ছবিতে ধরা রইল রুপোলি পর্দার ইতিহাস
সত্যজিৎ ও তার পর
খন ঠিক বিকেল চারটেয় লোডশেডিং হয়ে যেত স্টুডিয়োয়, যে শটই নিতেন মানিকদা (সত্যজিৎ রায়) কাঁটায়-কাঁটায় চারটেয় শেষ করতেন।’— ‘ঘরে বাইরে’র শুটিংয়ের কথা বলছিলেন নিমাই ঘোষ। হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্ট সেন্টার-এ নিজের তোলা ‘ঘরে বাইরে’র স্থিরচিত্রের (নীচে ডান দিকে) সামনে দাঁড়িয়ে স্মৃতিতে ফিরছিলেন নিমাইবাবু। ‘ছবির শট চলাকালীন আমাকে অ্যালাও করতেন মানিকদা শাটার টিপতে, শব্দটা পরে মুছে দেওয়া হত। সে দিন এমন ভাবে শট নিচ্ছেন রায়দা (সৌমেন্দু রায়) আমি স্পেস পাচ্ছি না। এ দিকে হেঁটে আসছেন ভিক্টর আর স্বাতীলেখা, শট শেষ হওয়ার মুখে, চারটে বাজে-বাজে প্রায়। আমি ভার্টিকাল ফ্রেমেই ওঁদের দু’জনকে বন্দি করে শাটার টিপলাম। চারটে বাজল, শট শেষ হল, লোডশেডিং হয়ে গেল।’ ওয়ার্ল্ড ফোটোগ্রাফি ডে আর ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষ উপলক্ষে দিল্লি আর্ট গ্যালারি কলকাতায় নিমাই ঘোষের এই স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী ‘সত্যজিৎ রে অ্যান্ড বিয়ন্ড’ (কিউরেটর প্রমোদ কুমার কে জি) শুরু করেছে ১৬ অগস্ট। চলবে ৩১ অবধি, প্রতি দিন ১১-৭টা। একটি ক্যাটালগও প্রকাশ করেছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি, সেটির উদ্বোধন হল শুরুর সন্ধ্যায়, সৌমেন্দু রায়ের হাতে, উপস্থিত ছিলেন মীরা নায়ার।
সত্যজিৎ-সংক্রান্ত বেশ কিছু ছবি এ বারে নিমাই ঘোষের এই প্রদর্শনীতে খানিক চেনা-জানার বাইরে, আগের প্রদর্শনীগুলোতে দেখা যায়নি। যেমন একটি ছবিতে চৌরঙ্গি, গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে রাস্তা পেরোচ্ছেন সত্যজিৎ, ‘সীমাবদ্ধ’ শুটিংয়ের সময়। আর একটি ছবিতে শুটিংয়ের অবকাশে সিগারেট-হাতে আড্ডা দিচ্ছেন সত্যজিৎ, সৌমিত্র আর শত্রুঘ্ন সিংহের সঙ্গে। সৌমিত্র-শত্রুঘ্নর মতো বাংলা ও হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেক তারকাই ফ্রেমবন্দি হয়েছেন এ-প্রদর্শনীর ‘অ্যান্ড বিয়ন্ড’ অংশটিতে। যেমন সুচিত্রা সেন (উপরের বাঁ দিকে), নিমাইবাবুর আজ আর স্পষ্ট মনে নেই সত্তর দশকে ‘দেবী চৌধুরাণী’ না ‘প্রণয় পাশা’— কোন ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে তুলেছিলেন। এ ভাবেই আছেন রেখা, জয়া-অমিতাভ, বিনোদ খন্না, শর্মিলা...। রয়েছে মৃণাল সেন, এম এস সথ্যু, অপর্ণা সেন, গৌতম ঘোষ, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, সন্দীপ রায়, বা এমন আরও পরিচালকদের ছবির স্থিরচিত্র। বছর সাতেক আগে এই দিল্লি আর্ট গ্যালারিকে ১ লক্ষ ২০ হাজার নেগেটিভ দিয়েছিলেন নিমাইবাবু, সে-সমস্ত ডিজিটাইজ করে সিনেমার ‘ফোটোগ্রাফিক হিস্টরি’ তৈরি করেছে গ্যালারির আর্কাইভ। নিমাইবাবুর ক্যামেরার লেন্সে ধরা রইল রুপোলি পর্দার সোনালি ইতিহাস।

লন্ডনে প্রদর্শনী
‘কে বলেছিলেন মনে নেই— সিনেমা হল কমার্শিয়াল আর্টের সর্বোচ্চ রূপ। দশ বছর ধরে ছবি করার পেশায় থাকার পর মনে হচ্ছে ওই সংজ্ঞা নিয়ে আর ঝগড়া করে লাভ নেই।’ ১৯৬৫-তে লিখেছিলেন সত্যজিৎ। ছবির চিত্রনাট্য থেকে প্রচারের পোস্টার কী ভাবে করতে হয়, তা তো সত্যজিৎ রায়ের কাছেই শিখেছে ভারতীয় সিনেমা। বিদেশি ফিল্ম-বিশেষজ্ঞদের কথায়: স্ট্যানলি কুব্রিক, হিচকক, কিংবা কুরোসাওয়া যদিও হাত লাগিয়েছেন তাঁদের ছবির পোস্টারে, তবু সত্যজিতের মতো এত ‘ইমাজিনেটিভ’ ছিল না তাঁদের কাজ। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট ন্যাশনাল আর্কাইভ সত্যজিতের ছবির এক পোস্টার-প্রদর্শনী শুরু করেছে ২১ অগস্ট, বি এফ আই সাউথব্যাঙ্ক, লন্ডনে। ‘টেক্সট’ লিখেছেন অ্যান্ড্রু রবিনসন। চলবে ৩১ অবধি। সত্যজিতের ছবিও দেখানো হচ্ছে। সক্রিয় সহযোগিতায় কলকাতার সত্যজিৎ রায় সোসাইটি, জানালেন সোসাইটি-র সিইও অরূপ দে। আর সদস্য-সচিব সন্দীপ রায়ের মন্তব্য: ‘বিদেশের মানুষজন বাবার পোস্টার-ডিজাইন দেখতে পাচ্ছেন, তা নিয়ে জানতে পারছেন, এর চেয়ে আনন্দের কী হতে পারে!’

মহেন্দ্রনাথের চোখে
‘কলিকাতা বা বাংলাদেশে যে নরেন্দ্রনাথ ছিলেন, সে লোক আর তখন নন; তিনি স্বতন্ত্র এক ব্যক্তি হইয়াছেন।’ লন্ডনে বিবেকানন্দকে দেখার পর লিখছেন মহেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৬৯-১৯৫৬)। ১৮৯৬-এ লন্ডনে গেলেও দাদা বিবেকানন্দ বারণ করায় আইন পড়া হয়নি মহেন্দ্রনাথের। সে সময় স্বামীজি আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডে এসে কিছু দিন ছিলেন। মহেন্দ্রনাথ নানা দেশ ঘুরে ১৯০২-এ কলকাতায় ফেরেন, প্রায় তিরিশ বছর পর লেখেন লন্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ বইটি। এ বই স্বামীজির লন্ডনবাসের খুঁটিনাটি বিবরণ। মহেন্দ্রনাথের দেখার চোখ ছিল অসামান্য, তাই তাঁর লেখা এমন অনেক তথ্য জানায় যা অন্যত্র দুর্লভ। তিন খণ্ডের বইটি এ বার অখণ্ড সংস্করণে সুলভ করেছে মহেন্দ্র পাবলিশিং কমিটি (১৫০.০০)। ৩৬/৭ সাহিত্য পরিষদ স্ট্রিটের ‘মহেন্দ্র প্রজ্ঞাপীঠ’-এ ২৯ অগস্ট মহেন্দ্রনাথের ১৪৫তম জন্মতিথি পালিত হবে, আর ২৮ অগস্ট পালিত হবে তাঁর ছোট ভাই, বিপ্লবী ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের জন্মতিথি।

নতুন নাটক
১৯৭২-এ ‘চাকভাঙা মধু’। সাড়া ফেলেছিল মনোজ মিত্রের সেই নাটক। অনেকেই চেয়েছিলেন নাটকটি করতে— শেষ পর্যন্ত তা যায় থিয়েটার ওয়ার্কশপ-এর নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তীর হাতে। একক নির্দেশক হিসেবে বিভাসের দ্বিতীয় প্রযোজনা, ১৯৭১-এ মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের ‘রাজরক্ত’-র পর-পরই। সেই থেকে মনোজ মিত্রের সবচেয়ে বেশি নাটক বোধহয় বিভাসই মঞ্চস্থ করেছেন, অবশ্যই মনোজবাবু নিজে ছাড়া। ২০০০-এ তাঁর ‘নাকছাবিটা’, বিভাসের নির্দেশনায় ‘অন্য থিয়েটার’ অভিনয় করেছে গত বছরের শেষ অবধি। ২০১৩-য় এসে ‘ছোট ছোট বাড়ি’। মধুসূদন মঞ্চে ‘অন্য থিয়েটার’-এর নবতম প্রযোজনাটির প্রথম অভিনয় সেপ্টেম্বরের প্রথম সন্ধ্যায়। নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তীর কথায়, এটি একটি আতঙ্কের নাটক, সমাজের ধারাবাহিক অধঃপতনের অনিবার্য পরিণতি। কিন্তু শত ভয় ও প্রলোভনের মাঝেও নিজেদের ছোট ছোট স্বপ্নের বাড়িগুলি আগলে রাখছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলারা।

জার্নি
মাতৃজঠর থেকে বেরোনোর পর প্রথম কান্না বা মৃত্যুপথযাত্রীর যন্ত্রণা— সমস্যা সর্বত্রই। সমস্যা থাকবেই, সমস্যাকে জয় করতে পারাটাই আসল কথা। এই ভাবনাকে আশ্রয় করে শিল্পী স্মৃতি লালা’র নিবেদন ‘জার্নি’, ৩১ অগস্ট জি ডি বিড়লা সভাঘরে সন্ধে ছ’টায়। এই সঙ্গীত শিল্পীর কথায় ‘এই প্রজন্মকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাই। মনে হয় সামনের দিনগুলি সমস্যাবহুল। আমাদের কিছু করা দরকার। আমার অস্ত্র মিউজিক।’ এ অনুষ্ঠানে তার মাধ্যমেই সমস্যাকে দূরে রাখার কথা বলবেন তিনি। আয়োজনে রাগ-অনুরাগ মিউজিক রিসার্চ আকাদেমি।

সংগীত ও চলচ্চিত্র
নিঃশব্দ ছবির সঙ্গে পিয়ানো বাজাবেন নিকোলা ম্যের আর সোপ্রানো পেশ করবেন ওরেলি বার্বেল্যঁ। ফ্রিৎজ্ ল্যাং-এর (১৮৯০-১৯৭৬) ছবি ‘ডঃ ম্যাবিউস, দ্য গ্যাম্বলার’-এর প্রথম পর্ব। ১৯২২-এর এই ‘নির্বাক’ ফিল্মে উঠে এসেছিল তৎকালীন জার্মান সমাজের ক্ষয়-দুর্নীতি-ক্ষমতা-পতনের চিহ্ন, ‘এক্সপ্রেশনিস্ট’ রীতির পরিচালক ছিলেন ল্যাং। ২৭ অগস্ট সন্ধে সাড়ে ছ’টায় ম্যাক্সমুলার ভবনে এই সংগীত-সিনেমার মেলবন্ধন শুরু হচ্ছে: ‘ফ্রাঙ্কো-জার্মান থ্রিলার্স: আ জার্নি ইন টাইম’। ২৯, ৩০-এ উৎসবের অন্য ছবি এসআরএফটিআই প্রেক্ষাগৃহে। যৌথ উদ্যোগে আলিয়ঁস ফ্রঁস্যাজ, গ্যেটে ইনস্টিটিউট ও ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস। ফিল্মস ডিভিশনের সহায়তায় ‘দ্য এফডি জোন @ কলকাতা’ চালু করছে সিনে সেন্ট্রাল, ২৯ অগস্ট নন্দনে সন্ধে ছ’টায়, আছে বিধু বিনোদ চোপড়ার ‘অ্যান এনকাউন্টার উইথ দ্য ফেসেস’ ও সৌরভ ষড়ঙ্গীর ‘বিলাল’। প্রতি মাসে তথ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি দেখানো হবে এই ব্যানারে, সঙ্গে চলচ্চিত্রকার ও দর্শকের কথা। কিউবার অভ্যুত্থানের ষাট বছর উপলক্ষে দু’টি ছবি দেখানো হচ্ছে নন্দনে, আজ সাড়ে চারটে থেকে, সিনে সেন্ট্রালের উদ্যোগে।

তাসের দেশ
‘যে সমস্ত নারী ও পুরুষ এই পাসপোর্ট বহন করছেন, স্বাধীন তাসের দেশের স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে তাঁদের মুক্ত ও নতুন তাসের দেশে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’ ‘পাসপোর্ট’-এর ধাঁচে একটি পুস্তিকা, প্রত্যেক পাতায় হরতনের আকারে অঙ্গুলিছাপ এবং শেষে নিয়মাবলির জায়গায় লেখা: ‘আপনাকে তাসের দেশ থেকে বের করে দিলেও তাসের দেশকে আপনার মন থেকে বের করে দেওয়া যায় না’। এর সঙ্গে আছে বোর্ডিং পাসও। এই পুরো প্যাকেজটিই কিউ পরিচালিত ‘তাসের দেশ’ ছবির প্রিমিয়ারের আমন্ত্রণপত্র। শুক্রবার প্রিয়া সিনেমাহলে ছিল প্রিমিয়ার।

কারির কারিকুরি
পরশুরামের উলট-পুরাণের কল্পনা মিথ্যে ছিল না। আলুনি, আধসেদ্ধ স্বাস্থ্যকর খানা ফেলে সাহেব-মেমরা এখন আকছার বলেন, লেট্স গো ফর আ কারি। উপমহাদেশ-প্রভাবিত এমন এক ঝাঁক ব্রিটিশ রান্না এ বার কলকাতায়। উদ্যোক্তা বিলেতের ‘কারি লাইফ’ পত্রিকা। তার কর্ণধার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি দু’ভাই নাভেদ পাশা, বিলাল আহমেদদের সগর্ব দাবি, “কারি এখন স্ট্রবেরি জ্যাম বা ফিশ অ্যান্ড চিপ্স-এর মতোই খাঁটি ব্রিটিশ।” হায়াত রিজেন্সি-র দ্য ওয়াটারসাইড কাফে-তে এই কারির কারিকুরি চলবে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত।

জননেতা
সতীর্থদের সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন হুগলি জেলার ষোলো বছরের ছাত্রটি। ১৯৩০-এ মেদিনীপুরে পুলিশ হত্যা মামলায় ধরা পড়লেও প্রমাণের অভাবে মুক্তি। কিন্তু অসহযোগ আন্দোলনে ধরা পড়ে বহু দিন জেলে ছিলেন। ১৯৪২-এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আবার জেলে। পুলিশের অত্যাচারে মেরুদণ্ডে আঘাত লাগে, একটি চোখ নষ্ট হয়। ’৪৫-এ ছাড়া পেয়ে পত্রিকা সম্পাদনা শুরু। বহু জনপ্রিয় লেখক, সাংবাদিক ও কবিকে তিনি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। অতুল্য ঘোষের জন্ম ১৯০৪-এর ২৮ অগস্ট। পরবর্তীতে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অন্যতম অগ্রগণ্য নেতা। সত্তর দশকের গোড়ায় রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতি রক্ষায় গড়েন ‘বিধান শিশু উদ্যান’। ১৯৮৬-তে প্রয়াত হন। তাঁর ১১০তম জন্মদিনে, ২৮ অগস্ট বিকেলে ৫৯বি চৌরঙ্গি রোডে সেবাদল কার্যালয়ে উন্মোচিত হবে আবক্ষ মূর্তি, সঙ্গে আলোচনা।

সংগীত-সন্ধ্যা
সংগীতকে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিয়ে যেতে চান গ্রিক পিয়ানো-শিল্পী পানোস কারান। ঘুরেছেন সারা পৃথিবী ‘কিজ অব চেঞ্জ’ শীর্ষক এই সংগীত নিয়ে, বাজিয়েছেন ব্রাজিলের রেন ফরেস্টেও। পানোসের বাজনা এ বার কলকাতায়— আজ সন্ধে ছ’টায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এ। সঙ্গে বাঁশিতে জাখ তারপাগোস ও আনা সিফু। ওঁরা শোনাবেন হান্ডেল, শোপাঁ, ডপলার ও অন্যদের বিখ্যাত সৃজন। পানোস-এর (সঙ্গের ছবি) জন্য একটি বিশেষ পিয়ানোও আনা হচ্ছে। এ ধরনের আরও অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় আছে, জানালেন ভিক্টোরিয়া-র নতুন সেক্রেটারি-কিউরেটর জয়ন্ত সেনগুপ্ত। এ দিকে গত শনিবার ভিক্টোরিয়ার পোর্ট্রেট গ্যালারিতে উদ্বোধন হল ‘ক্যালকাটা কলকাতা: দ্য লাস্ট সিক্সটি ইয়ার্স’ শীর্ষক এক প্রদর্শনী। মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লস আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে মোট ৪৩টি প্যানেলে কলকাতার নানা গল্প। চলবে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সোমবার বাদে রোজ ১০-৫টা। উদ্বোধনে ছিলেন স্বপন চক্রবর্তী, অমিত চৌধুরী ও দেবী কর।

আবার মঞ্চে
প্রতিশ্রুতি যে রাখতে হবে এরূপ প্রতিশ্রুতি তো দেওয়া হয় নাই।’— নব্বই দশকের শেষ দিকে ‘শকুনির পাশা’র বিখ্যাত ডায়ালগ। রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তীর লেখা সেই নাটকে উঠে এসেছিল শকুনির চরিত্রের অন্য দিক। কেন তিনি ভিলেন, সেটিই একাঙ্ক অভিনয়ে তুলে ধরে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বাংলা ছবির অন্যতম ভিলেন চরিত্রাভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব নাটকের দল ‘অন্য ছন্দ’-এর প্রযোজনায়। পরে আরও কিছু নাটক করলেও মাঝে বহু দিন নাটক করেননি। খুব কমই দেখা যেত বড় বা ছোট পর্দায়ও। অভিনয় জীবনের প্রথম দিকে সত্যজিৎ রায়ের ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এ ভিলেন ‘বিকাশ সিংহ’র ভূমিকায় যাঁকে দেখা গিয়েছিল, সেই বিপ্লবেরই বক্তব্য ‘ভিলেন চরিত্রে আর না। তা ছাড়া সে রকম চরিত্র কোথায়? এখানে ভিলেন মানেই মেয়েদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়। ও সব আর ভাল লাগে না। সভ্য-ভদ্র চরিত্রই পছন্দ। তাই কিছু দিন ভাটা পড়েছিল।’ তাই বলে নাটকও বন্ধ? বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের অকপট স্বীকারোক্তি ‘অর্থাভাব’। তবে বহু দিন পর এ বার নতুন নাটক নিয়ে আসছে ‘অন্য ছন্দ’। চিরন্তন চক্রবর্তীর লেখা ‘আবাসন প্রকল্প’ গত কয়েক বছরের প্রস্তুতির ফসল। প্রমোটারি আগ্রাসন নিয়ে গল্প। ‘এই প্রজন্মের দ্বারা কিস্যু হবে না। যা করার, তা পারবে আগামী প্রজন্মই। এটাই দেখিয়েছি নাটকে।’ নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হবে ২৯ অগস্ট সন্ধে ছ’টায় উত্তম মঞ্চে।


রবীন্দ্র চর্চা
রবীন্দ্রনাথকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা শুরু, আজও অক্লান্ত পথিক বাসবী ফ্রেজার। জন্ম পুরুলিয়ায়। মা-বাবা অধ্যাপক। ফলে বাড়িতেই ছিল শিক্ষার পরিবেশ। কার্শিয়াং-এর কনভেন্টের পর লেডি ব্রেবোর্ন ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো। পিএইচ ডি এডিনবরায়। পেয়েছিলেন ইউজিসি-র টিচার্স ফেলোশিপ। পড়িয়েছেন গোখেল কলেজেও। তার সঙ্গে লেখালেখি। অল্প বয়সেই পেয়েছিলেন ‘কমনওয়েলথ স্কলার প্রাইজ’। শিখেছেন কত্থকও। স্কটল্যান্ডে যাওয়ার পর শিল্প ঐতিহাসিক মার্ডো ম্যাকডোনাল্ড ওঁকে উৎসাহিত করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও প্যাট্রিক গেডেস নিয়ে কাজ করতে। সেই শুরু, স্কটিশ ন্যাশনাল লাইব্রেরি থেকে শান্তিনিকেতন— এই নিয়ে কাজ করতে গিয়ে খুলে গেল অনেক দরজা। নেপিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার ফাঁকেই রবীন্দ্রনাটক, গান চর্চা। জোর দিয়েছেন ছোটদের জন্য রবীন্দ্রভাবনায়। ভাবনার সঙ্গী হয়েছেন অধ্যাপক-স্বামী নিল ফ্রেজারও। বর্তমানে বাসবী স্কটিশ সেন্টার অব টেগোর স্টাডিজ-এর যুগ্মাধ্যক্ষ। ২০০৯-এ কলকাতা বইমেলায় উদ্বোধন হয়েছিল ওঁর বই ফ্রম দ্য গঙ্গা টু দ্য টে। ওঁর বিখ্যাত বই আ মিটিং অব টু মাইন্ডস: দ্য টেগোর-গেডেস লেটার বইটি। ও দেশের উওম্যান এমপাওয়ার্ড অ্যাওয়ার্ড-সহ পেয়েছেন বহু পুরস্কার। বর্তমানে অধ্যাপক ইন্দ্রনাথ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করছেন স্কটিশ সেন্টারের অধীনে একটি প্রকল্প ‘আইডিয়াজ অব ইন্ডিয়া’র জন্য। সম্প্রতি ঘুরে গেলেন কলকাতা, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ সভাগৃহে বললেন ‘স্কটল্যান্ডে রবীন্দ্র চর্চা’ নিয়ে। অনেক জরুরি কাজের মধ্যেই ছিল প্রিয় মানুষদের সান্নিধ্য আর বর্ষাভেজা দিনে প্রিয় সর্ষে-ইলিশের স্বাদ!
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.