প্রথমে ছোট ছোট ‘টার্গেট’ ঠিক করে নাও। সেগুলোতে পৌঁছতে পৌঁছতে বড় লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাও দলকে।
না, কোনও ভিডিও গেমসে বাজিমাতের ফর্মুলা নয়। বাংলার সিনিয়র দলের নতুন কোচ অশোক মলহোত্রর উদ্দেশে এটাই পরামর্শ প্রাক্তন কোচ কারসন ঘাউড়ির।
বুধবার ইডেন গার্ডেন্স থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে বসে ঘাউড়ি এই পরামর্শই দিলেন বাংলার নতুন কোচকে, যিনি আপাতত দল নিয়ে হায়দরাবাদে। বললেন, “অশোকের উচিত এখনই রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল বা ফাইনালের কথা না ভেবে প্রতিটা ম্যাচকে টার্গেট করে এগোনো। তা হলে সুফল পাবে।” ঘাউড়ি মনে করেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ও প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক অশোক মলহোত্র বাংলারই লোক হওয়ায় নিজের নতুন দায়িত্ব পালনে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। যা ভিন রাজ্যের কোচরা পাননি। আর সে জন্যই অশোককে দায়িত্ব দিয়ে সিএবি বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে, বলছেন ঘাউড়ি। তাঁর কথায়, “অশোক স্থানীয় লোক বলে বাড়তি সুবিধা তো পাবেই। বাংলাটা ও বেশ ভালই জানে। কর্তাদেরও কাছ থেকে চেনে। সব থেকে বড় কথা, বাংলার ক্রিকেট সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিতি। আমার মনে হয়, ওকে দায়িত্ব দেওয়াটা সিএবি-র বেশ ভাল সিদ্ধান্ত।” |
ঘাউড়ি এ দিন শহরে আসেন সেন্ট্রাল ক্যালকাটা স্পোর্টিং ক্লাবের আমন্ত্রণে। বৃহস্পতিবার ক্লাবের পৃষ্টপোষণায় বিশুদ্ধানন্দ সরস্বতী হাসপাতালে দু’টি নতুন শয্যার উদ্বোধন হবে ঘাউড়ির হাতে। তার আগে বুধবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে বসে বলছিলেন, দায়িত্ব ছাড়ার পরও নিয়মিত বাংলার ক্রিকেটের খবরাখবর রেখেছেন। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া বাংলার দুই পেসার সম্পর্কে ঘাউড়ির বক্তব্য, “সামি বেশ ভাল। তবে দিন্দাকে উইকেট নেওয়ার ব্যাপারে আরও ধারাবাহিক হতে হবে। ঠিক যেমন ধবন, কোহলিরা সমানে রান করে ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে।”
সম্প্রতি বাংলার ক্রিকেটের রেখচিত্র যে নিম্নগামী হয়েছে, তাও জানেন। তবে গ্রাফটা নামা নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, “টেম্পারামেন্টে সমস্যা হচ্ছে নিশ্চয়ই। মানসিকতায় খামতি থাকাতেই বড় মঞ্চে পৌঁছেও ভাল খেলতে পারছে না বাংলার ছেলেরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে যেমন চোকার্স আখ্যা দেওয়া হয়, বাংলার ব্যাপারটাও অনেকটা সে রকমই। এখানে ভাল ক্রিকেটারের অভাব নেই। কিন্তু বড় ক্যানভাসের জন্য ওদের তৈরি করে নিতে হবে। আশা করি অশোক সেটা করতে পারবে।” তাঁর সময়ের দুই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান অরিন্দম দাস ও শুভময় দাসের কথা এখনও মনে রেখেছেন প্রাক্তন ভারতীয় বোলার। বললেন, “ওদের নিয়ে অনেক আশা ছিল। ভেবেছিলাম ওরা উঁচুতে উঠবে। কিন্তু, সেটা হল না দেখে অবাক লাগছে!”
ঘাউড়ি আপাতত মুম্বইয়ে ভারতীয় বোর্ডের পেস অ্যাকাডেমির দায়িত্বে। তাঁর আশা, এই অ্যাকাডেমি থেকে আগামী দু-তিন বছরে বেশ কয়েক জন বড় মাপের পেসার উঠে আসবেন। বললেন, “ভারতীয় ক্রিকেটে পেস বোলারের সাপ্লাই-লাইন দারুণ। আমার অ্যাকাডেমিরই অঙ্কিত রাজপুত, বলদেব সিংহরা আইপিএলে খেলেছে, রঞ্জিতেও খেলেছে। এখনকার ভারতীয় পেস বিভাগ যে রকম অসাধারণ, তেমন ভবিষ্যতেও থাকবে। দেখছেন তো ভুবনেশ্বর, উমেশদের।” |