শাসক দলের সন্ত্রাস অবশ্যই ছিল। তবু সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধী বামেদের অভিযোগ মানুষের কাছে পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা পায়নি তাদের অতীত রেকর্ড এবং কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্যই। পঞ্চায়েত ভোটের ফল কাঁটাছেড়া করতে বসে আত্মসমালোচনার পথই ধরতে চাইছে বাম শরিক সিপিআই। গ্রহণযোগ্যতা কেন অর্জন করা যায়নি, তার ব্যাখ্যা এ বারের পর্যালোচনা রিপোর্টে নথিভুক্ত করতে চাইছেন সিপিআই নেতৃত্বের একাংশ। যা করা গেলে বড় শরিক সিপিএমের উপরে অস্বস্তি ও চাপ, দুই-ই বাড়বে!
পঞ্চায়েত ভোটের ফল নিয়ে জেলাওয়াড়ি পর্যালোচনার জন্য আগামী ১৯-২০ অগস্ট কলকাতায় বসছে সিপিআইয়ের রাজ্য কার্যনির্বাহী পরিষদের বর্ধিত বৈঠক। পূর্ণাঙ্গ আলোচনার জন্য দলের সব জেলা সম্পাদককেই ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। দলের প্রবীণ নেতা এ বি বর্ধনেরও বৈঠকে থাকার কথা। পঞ্চায়েতের ফলপ্রকাশের পরে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ইতিমধ্যে কয়েক দফা আলোচনায় উঠে এসেছে, কিছু সত্য অপ্রিয় হলেও স্বীকার করে নেওয়াই ভাল। যেমন, যে সব জায়গায় বাম জমানায় গা-জোয়ারি করে আধিপত্য বিস্তার এবং ভোটে গোলমালের অভিযোগ ছিল, সেই সব জায়গাতেই এ বার তৃণমূলের পাল্টা হামলা হয়েছে সব চেয়ে বেশি। বাম জমানার অতীত মাথায় আছে বলেই বামেদের মুখে সন্ত্রাসের অভিযোগ এখনও মানুষের কাছে বিশেষ গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়নি বলে সিপিআই নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন। বাম আমলে নানা এলাকায় যে সব মুখ মানুষের বিরক্তির কারণ ছিল, তাদের সকলকে এখনও সরানো হয়নি। বলাই বাহুল্য, এই অভিযোগের তির মূলত সিপিএমের দিকেই।
অতীতের সব কাজ যে ঠিক ছিল না এবং অপছন্দের কিছু মুখ যে সরানো উচিত, সিপিএমের মধ্যে এখন এই প্রশ্নে সরব বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেবেরা। সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব চাইছেন, তাঁদের পর্যালোচনা রিপোর্টে বিষয়টি এনে বামফ্রন্টে চাপ বাড়িয়ে ওই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “নিজেদের ফোঁড়া নিজেরা ফাটিয়ে দেওয়াই ভাল! তাতে যন্ত্রণা কমবে।” এ বার পঞ্চায়েতে অন্য ছোট শরিকের তুলনায় কম ধাক্কা খেয়েছে সিপিআই। কলকাতায় বৈঠক শেষে ২১ তারিখ রাজ্য সিপিআইয়ের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করার কথা বর্ধনের। তাঁর হাতেই প্রকাশিত হবে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসের নতুন খণ্ড, যেখানে প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি বিভাজনের নানা অজানা নথি।
|
স্কুলগাড়ি ধর্মঘটের ডাক
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বেআইনি স্কুলগাড়ি বন্ধে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগে ২০ অগস্ট থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিল রাজ্যের ‘কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ’ মালিক ও চালকদের সংগঠন। সংগঠনের তরফে অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আর্জি জানিয়েও সুফল মিলছে না। ‘কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের’ সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আইনি অনুমতি পেতে প্রতি বছর বাস-পিছু কয়েক হাজার টাকা দিতে হয়। অথচ বাণিজ্যিক নথি ছাড়াই কয়েক হাজার স্কুলগাড়ি ব্যবসা করছে। এই অবস্থায় প্রায় আড়াই হাজার বৈধ বাস বসিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “আইন মেনে গাড়ি চালাতে প্রতিটি সংগঠনকে বার বার বলা হয়েছে। বিধিভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” ধর্মঘট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিষয়টা জানা নেই। এ নিয়ে বৈঠক ডাকব।” পরিবহণ দফতরের দাবি, গত কয়েক মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরটিও থেকে প্রায় ৬০০ স্কুলগাড়ির পারমিট দেওয়া হয়েছে। এক পদস্থ অফিসার বলেন, “অনেকের আবেদনপত্রের সঙ্গে বৈধ নথি নেই। তাই স্কুলগাড়ির বৈধকরণের কয়েকশো আবেদন বিবেচনা করা যাচ্ছে না।” |