অনুপম সৌন্দর্যের বাহুল্য নেই দক্ষিণ দিনাজপুরের। কিন্তু জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বৈচিত্রপূর্ণ স্ব-সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যপূর্ণ ভবন, স্থান বা বনবনানীর সম্পূরিত বৈভব নেহাত কম নয়। তা সাধারণের কাছে পরিচিত করাতে উদ্যোগী হলেন অযোধ্যা কে ডি বিদ্যানিকেতনের শিক্ষক তুহিনশুভ্র মণ্ডল। |
১৯ মিনিটের তথ্যচিত্রে তিনি তুলে এনেছেন একাদশ-দ্বাদশ শতকে নির্মিত বাণগড়, আতাশাহের দরগা, বখতিয়ার খিলজির সমাধি, জন থমাস -এর নীলকুঠি, তেভাগা আন্দোলনের পীঠস্তান খাঁপুর। রয়েছে খন গান, ধোকড়া ও মুখোশ শিল্পের কৃত্কৌশল। দেখানো হয়েছে রঘুনাথপুর বনাঞ্চল, মালিয়ানে পরিযায়ী পাখি সম্পর্কিত তথ্য। আন্তর্জাতিক করিডর হিলির সীমান্ত সৌন্দর্য এসেছে তথ্যচিত্রটিতে। চিত্রনাট্য, পরিচালনা থেকে ভাষ্য একা সামলেছেন তুহিন। তিনি জানান, পর্যটন সম্ভাবনা তুলে ধরতেই ভূমিপুত্র হিসেবে এই তথ্যচিত্রের আয়োজন। জেলা প্রশাসন প্রযোজিত তথাচিত্রটির নাম হল অ্যান আননোন বিউটি, ডেস্টিনেশন দক্ষিণ দিনাজপুর।
|
গাড়ি চালাতে চালাতে সিনেমার পোস্টারে নিজের মুখ দেখে চমকে উঠেছিলেন কার্তিক বালা। স্বপ্ন তাহলে সত্যি হয়। প্রথম সুযোগ আসে এস পি সিরিজের ‘অধিকার’ ছবিতে। কমেডি চরিত্রে। তার পর দীর্ঘ প্রতীক্ষা। দ্বিতীয় অভিনয়ের ডাক আসে প্রিন্স প্রযোজিত ‘প্রলয়’ ছবিতে। সংলাপহীন ভিলেনের ভূমিকায়। নিজ শহরে জলপাইগুড়িতে মুক্তি পেল ‘পাঙ্গা নিবি না শালা’। খলনায়কের শাগরেদের ভূমিকায় অভিনয় করলেন। এ ছবিতে রমেশ রায়চৌধুরী, দেবরাজ রায়, অনামিকা সাহার মতো খ্যাতিমান শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পেশা যাই হোক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রান্তিক মানুষটির স্বপ্ন দেখার সাহস এই শহরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে আপাতত।
|
নর্মাল স্কুলের শিক্ষক সাতকড়ি দত্ত ছোট্ট রবিকে কবিতার প্রথম দু’ লাইন লিখে দিয়ে পরখ করতেন। বিশ্ববিখ্যাত কবির বয়স তখন ৭ কিংবা আট। একদিন সাতকড়ি দত্ত লিখলেন,
রবি করে জ্বালাতন আছিল সবাই
বরষা ভরসা দিল আর ভয় নাই। ছোট্ট রবি জুড়ল দু’লাইন,
মীনগণ হীন হয়ে ছিল সরোবরে
এখন তাহারা সুখে জলক্রীড়া করে।
প্রসঙ্গটির অবতারণা এই কারণে যে ক’জন শহুরে বাঙালির মাছের জলক্রীড়া দেখবার সুযোগ বা সময় আছে? শহুরে বাঙালি কি মাছেদের নিয়ে জানতে আগ্রহী? ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার অ্যান্ড নেচারাল রিসোর্সেস (IUCN) তাদের রেড ডাটা বইয়ে একের পর এক বিপন্ন মাছেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করছে, তার মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গের মাছেদের নামও। |
এটা কি আমরা জানি? শিলিগুড়ির অধিবাসী বিমল চন্দের উদ্যোগে ‘উত্তরবঙ্গের মাছ। বৈচিত্র ও সংরক্ষণ’। রসনা তৃপ্তিতে মাছপ্রিয় বাঙালির নানা গল্প প্রায় কিংবদন্তির পর্যায়ে। মাছ সংরক্ষণে এমন প্রচেষ্টা উত্তরবঙ্গে জানা নেই। খলশের আঞ্চলিক নাম চোপড়া। গবেষকদের ধারণা, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার নামকরণ হয়েছে এই খলশে থেকেই। চাঁদা মাছের মধ্যে যে রাঙা চাঁদা বা নামা চাঁদার শ্রেণিবিন্যাস আছে ক’জন জানেন। আমাদের বাতাসি মাছ -এর কথা মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মত্স্য জাদুঘরে বিশেষ ভাবে উল্লেখ আছে, তা জেনে অবাক হতে হয় না! কী কী আছে বইটিতে? উত্তরবঙ্গের লোকসাহিত্য ও সমাজজীবনে মাছ, জলের দরে মাছ সোনার দরে পাচার, স্বদেশি জলে বিদেশি মাছ, উত্তরবঙ্গের মত্স্য-বৈচিত্র মাছ চেনার সহজ উপায়, প্রজাতিভিত্তিক মত্স্যের পরিচিতি, সমীক্ষিত মত্স্যের তালিকা। এ ছাড়া মাছ রসনায় নিবেদিতপ্রাণ বিমল চন্দের মাছ বিলুপ্ত হতে না দেওয়ার প্রত্যয়ের পরিচয়ও পাই। আমাদের পরিচিত বিভিন্ন মাছ কেন হারিয়ে যাচ্ছে? কেন তাদের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে? হারাচ্ছে মুখে লেগে থাকা স্বাদ। সমীক্ষা থেকে সামনে এসেছে সে সব কথা। বাসস্থান ধ্বংস, অতি আহরণ, বিষ প্রয়োগ, ভিন দেশি নানা প্রজাতির অনুপ্রবেশ, রোগ আর ব্যাধি, নগরায়ন, চাষের জমি সংকোচন, বাঁধ নির্মাণ, জলবিদ্যুত্ প্রকল্প স্থাপন আর দূষণ। রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদের স্বীকৃতি, জার্মানির এক প্রকাশনা সংস্থা থেকে গ্রন্থ প্রকাশের আমন্ত্রণএ তো আন্দোলনের সৈনিকের স্বীকৃতি। তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ের সহ-প্রধান শিক্ষককে একটি কথা বলার আছেএই উদ্যোগেও যদি মাছ-প্রিয় বাঙালি না জেগে ওঠে, তাহলে তাদের ঘুমিয়ে থাকা শ্রেয়।
|
১-৭ অগস্ট ছিল বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ। ১৯৯২ থেকে এ কর্মসূচি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। উদ্দেশ্য মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। চাইল্ড ইন নিউ ইনস্টিটিউট সংক্ষেপে সিনি ৪০ বছর ধরে মা ও শিশুকে নিয়ে কাজ করছে। এই কর্মসূচিতে সিনিও শামিল ছিল। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার উত্তর দিনাজপুর, শিলিগুড়ি শহর এবং শিলিগুড়ি লাগোয়া অঞ্চলে সিনি এই কর্মসূচি পালন করল। সংস্থার উত্তরবঙ্গ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর শেখর সাহা জানান, সিনি এবং আইসিডিএস-এর যৌথ উদ্যোগে এবং স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় এই সপ্তাহটি পালন করা হয়েছে। এ বছর কর্মসূচির থিম ছিল ক্লোজ টু মাদার। শুধু মায়েরা নয়, যারা শিশুদের দেখাশেনা করেন, মাতৃদুগ্ধ সম্পর্কে তাদেরকেও সচেতন করা হয়। শেখরবাবু জানান, কর্মসূচিতে কোলোসট্রাম-এর গুরুত্ব সম্পর্কে মাকে তাঁরা সচেতন করেন। জন্মের দু’দিনের মধ্যে এটি শিশুকে খাওয়াতে হয়, না হলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। জন্মের পর ছ’মাস পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ ছাড়া অন্য কিছু এমনকী জলও দেওয়া উচিত নয় বলে শেখরবাবু জানান।
|