বিয়ে রুখে কিশোরীকে সেলাই মেশিন প্রশাসনের
দ্যোগটা নিয়েছিল প্রশাসনই। খবর পেয়েই ছুটে গিয়ে বিয়ের আসরে রুখে দিয়েছিল নাবালিকার বিয়ে। গত কয়েক বছরে জেলা প্রশাসনগুলির এমন তৎপরতা নতুন নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছিল, সে বিয়ে কত দিনের জন্য থমকে দেওয়া গেল? বিভিন্ন জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সাময়িক ভাবে বিয়ে থমকে গেলেও দিন কয়েক পরেই মেয়েটিকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিয়ের আসরে বসানো হতো। যুক্তি, অভাবের সংসারে মেয়েকে ‘বসিয়ে’ খাওয়ানো সম্ভব? এ বার তারই উত্তর দিল নদিয়া জেলা প্রশাসন। আসর থেকে নাবালিকাকে তুলে এনে ‘অকাল’ বিয়েই শুধু রুখল না, ‘অভাবী’ পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হল সেলাই মেশিন। যাতে ওই নাবালিকা ‘স্বনির্ভর’ হয়ে ওই পরিবারের ‘বোঝা’ হয়ে না দাঁড়ায়। নবদ্বীপের ওই ঘটনা যদি নাবালিকাকে ‘স্বনির্ভর’ করার প্রয়াস হয়ে থাকে তা হলে বেলপাহাড়ির বিড়বিড়া গ্রামের বছর তেরোর মেয়েটির বিয়ে রুখে স্থানীয় প্রশাসন তাকে ফের স্কুলে পাঠানোর দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে। শুধু বিয়ে রোখাই নয়, দু’টি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের এই ‘সক্রিয় উদ্যমের’ প্রশংসা করেছেন নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র।
সোমবার, নবদ্বীপের মহেশগঞ্জে বিয়ের আসরে ‘কাবিলনামা’য় সইটুকুই বাকি ছিল। খবর পেয়েই জেলা প্রশাসনের কর্তারা সেখানে গিয়ে বিয়ে বন্ধের পাশাপাশি পরিবারের কাছে লিখিয়ে নেন, আঠারো বছর না হলে বিয়ে দেব না। এখানেই শেষ নয়, ওই পরিবারের অভাবের কথা শুনে ওই নাবালিকাকে স্বনির্ভর করতে তাঁদের হাতে এ দিনই তুলে দেওয়া হয়েছে একটি সেলাই মেশিনও।
পুলিশ জানায়, বছর ষোলোর ওই মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির পর আর স্কুলে যেতে পারেনি। দ্রুত মেয়ের বিয়ে দিয়ে দায় মেটাতে চেয়েছিল তার পরিবার। সোমবারই ছিল বিয়ের দিন। কিন্তু প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় নবদ্বীপ থানার পুলিশ। বর-কনে’কে তুলে সটান নিয়ে যাওয়া হয় জেলাশাসক পিবি সালিমের কাছে। প্রথমে গররাজি হলেও পরে দুই পরিবারই বিয়ে স্থগিত রাখতে সম্মত হন। পিবি সালিম বলেন, “প্রশাসনের তরফ থেকে মেয়েটির দাবি মতো সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। মেয়েটি যাতে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পে সহায়তা পায় সেই চেষ্টাও করা হবে।”
দ্বিতীয় ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ির। সেখানে নাবালিকা বিয়ের খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে নিজেই গ্রামে গিয়েছিলেন বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা। ওই কিশোরীর বাবা-মা দু’জনেই দিনমজুর। অভাবের সংসারে সকলের অন্ন সংস্থান হয় না বলেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেওয়া মনস্থির করেছিলেন নাবালিকার বাবা। প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেয়েটিকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছিল।
সব শুনে বিডিও মেয়েটিকে তখনই বিয়ের শাড়ি ছাড়িয়ে স্কুলের পোশাক পরিয়ে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সর্বোদয়বাবু পাত্রপক্ষকেও বোঝান, নাবালিকাকে বিয়ে সামাজিক অপরাধ। হবু বরও ব্যাপারটা বুঝতে পারেন বলে সর্বোদয়বাবুর দাবি। ওই নাবালিকাও বিডিও-কে জানায়, বিয়ে নয়, সে পড়তে চায়। প্রশাসন সে দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.