনি সভাপতি হন। এবার জেলাপরিষদ আসনে প্রার্থী হয়ে ৫ হাজারের বেশি ভোটে সিপিএম প্রার্থীকে হারান।
পুষ্পিতা দেবীকে সভাধিপতি করে দল তাঁকে দলীয় আনুগত্যের স্বীকৃতি দিল বলে তৃণমূলের একটি অংশের মত। কলকাতা থেকে মোবাইলে পুষ্পিতা দেবী বলেন, “সভাধিপতি হিসাবে নাম ঘোষণা হওয়ায় আমার দায়িত্ব বেড়ে গেল। নেত্রীর নির্দেশ মেনে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে জেলার সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করব।” পুষ্পিতা দেবীর নাম চূড়ান্ত হওয়ায় খুশির হাওয়া শালবাড়িজুড়ে। প্রসঙ্গত সভাধিপতির দৌড়ে সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতি বর্মনের নামও ছিল। |