|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
নিছক তথ্যহীন পুনর্মুদ্রণ |
বইপোকা |
ভূত, বর্তমান পার হইয়া ভবিষ্যতে পড়িলেও বঙ্গীয় গ্রন্থপ্রকাশে পরিবর্তন ঘটে না। ইহা পরম আক্ষেপের বিষয়। ১৯৭৭-এ মৃণাল সেনের চলচ্চিত্র: ভূত বর্তমান ভবিষ্যৎ প্রথম প্রকাশিত হইয়াছিল। ৩৫ বৎসর পরে তাহা পুনঃপ্রকাশিত হইল সপ্তর্ষি প্রকাশন হইতে। পুনঃপ্রকাশিত হইল বটে, কিন্তু তাহাকে পুনর্মুদ্রণ বলাই ভাল। কারণ প্রকাশক বদলাইয়া গেলেও গ্রন্থটি সমকালীন হইল না। প্রবন্ধ আর সাক্ষাৎকারকে দুটি ভাগে বিন্যস্ত করা ব্যতীত আর কিছুই নূতন ঘটে নাই এই গ্রন্থে, কেবল কয়েকটি পরিচিতিবিহীন আলোকচিত্র যুক্ত হইয়াছে। সুতরাং সন-তারিখ-অকুস্থল, কোন ছবির শ্যুটিংয়ে গৃহীত, এই সকল জরুরি তথ্য জানিবার কোনও উপায়ও নাই। অথচ গ্রন্থটি মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রচিন্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ আকরগ্রন্থ হইবার সম্ভাবনাবিশিষ্ট। কারণ, যে আটটি প্রবন্ধ এই গ্রন্থে সংকলিত সেগুলি কেবল শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা-জাতীয় রচনা নহে, রীতিমতো নব্বই-ছোঁয়া পরিচালকের চলচ্চিত্র-দর্শন। অথচ প্রাসঙ্গিক তথ্য ত দূরস্থান, প্রবন্ধগুলির রচনাকাল বিষয়েও ন্যূনতম তথ্য এই সপ্তর্ষি সংস্করণে নাই। সাক্ষাৎকার অংশটিতে অবস্থা আরও করুণ। সাক্ষাৎকার কে, কবে গ্রহণ করিয়াছিলেন, তা কোথায় প্রথম প্রকাশিত সে সকল অতি জরুরি তথ্যও অপ্রয়োজনীয় বিবেচনা করিয়াছেন সম্পাদক অথবা প্রকাশক। সুশোভন প্রচ্ছদ, সুরুচিসম্পন্ন মুদ্রণ অপেক্ষাও বেশি জরুরি কিন্তু গ্রন্থের পাঠ্যবস্তু। তাহাকে যথাসম্ভব পূর্ণাঙ্গ, কার্যকরী ও ত্রুটিহীন করায় নিষ্ঠাবান হইলেই মঙ্গল। কারণ গ্রন্থ শেষাবধি চিন্তা-বিনিময়ের মাধ্যম। মাধ্যমের সৌন্দর্য, চমক জরুরি বটে, বিনিময়ের ত্রুটিহীনতা ততোধিক। |
|
|
|
|
|