এক ঝলকে...
পৃথিবী
সন্ত্রাসের প্রত্যাবর্তন
• বেইরুট • আশির দশকে বেইরুট বললেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণে দুনিয়া কেঁপে উঠত। লেবাননের রাজধানী তখন আক্ষরিক অর্থেই বারুদের স্তূপ। ১৯৯০ সালে গৃহযুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পর থেকে সেই তাণ্ডব মোটামুটি বন্ধ হয়েছিল। সন্ত্রাস সম্পূর্ণ থামেনি, তবে সেটা প্রধানত বেছে বেছে খুনজখম করার নীতিতেই সীমিত থেকেছে, ২০০৫ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী রফিক আল-হারিরির হত্যাকাণ্ড ছিল সেই ধারাতেই সংঘটিত।
কিন্তু জঙ্গি শিয়া গোষ্ঠী হেজবোল্লা শাসিত লেবাননে সম্ভবত সেই অতীত ফিরে আসছে, যখন যেখানে সেখানে যখন তখন বিস্ফোরণ ঘটত আর তাতে প্রাণ হারাতেন সাধারণ মানুষ। গত মাসে রাজধানী বেইরুটে এক ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ হয়েছিল, ভাগ্যক্রমে কেউ মারা যায়নি। গত বৃহস্পতিবার আবার এক বিস্ফোরণ হল, এ বার জনবহুল বাজার এলাকায়, অন্তত একুশ জন মৃত, অনেকে জখম।
ধরেই নেওয়া হচ্ছে, এর পিছনে আছে তকফিরি অর্থাৎ সুন্নি গোষ্ঠীর জঙ্গিরা, যারা হেজবোল্লার প্রতি ভয়ানক ক্রুদ্ধ। ক্রোধের কারণ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রধানত সুন্নি বিদ্রোহীদের দমনে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে প্রচুর সাহায্য করছেন লেবাননের শাসকরা। হেজবোল্লার নেতা হাসান নাসরাল্লা বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে কড়া হুমকি দিয়েছেন: সুন্নি জঙ্গিরা যদি ভেবে থাকে ভয় দেখিয়ে তাঁদের নিরস্ত করা যাবে, তারা সম্পূর্ণ ভুল ভাবছে; দরকার হলে তিনি গোটা হেজবোল্লাকে নিয়ে সিরিয়ায় লড়াই করতে যাবেন। অনুমান করা যায়, এই হুমকি তাঁর বিরোধী জঙ্গিদের নতুন আক্রমণের পরিকল্পনায় উৎসাহী করবে, নতুন বিস্ফোরণের খবর তৈরি হবে। সন্ত্রাসের বদলে পাল্টা সন্ত্রাস, চোখের বদলে চোখ, প্রাণের বদলে প্রাণ— সেই অনেক কালের চেনা ছক।
ইরাক থেকে সিরিয়া, সিরিয়া থেকে লেবানন, শিয়া-সুন্নি লড়াইয়ের নতুন পর্ব উত্তরোত্তর ছড়িয়ে পড়ছে। তার অসহায় এবং নিরুপায় শিকার নিতান্ত ছা-পোষা মানুষ। বরাবর যেমনটি হয়ে এসেছে।

একটি পাথরের জন্য
• জিব্রল্টার • আয়তনে ২ বর্গমাইলের সামান্য বেশি। আফ্রিকার উপকূল থেকে মাত্র বারো মাইল দূরে, ভূমধ্যসাগরের বুক থেকে উঠে আসা চুনাপাথরের একটি খণ্ড। (রক অব) জিব্রল্টার। চারশো বছর ধরে স্পেন আর ইংল্যান্ডের মধ্যে এই এলাকাটির মালিকানা নিয়ে বিবাদ, কখনও কখনও লড়াই। ভূগোলের বিচারে এটি স্পেনের অঙ্গ, কিন্তু ইতিহাসের কাছে ভূগোল প্রায়শই হার মানে, অতএব জিব্রল্টার ব্রিটেনের অধীন। ব্রিটেনের একটি সামরিক ঘাঁটিও আছে সেখানে। সম্প্রতি লন্ডন আর মাদ্রিদের মধ্যে নতুন মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে। স্পেন জিব্রল্টারে যাওয়ার পথে অনেক বেশি কড়াকড়ি করছে। ব্রিটিশ নাগরিক এবং অন্য পর্যটকদের খুব সমস্যা হচ্ছে সেখানে পৌঁছতে। ইতিহাস কেন বাধ্যতে।

নজরবন্দি
আরও একটি রাস্তার নাম রাখা হল গাঁধীজির নামে। ভারতে নয়, কানাডায়। সে দেশের ম্যানিটোবা প্রদেশের রাজধানী উইনিপেগ শহরে ইয়র্ক অ্যাভিনিউ নামক রাজপথটির একটি অংশের নাম বৃহস্পতিবার ১৫ অগস্ট থেকে হয়ে গেল ‘মহাত্মা গাঁধী ওয়ে’। শহরের মেয়র বললেন, নামটা এই রাস্তার পক্ষে খুব উপযুক্ত বটে, কারণ এই পথ দিয়েই পৌঁছনো যায় কানাডিয়ান মিউজিয়ম অব হিউম্যান রাইটস-এ। এই নামকরণের পিছনে আছে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত মহাত্মা গাঁধী সেন্টার অব কানাডা নামক প্রতিষ্ঠানটি, আর কানাডা তথা উইনিপেগের ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষদের ভূমিকা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
গাঁধীজির নামে রাস্তা আছে আরও অন্তত সাতটি দেশের শহরে। ডারবান ছাড়াও সেই তালিকায় আছে ম্যানিলা, আংকারা, পিসা, তেহরান, প্যারিস। লন্ডন? ছি, অমন কথা মনেও আনতে নেই, চার্চিল দুঃখ পাবেন না? তবে এ ব্যাপারে যে দেশটি আশ্চর্য করে দিতে পারে, তার নাম নেদারল্যান্ডস। একটি হিসেবে সে দেশে গাঁধীজির নামে রাস্তা আছে ঊনত্রিশটি, ভারতের চেয়ে দুটি বেশি। ঠিক সংখ্যা নিয়ে সংশয় থাকতে পারে, কিন্তু সংখ্যাটি যে চমকপ্রদ, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
ভারতেও ঠিক ক’টি রাস্তা এই তালিকায় আছে, বলা খুব সহজ নয়। কে কোথায় কখন কার নামে কোন রাস্তা বা তার ভগ্নাংশের নাম রাখে, তার হিসেব চিত্রগুপ্তও রাখতে পারেন বলে মনে হয় না। এ কালে অবশ্য নামকরণের দৌড়ে পুরনো সর্বভারতীয় নেতারা পিছিয়ে পড়ছেন, এখন ‘পরিচিতির রাজনীতি’র দাপট, ফলে রাস্তায় রাস্তায় স্থানীয় নেতাদের নামে ফলক বসে। কিন্তু স্বাধীনতার পরে পরে গাঁধীজি যা স্কোর করে দিয়ে গিয়েছেন, হারানো কঠিন।
তবে হ্যাঁ, এ দেশে এই ব্যাপারে গাঁধীজির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন যিনি, তাঁর নাম সুভাষচন্দ্র বসু। কংগ্রেসি কূটনীতিতে এঁটে উঠতে পারেননি বটে, কিন্তু রাস্তার লড়াইয়ে বঙ্গসন্তান গুজরাতনন্দনকে মোটেও ওয়াকওভার দেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.