স্থায়ীকরণ, মজুরি বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবিতে বিএসএনএলের অস্থায়ী কর্মীদের টানা আন্দোলনের জেরে গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সংস্থার পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। সংস্থার মোবাইল, ল্যান্ডফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা মাঝেমধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। স্থায়ীকরণের দাবিতে গত ৫ অগস্ট থেকে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন অস্থায়ী কর্মীরা। রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সংস্থার সদর দফতরে সামনেও এদিন সোমবার থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ১০ বছর ধরে অস্থায়ী কর্মীরা বিভিন্ন টেলিফোন এক্সচেঞ্জে প্রযুক্তিগত কাজে যুক্ত রয়েছেন। বিসএনএলের দুই দিনাজপুরের জেনারেল ম্যানেজার সোমনাথ ঘোষ বলেন, “অস্থায়ী কর্মীদের টানা আন্দোলনের জেরে দুই দিনাজপুরে বিএসএনএলের মোবাইল, ল্যান্ডফোন ও ইন্টারেনট পরিষেবা আংশিক ভাবে বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে। উপরমহলে সবকিছু জানিয়ে হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।” |
দুই দিনাজপুরে বিএসএনএলের ১৬২ জন অস্থায়ী কর্মী ও ১৭৫ জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। কারিগরি এবং সাধারণ কর্মী মিলিয়ে স্থায়ী কর্মীদের শূন্যপদ রয়েছে প্রায় ১০০টি। জেলায় ২ লক্ষ মোবাইল, ৮ হাজার ল্যান্ডলাইন ও ৬ হাজার ইন্টারনেট সংযোগ আছে। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন প্রভাবিত বিএসএনএলের অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন আন্দোলন শুরু করেছেন। তবে সংস্থার ৩০ জন অস্থায়ী কর্মী ওই সংগঠনের সদস্য না হলেও, সহকর্মীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কাজে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানা গিয়েছে। অস্থায়ীরা ট্রান্সমিশন ও প্রযুক্তি পরিষেবার কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে মাঝেমধ্যেই দুই দিনাজপুরে মোবাইল ও ইন্টারনেট ও ল্যান্ডফোন পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বিকল হয়ে থাকা বেশ কিছু ল্যান্ডলাইন এবং ইন্টারনেট সংযোগ মেরামত করা, আবেদনকারীদের নতুন সংযোগ দেওয়াও কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, কর্মীর অভাবে বিল নেওয়ার কাজ থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ।
অস্থায়ী কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত ভদ্র, যুগ্ম সম্পাদক কাজল সরকার বলেন, “এক দশকের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী কর্মীরা মাসিক সাড়ে তিন হাজার মজুরির বিনিময়ে কাজ করছেন। যতদিন না পর্যন্ত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ করা এবং মাসিক মজুরি অন্তত ১০ হাজার টাকা না করা হবে ততদিন আন্দোলন চলবে।” বিএসএনএলের স্থায়ী কর্মীদের সংগঠন ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ বিএসএনএল ওয়ার্কার ইউনিয়নের বিভাগীয় সম্পাদক অনিল সাহা বলেন, “গত কয়েকবছর ধরে কর্মী নিয়োগ বন্ধ। অস্থায়ী কর্মীদেরই প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রযুক্তিগত পরিষেবার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায়, কর্মীর অভাবে স্থায়ী কর্মীরা পুরোপুরি পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে পারছেন না। ” রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “পরিষেবার স্বার্থে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া উচিত।” |