হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিবারের লোকদের বিরুদ্ধে। সোমবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতালের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম দুলাল সাহা (৪৯)। বাড়ি প্রধাননগরের বাঘা যতীন কলোনিতে। হাপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে চিকিত্সার জন্য জরুরি বিভাগে আনেন পরিবারের লোকেরা। চিকিত্সক তাঁকে দেখে মৃত বলে জানিয়ে দেন। তার পরেও রোগীকে ঠিক মতো দেখা হচ্ছে না বলে পরিবারের লোকেরা দায়িত্বে থাকা চিকিত্সক তাপস কুমার দাসকে জোর করতে থাকেন। পরে মৃতের শংসাপত্র দিতে বলেন। তিনি বোঝাতে চেষ্টা করলে তাঁকে ধাক্কা দেন কয়েকজন। জরুরি বিভাগের টেবল ফেলে, জানলার কাঁচ ভেঙে রোগীর লোকেরা হইচই শুরু করে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা বাধা দেন। পরে হাসপাতালের ক্যাম্প থেকে পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। |
মৃত অবস্থায় রোগীকে আনা হয়েছে বলে নিয়ম মাফিক পুলিশকে জানিয়ে রাতে মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে পরিবারের লোকেরা মৃতদেহ আনতে গেলে ফের গোলমাল বাঁধে। রোগীর ভাইপো সায়ন্তন সাহা বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। চিকিত্সককে কোনও রকম মারধর করা হয়নি। কাকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে নামমাত্র দেখে ওই চিকিত্সক জানিয়ে দেন রোগী মারা গিয়েছে। তাঁকে ভাল মতো দেখতে অনুরোধ করা হয়। তিনি তা শুনতে চাননি। তা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে।” কারা ভাঙচুর করেছে তা তিনি বলতে পারবেন না বলে দাবি করেছেন।
তাপসবাবু বলেন, “নিয়মমতো মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সুপারিশ করে স্থানীয় থানাকে জানানো হয়েছে। এর পর বাকি কাজ পুলিশই করবে। অথচ তা না বুঝে শংসাপত্র দেওয়ার জন্য জোরজার করেন। রোগীকে ঠিক মতো দেখা হয়নি বলে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সমস্ত জানিয়েছি।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদার জানান, ওই চিকিত্সককে শারীরিক এবং মানসিক হেনস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
হাসপাতালের ভিতরে এ ভাবে হামলার ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন অন্যান্য চিকিত্সকদের একাংশ। হাসপাতালের চিকিত্সক রাজর্ষি গুহ, কল্যাণ মণ্ডলদের অভিযোগ, এটা এক দিনের ব্যাপার নয়। প্রায়ই রাতবিরেতে রোগীর পরিজনেরা দল বেঁধে ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। হাসপাতালে যে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে সেখানকার কর্মীরা সক্রিয় নন। ডাকলেও সময় মতো পাওয়া যায় না। কিছু ঘটে যাওয়ার পর তাঁরা আসেন। কর্মী সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। রাজর্ষিবাবু বলেন, “আমরা চিকিত্সকরা এ কারণে নিরাপত্তার অভাব বোধ করি। রাতে অনেক চিকিত্সক, স্বাস্থ্য কর্মীর এ সবের জন্য কাজ করতে চান না।” |