দুই ত্রিশঙ্কু জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিল তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় রবিবার বলেছেন, “জেতা ১৩টি জেলা পরিষদ বাদ দিয়ে বাকি জেলাগুলির সভাধিপতির লড়াইয়ে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।”
মোট ১৭টি জেলা পরিষদের মধ্যে ১৩টি জিতেছে তৃণমূল। বাকি চারটির মধ্যে মুর্শিদাবাদ ও জলপাইগুড়ি সরাসরি গিয়েছে যথাক্রমে কংগ্রেস ও বামেদের দখলে। মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর ত্রিশঙ্কু। দু’টি জেলা পরিষদেই তৃণমূল শেষ করেছে তৃতীয় স্থানে। তার মধ্যে মালদহে বামেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। সেখানে কংগ্রেস ও বাম পেয়েছে ১৬টি করে আসন। তৃণমূল পেয়েছে ৬টি। বামেরা সরে দাঁড়ানোয় কংগ্রেসের রাস্তা মালদহে অনেকটাই পরিষ্কার। মুকুলবাবুর ঘোষণার
পরে সেখানে জেলা পরিষদের পদ বাছাই ঘিরে কংগ্রেস-তৃণমূল সমঝোতায় যায় কি না, তা-ই এখন দেখার।
তুলনায় উত্তর দিনাজপুরের পরিস্থিতি বেশি জটিল। জেলা পরিষদের ২৬টির মধ্যে ১৩টি আসন পেয়ে বামেরা জানিয়েছে, তারা বোর্ড গড়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কংগ্রেসের আছে ৮টি আসন। প্রথমে বিরোধী আসনে বসার কথা বললেও পরে মত বদলে জেলা কংগ্রেসের একাংশ সভাধিপতি পদে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছে। তৃণমূল পেয়েছে ৫টি আসন। এ বার তারাও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলল! কংগ্রেস-তৃণমূল মিললেও বামেদের সঙ্গে ‘টাই’ হবে।
তাই শেষ পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরে ‘ক্রস ভোটিং’-এ সম্ভাবনা তৈরি হয় কি না, সেই দিকেই নজর রয়েছে বাম ও অ-বাম শিবিরের।
মুকুলবাবু এ দিন দাবি করেছেন, ত্রিশঙ্কু জেলা পরিষদ দখলের লড়াইয়ে বাম-বিরোধী দলগুলি তৃণমূলকে সমর্থন করবে। কংগ্রেস অবশ্য মালদহে কারও সাহায্য ছাড়াই বোর্ড এবং স্থায়ী সমিতি গড়তে পারবে বলে আশাবাদী। তবে জেলা পরিষদ ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের অবস্থান ঠিক করার দায়িত্ব স্থানীয় নেতৃত্বের উপরেই ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া হবে কি না, তা স্পষ্ট করে না বললেও তাঁর বক্তব্য, “পরিস্থিতি বিচার করে যা সুবিধাজনক হবে, সেই সিদ্ধান্তই নিতে বলা হয়েছে স্থানীয় নেতৃত্বকে।” পক্ষান্তরে, মুকুলবাবুর দাবি, জেলা পরিষদ ছাড়াও ৬২৪টি পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বেশির ভাগেরই তৃণমূলের দিকে পাল্লা ভারী। দলের তরফে জেলা সভাধিপতি পদে কারা বসবেন, তা বাছাই করতে আগামী ২৬ ও ২৯ অগস্ট কলকাতার টাউন হলে বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। |