এক ঝলকে...
পৃথিবী
উদ্বেগপ্রহর
• ওয়াশিংটন ও আম্মান • বারাক ওবামার আট বছরের ‘প্রেসিডেন্ট’ কেরিয়ারের অন্যতম সংকটময় প্রহর কাটছে। প্রতিরক্ষা বিভাগের সব উপদেষ্টাকে নিয়ে ঘন ঘন মিটিং-এ বসছেন, বার বার অতলান্তিকের ও পারে ফোন করছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধান বান-কি মুন-এর সঙ্গেও উদ্বিগ্ন ফোনালাপ চলছে: সিরিয়া নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসতেই হবে, তাঁকেই। মুশকিল হল, সিদ্ধান্ত নিলেই তো কেবল হবে না, গোটা পৃথিবী যেহেতু তাঁর দিকে তাকিয়ে, সিদ্ধান্তটা অন্যান্যদের পছন্দসই-ও হতে হবে। পেন্টাগনের কর্তারা যদিও প্রকাশ্যে কোনও কথাই বলছেন না, তাও ঠারেঠোরে মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট বাশারের দেশ আক্রমণের সম্ভাবনাটাই ঘুরছে তাঁদের মাথায়। কিন্তু সেই আক্রমণের যুক্তিটা কী দেওয়া যাবে, সেটাও তো ভাবতে হবে! এ তো কেবল সামরিক সিদ্ধান্ত নয়, কঠিন কূটনীতির সিদ্ধান্ত। পূর্বদৃষ্টান্ত আছে তো?
কূটনীতিকরা বলছেন, হ্যাঁ, আছে, সাম্প্রতিক অতীতেই। যার নাম বসনিয়া। বসনিয়াতে প্রবল সংঘর্ষের মধ্যে নেটো-বাহিনী যেমন ‘অবশেষে’ ঢুকেছিল, সমালোচনার ঝড় তো ওঠেইনি, বরং কেন এত দেরিতে প্রবেশ, এই প্রশ্নই উঠেছিল, সিরিয়ার ক্ষেত্রেও নাকি সেটাই পথ।
এ দিকে সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাসের প্রকোপে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর ছবি, চাদরে মোড়া ছোট ছোট শিশুদেহের ছবি যে-ই না ছড়িয়ে পড়েছে তাবৎ প্রচারমাধ্যমে, বড় পশ্চিমি দেশগুলির পাশাপাশি তুরস্ক বা ইজরায়েল, কিংবা জর্ডনের মতো ছোট দেশও হইচই শুরু করেছে। সঙ্গের ছবিটি জর্ডনের রাজধানী আম্মানে সিরিয়া-বিরোধী গণ-মিছিলের। সিরিয়া থেকে পলাতকের সংখ্যা প্রতি দিন বাড়ছে। পলাতক সিরীয় শিশুর সংখ্যা নাকি মিলিয়ন অর্থাৎ দশ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে গত সপ্তাহে, জানাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

বোরখার বিচার
• লন্ডন • ফ্রান্সের পর ইংল্যান্ডেও? লন্ডনের খবর, আদালতে এক বোরখা-পরিহিত মুসলিম মহিলাকে এক ব্রিটিশ বিচারক পিটার মারফি বলেছেন, বোরখা খুলে আদালতের মধ্যেই মুখখানি দেখাতে হবে। বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষ বিচারের নীতি সবার ঊর্ধ্বে: আইডেন্টিটির রাজনীতি বা নীতি দিয়ে সেই বিচারের নীতি কলুষিত করা যাবে না। বিচারক যদি অভিযোগকারীকে ঠিকমতো চিহ্নিতই না করতে পারেন, সুবিচার করা যাবে কী করে?
মোক্ষম যুক্তি। তবে কি না, ব্রিটিশ রাষ্ট্রিক ঐতিহ্য মহা বিপদে। যে বহুসংস্কৃতির ধ্বজা তারা গর্বের সঙ্গে তুলে ধরে, তার সঙ্গে এর একটা বিরোধ আছে, বলাই বাহুল্য। আবার এও ঠিক, মারফির যুক্তিও হালকা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা মানলে নিরপেক্ষ ভাবেই সব ধর্মকে আদালতের চত্বরে সম ভাবে বিবেচনা করাই দস্তুর। নিশ্চয়ই। তবে? ফ্রান্স অনেক দিন আগেই এই সংকটে পড়ে বোরখা নিষিদ্ধ করার পথে হেঁটেছে। দুনিয়াময় অনেক গালিও খেয়েছে তার জন্য। এ বার ব্রিটেনের পালা। দেখা যাক, এই বিতর্কের জল কদ্দূর গড়ায়!

নজরবন্দি
বেলজিয়ামে তাঁর নতুন বাড়ির ‘গৃহপ্রবেশ’। ২০০ অতিথির জন্য বিপুল বারবিকিউ-এর ব্যবস্থা। কিন্তু যে কারণে এই নতুন বাড়ি কেনা, সেই কারণটিকে ফের নতুন করে নাড়াচাড়া করতে নারাজ ফরাসি (নাকি, প্রাক্তন ফরাসি, বর্তমানে রুশ?) অভিনেতা জেরার দের্পাদু। গত বছর তিনি ফ্রান্সের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। ফ্রাসোঁয়া ওলাদঁ-এর সরকারের কর-নীতির প্রতিবাদে। সমাজতন্ত্রী ওলাদঁ ক্ষমতায় এসেই বিত্তবানদের জন্য করের হার বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বাৎসরিক আয় দশ লক্ষ ইউরোর বেশি হলে সেই বাড়তি অংশটুকুর ওপর করের হার ৪১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করে দিয়েছিলেন ৭৫ শতাংশ। এই সিদ্ধান্তের পরেই ফ্রান্স থেকে বেশ কিছু বিত্তবান পাততাড়ি গোটান, কিন্তু সবচেয়ে হইচই হয়েছিল দেপার্দুকে নিয়েই। কারণ, তিনি অন্যদের মতো চুপচাপ কেটে পড়েননি। রীতিমত ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর সিদ্ধান্ত সরকারের কর-নীতির প্রতিবাদেই। বলেছিলেন, তাঁর মতো বিত্তশালী মানুষের থাকার পক্ষে ফ্রান্স আর মোটেই আদর্শ দেশ নয়। বেলজিয়ামে বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত করেন তিনি। রাশিয়া প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নাগরিকত্ব দেয়। একদা কমিউনিজমের মাতৃভূমি রাশিয়ায় করের হার সবার জন্য সমান— ১৩ শতাংশ।
এখন অবশ্য পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে নারাজ দেপার্দু। বলেছেন, আমি কখনও ফ্রান্স ত্যাগ করিনি। আমি শুধু সীমান্তের কাঁটাতারে আটকে থাকতে অস্বীকার করেছি। গোটা ইউরোপই আমার দেশ। আমি যে কোনও দেশেই স্বচ্ছন্দ। আর, ফ্রান্সকে আগে যতটা ভালবাসতাম, এখনও ততটাই ভালবাসি। এই গ্রীষ্মে ফ্রান্সে শুটিং করতেও গিয়েছিলেন তিনি। তা হলে কি ‘অল ইজ ওয়েল’? মোটেই না। ওলাদঁ-এর সরকারের ওপর তাঁর এখনও যথেষ্ট অভক্তি। সাক্ষাৎকারে দেপার্দু বলেছেন, ফ্রান্সে সব ঠিকঠাক চলছে বলে দাবি করলে সেটা ভণ্ডামি হবে। রাজনীতিকরা মুখে যা বলছেন, আর কাজে যা করছেন, আশা করি মানুষ তার মধ্যের ফারাকটা স্পষ্ট বুঝতে পারছে। আগামী নির্বাচনে তার ফল টের পাওয়া যেতে পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.