পূর্ব কলকাতা
খাল কেটে...
নাকাল বাসিন্দা
লি মাটি জমে খাল নাব্যতা হারিয়েছিল অনেক দিন আগেই। সেই কারণে খালের নাব্যতা বাজায় রাখতেই রাজ্য সেচ দফতর খাল সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটা খালধার থেকে শুরু করে উত্তরের আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে মাটি তোলার কাজও শুরু হয়েছে। মাটি কাটার পর সেগুলি তুলে রাস্তার একধারে রাখা রয়েছে। ফলে, এই সমস্ত রাস্তায় যাতায়াতের সময় অসুবিধায় পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সমস্যার সেখানেই শেষ নয়। রাস্তার ধারে রাখা এই পলি বৃষ্টিতে ধুয়ে আবার খালেই পড়ছে। খাল থেকে তোলা মাটি রাস্তায় রাখা নিয়ে ফাঁপরে পড়েছে রাজ্য সেচ দফতর। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মাটি তুলে খালধারের পাশেই রাস্তার ওপর রাখা হচ্ছে। ভিজে মাটি সরানোর অসুবিধা রয়েছে।
যত ক্ষণ মাটি না শুকোচ্ছে তত ক্ষণ সরানোয় সমস্যা আছে। ভিজে মাটির পরিমাপ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া ভিজে মাটি সরানোর কোনও পরিকাঠামোও নেই।” রাজ্য সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্ষায় না তুলে বর্ষার পরে এই মাটি সরানোর কাজ শুরু হবে। মানিকতলার বাসিন্দা সুদেব মল্লিক বলেন, “বৃষ্টিতেই মূলত সমস্যা তৈরি হয়। জলে ভিজে কাদামাটি রাস্তার চার দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়। ফলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীদের সমস্যায় পড়তে হয়।”
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যে মাটি রাস্তার ধারে তুলে রাখা হচ্ছে সেই পরিমাণ মাটি যদি ফের জলে ধুয়ে যায় তা হলে সমস্যার সমাধান কী ভাবে হবে? এই মাটি ফেলাই বা হবে কোথায়?
সেচমন্ত্রী জানান, একটি নির্দিষ্ট ঠিকাদারি সংস্থাকেই খালের পলিমাটি কাটার জন্য দরপত্র করে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কত পরিমাণ মাটি তোলা হল প্রথমে তার হিসেব নেওয়া হয়। পরে মাটি শুকিয়ে গেলে আবারও জমানো মাটির পরিমাপ করা হয়। যদি দেখা যায়, দ্বিতীয় দফায় মাটির পরিমাপ কম সে ক্ষেত্রে ধরেই নেওয়া হয়, কিছু মাটি জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বা খালে ফের পড়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি সংস্থাকে সমপরিমাণ মাটি ফের তুলতে বলা হবে। কলকাতা পুরসভা শহরের মধ্যে যে সমস্ত জায়গা চিহ্নিত করেছে সেই সব জায়গাতেই এই মাটি ফেলা হবে।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “সেচ দফতর যে মাটি তুলছে তা সরানোর দায়িত্ব সেচ দফতরেরই। এগুলি সরানোর ব্যাপারে পুরসভাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে, বেশি দিন রাস্তায় এ ভাবে মাটি পড়ে থাকলে সেচ দফতরকে তা সরানোর জন্য বলতে হবে।”
অন্য দিকে, খালধারে জবরদখলকারীরাও সমস্য তৈরি করছে। এলাকাও নোংরা হচ্ছে। ফলে, সমস্যা রয়েই গিয়েছে। রাজীববাবু জানান, খালধার থেকে জবরদখলকারীদের সরানোর জন্য সেচ দফতর তাঁদের উদ্দেশে নোটিস জারি করেছে।

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.