মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনাটা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘বাতিক’। আর্থিক বৃদ্ধি প্রত্যাশা মতো হল কি না-হল, সে দিকে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভ্রূক্ষেপই নেই। অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার কারণে এমন অভিযোগ উঠলেও তা মানতে নারাজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইতিহাস সংক্রান্ত গ্রন্থটির চতুর্থ খণ্ড প্রকাশ উপলক্ষে শনিবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাড়িতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই মনোভাব ‘অসত্য ও অনৈতিক’।
আর্থিক উন্নয়নে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা সম্পর্কে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের মন্তব্যের সূত্র ধরেই বিদায়ী গভর্নর সুব্বারাওয়ের এই মন্তব্য। চিদম্বরম বলেছিলেন, মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানোর দিকেই সম্পূর্ণ নজর না-দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উচিত দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের প্রতিও দৃষ্টি দেওয়া। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি সম্পর্কে এ প্রসঙ্গে বুঝিয়ে বলেন সুব্বারাও। তিনি শীর্ষ ব্যাঙ্কের ৩টি লক্ষ্যের কথা বলেন:
• দ্রব্যমূল্যের লাগামছাড়া বৃদ্ধিতে রাশ টানা।
• আর্থিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
• মুদ্রা জোগানে স্থিতি বজায় রাখা।
|
অর্থমন্ত্রীর নাম সরাসরি না-উল্লেখ করেও সুব্বারাও বলেন, “কেন্দ্র বৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তিত, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে, এমন ধারণা অতি সরলীকরণ ছাড়া আর কিছুই নয়।”
তিনটি লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য রেখে এগিয়ে চলার কঠিন কাজটাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে করতে হয় বলে জানিয়ে দেন সুব্বারাও। তিনি বলেন, “আর্থিক বৃদ্ধির দিকে নজর নেই বলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো নিয়ে অতিরিক্ত ব্যস্ত, এটা ভুল ধরণা। বরং বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত বলেই শীর্ষ ব্যাঙ্ক দ্রব্যমূল্যকে দমিয়ে রাখতে চায়। কারণ মূল্যবৃদ্ধির হার কম ও স্থিতিশীল থাকাই আর্থিক বৃদ্ধির উঁচু হার দীর্ঘ মেয়াদে ধরে রাখার পূর্বশর্ত। ইতিহাস সেই প্রমাণই দেবে।” |