|
|
|
|
বস মাঝিরে বল না কোথায় |
‘বস’-ম্যানিয়া এখন চারিদিকে। বক্স অফিস কালেকশন নিয়ে কিন্তু বিতর্ক তুঙ্গে।
টালিগঞ্জের অনেক সমীকরণও বদলানোর মুখে। লিখছেন ইন্দ্রনীল রায় |
ভরদুপুর। ৯ অগস্ট, ২০১৩।
পিয়ারলেস ইন-য়ের রুম নম্বর ৫০৯ থেকে রুম সার্ভিসে ফোন করে ভাত, মুসুরির ডাল, আলু ভাতে আর পোস্ত অর্ডার করলেন সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
রিসিভারটা নামিয়ে কলেজ স্ট্রিট থেকে স্ত্রী চন্দ্রাণীর সদ্য কিনে আনা সত্যজিৎ রায়, লীলা মজুমদার, আশাপূর্ণা দেবীর বইগুলো উলটে-পালটে দেখলেন। “খাবার খেয়েই ওই বইগুলো পড়বার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কিছুতেই মন বসছিল না। সে দিন ‘বস’য়ের রিলিজ। অসম্ভব টেনশন। ঘুমোবার চেষ্টা যে করিনি তা নয়। কিন্তু পারলাম না। বিকেলে জিতের ভাই গোপাল ফোন করে বলল, ‘জিৎদা, ছবি ধরে গিয়েছে।’ ব্যস। উফফফফ, বাঁচলাম যেন,” এক নিশ্বাসে বলেন সঙ্গীত পরিচালক জিৎ।
সে দিন শহরের অন্যপ্রান্তে ছবির নায়ক জিৎ তখন সবে আলিপুরের বাড়ি থেকে লেক রোডের অফিসে পৌঁছেছেন।
সকালে কালীঘাট আর দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিয়ে বাড়ি ফিরে কন্যা নবন্যার সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা খেলা করে একটু ঘুমিয়েছেন।
“আগের দিন ক্লোজ ডোর স্ক্রিনিং হয়েছে। এক ঘণ্টার বেশি রাতে ঘুমোইনি। অফিসে পৌঁছে চুপচাপ বসেছিলাম। বিকেল থেকে ফোন আসা শুরু হয়। ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিলাম মানুষের ভাল লেগে গিয়েছে ছবি। তবে যতই ‘চিলড আউট’ থাকার চেষ্টা করি না কেন একটা টেনশন তো ছিলই। কিন্তু আমরা সব সময়ই খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ছবিটা নিয়ে,” মুম্বই থেকে জানালেন জিৎ।
মঙ্গলবার রাতেই স্ত্রী মোহনা আর কন্যা নবন্যাকে নিয়ে কলকাতায় ফিরেছেন। মুম্বইতে প্রিমিয়ার ছিল, তা অ্যাটেন্ড করে ছোট ছুটি কাটালেন জিৎ। সঙ্গীত পরিচালক জিতের বাড়িতে বিরিয়ানি পার্টিও করলেন। |
|
জিৎ-শুভশ্রী |
আর পার্টি করবেন না-ই বা কেন? এখন অবধি এই বছরে, বাংলা ছবির বাজারে সব চেয়ে বড় হিট জিৎ-শুভশ্রী অভিনীত ‘বস’।
শহর থেকে শহরতলি, সর্বত্র থিম মিউজিকের মতো বাজছে, ‘হি ইজ দ্য বস বস বস বস বস’ গানটি। অরিজিৎ সিংহের গাওয়া ‘মন মাঝি রে’ এখন বহু মানুষের কলারটিউন। ‘বস’য়ের এই সাফল্যের হাত ধরে অবশ্য ২০১৩র টলিগঞ্জে সাত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও নেপথ্যে ঘটে গিয়েছে।
সেগুলো কী?
প্রথমত, জিৎ আবার বাণিজ্যিক বাংলা ছবির বাজারে দেবকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন।
দ্বিতীয়ত, এই ছবির মাধ্যমে টলিউড পেয়ে গেল আর এক নতুন জুটি, জিৎ-শুভশ্রী। এই ছবির পর জিৎ-শুভশ্রীকে মাথায় রেখে এখন থেকেই প্রযোজকরা গল্প ভাবা শুরু করে দিয়েছেন।
তৃতীয়ত, ‘ঝিঙ্কু নাকুর’ আর বাকি দু’টো গান দিয়ে রাজকীয় কাম ব্যাক করলেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
চতুর্থ, পরিচালক হিসেবে বাবা যাদব নেমেই সেঞ্চুরি করলেন। এত দিন কোরিওগ্রাফার হিসেবে নাম ছিল তাঁর। প্রথম ছবিতেই পরিচালক হিসেবে দাগ কাটলেন।
পঞ্চম, সংলাপ যে একটা ছবিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তা বেশ কিছু দিন পরে আবার প্রমাণ করলেন এন কে সলিল।
ষষ্ঠ, শহুরে মাল্টিপ্লেক্সের ছবি তার জায়গায় থাকবে, কিন্তু টাকার অঙ্ক মানে ‘বিগ নাম্বারস’ কিন্তু সেই বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতেই রয়েছে।
এবং সপ্তম, এই ছবি দিয়ে প্রযোজক রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্ট বুঝিয়ে দিল, তারা টলিউডে লম্বা ইনিংস খেলতেই এসেছেন।
শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সঙ্গে টক্কর দিতে পারে যে রিলায়্যান্সই, এই গুঞ্জনও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে টলিউডে। এমনকী ‘বস’য়ের সাফল্য যদি শুধুমাত্র ‘নম্বর’ দিয়ে দেখা হয়, তা হলে ১৯৯ হল-য়ে মুক্তি পাওয়া ‘বস’য়ের প্রথম সপ্তাহের হিসেবটা এই রকম দাঁড়ায়:
রিলিজের দিন- ৭২ লক্ষ; শনিবার- ৫৮ লক্ষ; রবিবার- ৫৬ লক্ষ
প্রথম উইকএন্ড- ১ কোটি ৮৬ লক্ষ
সোমবার- ৪০ লক্ষ; মঙ্গলবার- ৩০ লক্ষ; বুধবার- ২৪ লক্ষ; বৃহস্পতিবার(১৫ অগস্ট)- ৪০ লক্ষ
এক সপ্তাহে মোট ৩ কোটি ২০ লক্ষ।
তবে ‘বস’য়ের দিনপ্রতি বক্স অফিস কালেকশন নিয়েও এখন তোলপাড় টলিউড। প্রযোজক রিলায়্যান্স এবং অভিনেতা জিতের ‘এটাই সর্বকালের সব চেয়ে বেশি প্রথম সপ্তাহের কালেকশন’ দাবি নিয়েও স্পষ্ট বিভাজন টলিউডে।
রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্ট অবশ্য এই দাবিতে অনড় থাকছে যে, বাংলা ছবির ইতিহাসে প্রথম এক সপ্তাহের হিসেবে সবার উপরে রয়েছে জিতের ‘বস’। “অবশ্যই এটা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে সব চেয়ে ভাল খবর। বোঝাই যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি ক্রমশ বাড়ছে। আর আমরা যে বক্স অফিস কালেকশন বলছি, তা পুরোপুরি স্বচ্ছ। ট্র্যান্সপারেন্ট। আজকে যদি আপনি বলিউডের দিকে তাকান, সেখানেও দেখবেন ইউটিভি হোক, কী রিলায়্যান্স হোক, কী ভায়াকম হোক বা যশরাজ সবার ছবি রিলিজ করার দিন থেকেই, থিয়েটার ওয়াইজ কালেকশন আমরা সবাই জেনে যাই। কোন শহরে, কোন সিনেমা হলে, কোন শো-তে কে কত টাকা কামালো আজকে জানাটা কোনও ব্যাপার নয়। এই স্বচ্ছতাটাই আমরা বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়ে এলাম ‘বস’য়ের মাধ্যমে। সব দেখেশুনেই বলছি, ‘বস’য়ের থেকে বেশি ব্যবসা প্রথম সপ্তাহে কোনও বাংলা ছবি করেনি,” রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্টের তরফে জানাচ্ছেন শিবাশিস সরকার।
কলকাতায় বাকি প্রযোজকদের দেওয়া সংখ্যা যে অনেক সময়ই ঠিক থাকে না, সেটাও স্পষ্ট করেই বলছেন শিবাশিস। “রিলায়্যান্সের মতো, কলকাতার কোনও প্রযোজক এত স্বচ্ছ বক্স অফিস কালেকশন আজ পর্যন্ত দিতে পারেননি।”
কার বক্স অফিস কালেকশন কতটা স্বচ্ছ, তা নিয়ে ভাবতে চান না অভিনেতা জিৎ। এই ছবি করে তিনিই যে এখন বক্স অফিসের শীষের্, মানছেন অনেকেই। যদিও জিৎ বিশেষ কিছু বলতে চান না। “দেখুন, সাফল্য আমি আগেও দেখেছি। ‘আওয়ারা’ হোক, ‘দিওয়ানা’ হোক বা ‘সাথী’ তাই বক্স অফিসের সাফল্য নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এগুলো প্রত্যেক শুক্রবার পালটায়। আমি যেটা নিয়ে খুশি, তা হল ছবির রিপোর্ট। মানুষের ছবিটা ভাল লেগেছে। এই রিপোর্টটা আমার কাছে ট্রেড ফিগারের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ,” বলছেন জিৎ। ‘বস’য়ের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে তিনি যে আবার চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন দেবকে, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চান না ‘বস’। “আমাকে এ সবের মধ্যে জড়াবেন না প্লিজ। এটুকুই বলব, আমি এখন সামনের দিকে তাকাতে চাই।”
স্ত্রী মোহনা কী বলল? “মোহনা খুব খুশি। এই তো মোহনা, নবন্যাকে নিয়ে আমরা সবাই মুম্বই গিয়েছিলাম। মোহনার ছবিটা খুব ভাল লেগেছে। অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন, আমি এর পরে কোনও ছুটিতে যাব কি না? তাঁদের বলি, এখন কলকাতাতেই আছি। মা-বাবা, ভাই, বৌদি সবার সঙ্গে এ বার একটু সময় কাটাব। আগামী কয়েক মাস সে রকম কাজের চাপ নেই,” বলছেন জিৎ।
সব চেয়ে ভাল প্রতিক্রিয়া কার কাছ থেকে পেলেন? “অনেকের কাছ থেকেই দারুণ সব মেসেজ পেয়েছি। তবে সব চেয়ে ভাল লেগেছে যখন দেখেছি ‘ঝিঙ্কু নাকুর’ বাজার সঙ্গে সঙ্গে নবন্যা নাচছে। দ্যাট ওয়াজ আ মেমোরেবল মোমেন্ট,” বেশ আবেগপ্রবণ হয়েই বলেন বাবা জিৎ।
বক্স অফিস সাফল্য ছাড়াও, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে ‘বস’য়ের রিলিজের সাথে।
প্রসঙ্গত, মুম্বইতে ছবি রিলিজ করার পর থেকেই, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ তরণ আদর্শ কোন ছবি কত টাকা কামালো তা নিয়ে টুইট করে থাকেন। অনেক সময় তাঁর টুইট নিয়ে প্রযোজকদের আপত্তি থাকলেও, বলিউড মনে করে তরণ সঠিক সংখ্যাটাই লেখেন। ‘বস’য়ের রিলিজের পর, এই প্রথম তিনি কোনও বাংলা ছবি নিয়ে টুইট করলেন। তা নিয়েও নড়েচড়ে বসেছে টলিউড। |
|
“দেখুন, তরণ একজন সক্রিয় মিডিয়া অ্যানালিস্ট। আমরা ওঁকে ‘বস’য়ের বক্স অফিস কালেকশন জানিয়েছিলাম। তাই উনি টুইট করেছেন। এগুলো দেখেই বোঝা যায় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কী ভাবে জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে,” বলছেন শিবাশিস।
তরণ নিজেও খুশি বাংলা ছবির বক্স অফিস কালেকশন নিয়ে টুইট করে। “আমাকে রিলায়্যান্স রিকোয়েস্ট করেছিল। ওরাই আমাকে জানায়, ‘বস’য়ের প্রথম উইকএন্ড কালেকশন বাংলা ছবির ক্ষেত্রে রেকর্ড, তাই আমি টুইট করেছিলাম। কাল অন্যরাও তাদের কালেকশন পাঠালে, সেটাও টুইট করতে পারি,” বলছেন তরণ।
তবে ৩ কোটি ২০ লক্ষ সংখ্যাটা নিয়ে টালিগঞ্জের প্রথম সারির প্রযোজকরা প্রায় সবাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন। অশোক ধানুকা, নিসপাল সিংহ রানে আর শ্রীকান্ত মোহতা তিন জনই স্বীকার করছেন ৩.২০ কোটি সংখ্যাটা সঠিক, কিন্তু রিলায়্যান্সের দাবি অনুযায়ী এটাই যে প্রথম সপ্তাহের সব চেয়ে বেশি কালেকশন, সেটা ঠিক নয়।
“জিতের জন্য আমি খুশি যে, ওর ছবি হিট করল। কিন্তু এটুকুই বলব, প্রথম সপ্তাহে দেবের ‘রোমিও’ ৩.৬২ কোটির ব্যবসা করেছিল,” জানাচ্ছেন কোয়েলের স্বামী নিসপাল সিংহ রানে।
একই বক্তব্য প্রযোজক অশোক ধানুকার। “প্রথমেই আমি রিলায়্যান্সকে কনগ্র্যাচুলেট করছি। ইন্ডাস্ট্রিতে ওদের মতো প্রোডিউসর এলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিই বেড়ে উঠবে। ওরা যে দাবি করছে, প্রথম সপ্তাহেই ‘বস’ ৩.২০ কোটির ব্যবসা করেছে, সেটা ঠিক। কিন্তু প্রথম সপ্তাহে এটাই বাংলা ছবির সব থেকে বেশি কালেকশন, সেই তথ্য ঠিক নয়। নিসপালের ‘পাগলু’, আমার ‘খোকা ৪২০’, শ্রীকান্তের ‘চ্যালেঞ্জ ২’ এই তিনটে ছবিরই কালেকশন প্রথম সপ্তাহে ৩.২০ কোটির বেশি ছিল। আর ভুলে যাবেন না, ‘পাগলু’ কী ‘চ্যালেঞ্জ’য়ের সময় টিকিটের দামও অনেক কম ছিল,” বলছেন অশোক ধানুকা।
কিন্তু রিলায়্যান্স যে দাবি করছে তাদের মতো স্বচ্ছ পরিসংখ্যান কেউ দিতে পারে না। সে বিষয়ে কী বলছেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্ত মোহতা।
“দেখুন, সারা জীবন এত ছবি বানালাম, ট্রান্সপ্যারেন্ট ফিগার না দিলে নিশ্চয়ই এত ছবি বানাতে পারতাম না। আমি রিলায়্যান্স আর জিৎকে অভিনন্দন জানাচ্ছি ‘বস’য়ের জন্য। কিন্তু ‘চ্যালেঞ্জ ২’ ৩.৮০ কোটি আর ‘পাগলু’ ৩.৬২ কোটির ব্যবসা করেছিল প্রথম সপ্তাহে। এই দু’টো ছবির কালেকশন ‘বস’য়ের প্রথম সপ্তাহের কালেকশনের থেকে বেশি তো বটেই। ‘দুই পৃথিবী’ও প্রথম সপ্তাহে ৩.২০ কোটির বেশি ছিল। আর ছবি তো হিট হয় দ্বিতীয় সপ্তাহে। দেখি না তখন কী হয়?” বলছেন শ্রীকান্ত। ভেঙ্কটেশের মহেন্দ্র সোনি অবশ্য আরও এক ধাপ এগিয়ে বলছেন, রিলায়্যান্সের মতো তাদেরও বক্স অফিস ফিগার দেখাতে কোনও আপত্তি নেই।
“আরে যে যা ইচ্ছে ফিগার দিলেই, তা বিশ্বাস করতে হবে না কি? কেউ চাইলে আমরাও ট্রেড ফিগার দেখিয়ে দেব। সেই ফিগার দেখালেই তো মানুষ বুঝে যাবেন কে সত্যি বলছে, কে মিথ্যে। আর আমি তো রানা সরকারকে ইনভিটিশন পাঠিয়েছি। যে কোনও দিন অফিসে এসে রানা আমাদের ছবির বক্স অফিস কালেকশন দেখে যেতে পারে,” বলছেন মণি।
‘বস’য়ের সাফল্য যে টালিগঞ্জের অনেক হিসেব পালটে দিয়েছে, তা স্পষ্ট প্রযোজক রানা সরকারের কথায়।
“বাংলা সিনেমার প্রযোজকদের একটা অহেতুক প্রবণতা হল, সেলস ফিগার বাড়িয়ে বলা। এর কারণ বুঝি না। এতে আমাদের এক পয়সা লাভ হয় না, বরং মিথ্যা প্রচারে দর্শক বিভ্রান্ত হয়। হলে গিয়ে তারা দেখে পনেরো জন দর্শক। অথচ প্রযোজক বলছে ব্লকবাস্টার। তাই রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্ট যে ভাবে ট্রেন্ড সেট করল, তাতে এ বার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ঘোষিত সেলস ফিগার প্রমাণ করার চাপ বাড়ল। এখন দেখার অপেক্ষা, সত্য প্রমাণ করার সাহস বা দুঃসাহস কে দেখাতে পারে? তবে এই আলোচনা, চাপানউতোর একটাই জিনিস প্রমাণ করে, সেলস ফিগার উনিশ-বিশ হলেও, বাংলা সিনেমার বাজার দিন-দিন বাড়ছে,” বলছেন রানা।
শেষে একটা কথাই বলা যায় , ‘বস’য়ের সাফল্য এখন পুরো টলিউডকেই দু ভাগে ভাগ করে দিয়েছে।
সব চেয়ে গুরুত্বর্পূণ, ‘বস’য়ের হিট হওয়াতে টালিগঞ্জের বহু সমীকরণও এ বার বদলানোর মুখে।
উঠছে দু’টো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও।
প্রথমত, জিৎ না দেব? কে হবেন বক্স অফিসের রাজা, সেই দিকে নজর থাকবে সবার।
দ্বিতীয়ত, কোন প্রযোজক সংস্থার হাতে থাকবে টালিগঞ্জের রাশ ভেঙ্কটেশ না সুরিন্দর ফিল্মস, দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া না এসকে মুভিজ? না কি রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্ট?
কাকে দেখে টলিউড বলে, “হি ইজ দ্য বস”, সেটাই বোধ হয় এখন ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকার চেয়েও দামি প্রশ্ন।
|
|
‘বস’য়ের সুপারহিট হওয়াটা বাংলা ছবির ক্ষেত্রে অসম্ভব ভাল খবর। আর প্রথম সপ্তাহে ‘বস’য়ের থেকে বেশি কালেকশন কিন্তু আজ অবধি কোনও বাংলা ছবির হয়নি
শিবাশিস সরকার,
রিলায়্যান্স এন্টারটেনমেন্ট |
|
আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি রিলায়্যান্সকে । কিন্তু ৩.২০ কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি ব্যবসা করেছিল ‘চ্যালেঞ্জ ২’। আর ছবি তো হিট হয় দ্বিতীয় সপ্তাহে। দেখি তখন কী হয়?
শ্রীকান্ত মোহতা,
ভেঙ্কটেশ ফিল্মস |
|
‘বস’ হিট ঠিকই। তবে প্রথম সপ্তাহে ‘পাগলু’ কী ‘খোকা’র কালেকশন অবশ্যই ‘বস’য়ের থেকে বেশি ছিল
অশোক ধানুকা |
|
জিতের জন্য আমি খুশি। কিন্তু আমার ‘পাগলু’ ছবিটাই জিতের ‘বস’য়ের থেকে বেশি কামিয়েছিল
নিসপাল রানে |
|
|
|
|
|
|