মাসখানেক আগে সেতুর সংযোগস্থলে রাস্তার একাংশ ধসে গিয়েছিল। বৃষ্টির জেরে দিনের পর দিন সেই ধস ক্রমশ বাড়ছে। সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ছোট গাড়ি যাতায়াত করলেও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাস চলাচল। বাঁকুড়ার বারিকুল থানার লেপাম গ্রামে বারিকুল জোড়ের উপরে সেতুর সংযোগস্থলে এই ধসে সমস্যায় পড়েছেন বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের একাংশের বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন এই রাস্তা মেরামতি না করায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা অবিলম্বে ওই রাস্তা মেরামতির দাবিতে সরব হয়েছেন।
বারিকুল-ফুলকুসমা রাস্তার উপরে লেপাম গ্রামে বারিকুল জোড়। সেই জোড়ের উপরে প্রায় ৩০ ফুটের একটি পাকা সেতু রয়েছে। রাস্তা ও ওই সেতুর সংযোগস্থলের কিছুটা অংশ মাসখানেক আগে প্রবল বৃষ্টিতে ধসে যায়। সেই ধস ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বর্তমানে রাস্তায় প্রায় ১৫ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া গর্ত তৈরি হয়েছে। এর ফলে ছোট গাড়ি চলাচল করলেও বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপাকে পড়েছেন বারিকুল ও ফুলকুসমা পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা। |
রানিবাঁধ থেকে ফুলকুসমা যাওয়ার সোজা রাস্তা এটিই। বারিকুল, খেজুরখেন্না, লেপাম, রসপাল, ফুলকুসমা-সহ আশেপাশের প্রায় ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত জুন মাসে বৃষ্টির জলের তোড়ে ওই জোড়ের সেতুর কাছে রাস্তার একাংশ বসে যায়। কিছুদিন পরে ফের বৃষ্টিতে রাস্তার আরও কিছুটা অংশ ধসে পড়ে। এরপরেই বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাসকর্মীদের দাবি, প্রথম দিকে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েও ওই রাস্তায় গাড়ি চালানো হচ্ছিল। কিন্তু রাস্তার অনেকটা জায়গা জুড়ে ধসের ফলে যে গর্ত হয়েছে, তাতে বাস চালানো রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই রাস্তায় বাস চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে।
লেপাম গ্রামের বাসিন্দা চক্রধর সর্দার, মহাদেব সর্দার বলেন, “একমাসেরও বেশি সময় ধরে রাস্তার ওই অংশ ভেঙে গিয়েছে। তারপরে বৃষ্টিতে ধস বেড়েই চলেছে। বেশ কিছু দিন ধরে বাস বন্ধ থাকায় হয়রানিও বেড়ে গিয়েছে। প্রশাসনকে সব জানানো হয়েছে। কিন্তু রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ আজ পর্যন্ত চোখে পড়েনি।” বাসিন্দারা জানান, বাস চলাচল না করায় রানিবাঁধ বা ফুলকুসমা যাওয়া এখন রীতিমত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্যা সিপিএমের অলকা টুডুও। তিনি বলেন, “এতগুলি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে, প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে ওই ভেঙে পড়া রাস্তা নতুন করে মেরামতি।” বারিকুল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শ্যামলী হাঁসদা বলেন, “বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সত্যিই সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমরা অবিলম্বে ওই রাস্তা মেরামতির দাবি জানিয়েছি।” রানিবাঁধের বিডিও তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “বারিকুল জোড়ে সেতুর পাশে ধসের জেরে রাস্তার বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে পড়েছে জানি। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য এত দিন কিছু করা যায়নি। পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়ে গেলে ওই রাস্তা সংস্কার করা হবে। |