উত্তরের কড়চা
 
সংসার শিশু সামলে মাঠে
খেলায় আগ্রহ ছিল বিদ্যালয় জীবন থেকে। জ্যোত্‌স্না মানে জ্যোত্‌স্না রায় প্রধান, তখন ময়নাগুড়ির মল্লিকপাড়া বিদ্যায়তনের ছাত্রী। রানা স্যার তখন জ্যোত্‌স্নার কোচ। উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত স্কুলের মাঠেই চলত অনুশীলন। জ্যোত্‌স্না চাকরি পেলেন সাউথ ইস্টার্ন রেলে। কর্মস্থল কলকাতা। কোচ ছিলেন স্বপন রাহা। তাঁর তত্ত্বাবধানে যুবভারতী ও সাই-এ অনুশীলন। অংশ নেন রাজ্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে। প্রথম সাফল্য ১৯৯২ সালে। সিঙ্গাপুরে ১০০ এবং ৪০০ মিটার রিলেতে যথাক্রমে সোনা এবং রুপো জয়। তার পর ১৯৯৪ সালে এশিয়ান মিটে জাকার্তায় ৪০০ মিটার রিলেতে ব্রোঞ্জ। সেবার চেন্নাইয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইনভিটিশন মিটে রুপো জয়। কর্মসূত্রে জ্যোত্‌স্না ময়নাগুড়িতে। থাকেন নতুন বাজার বিবেকানন্দ পল্লিতে। রানা স্যার এখন তার স্বামী। রানা আর দুই সন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার। তবে মাঠের হাতছানি এড়াতে পারেন না। সংসার, চাকরি, ময়নাগুড়ি ফুটবল গ্রাউন্ডে নিয়মিত অনুশীলনসবই দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন জ্যোত্‌স্না। “শুধু সংসার বা অনুশীলন নয়, যা সাফল্য আমি পেয়েছি সবই ওর জন্য।” হেসে জ্যোত্‌স্না বলেন “মানে, রানা স্যারের জন্য।”
লেখা ও ছবি সুদীপ দত্ত।

শুধুই স্মৃতি
কোচবিহার রাজার শহর। এখন সেই রাজা নেই, রাজ্যও নেই। হারিয়েছে নানা জায়গায় রাজ আমলে বসানো ট্যাপকলগুলোও। পথের পাশে দু’এক জায়গায় এখনও হাতে গোনা কয়েকটি রাজ-কল দাঁড়িয়ে আছে রাজার স্মৃতি নিয়ে।
লেখা ও ছবি শুভাশিস দাস।

ব্যতিক্রমী শিক্ষক
পেশা শিক্ষকতা। নেশা গাছ লাগানো। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার কলাবাড়ি টিই উচ্চবিদ্যালয়ের জীববিদ্যার শিক্ষক আশিসকুমার রায়। সম্পূর্ণ নিজউদ্যোগে স্যার কিছু গাছ লাগাবেন জানতে পেরে প্রায় জনা বিশেক ছাত্রছাত্রী জড়ো হয় স্যারকে সাহায্য করার জন্য। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির দিন ও সময় ধার্য হয় ২১ জুলাই (রবিবার) ২০১৩, সকাল ১০টা। কলাবাড়ি বিদ্যালয়ের পিছনের পাকা রাস্তার দু’পাশে পোঁতা হয়েছে ৩৫টি চারাগাছ। এদের মধ্যে রয়েছে, পারুল, শিমূল, শিরিষ, জাম, কাঁঠাল, গামার আরও কত কী! ভাবি বনস্পতিদের যত্নেরও কমতি ছিল না। জৈবসার মিশ্রিত মাটি দেওয়া হয়েছিল গাছগুলির গোড়ায়। পিংকু মাহাতো বাড়ির জৈব সার স্যারের হাতে তুলে দেয়। চারাগাছগুলির সুরক্ষাদানের প্রতি তীক্ষ্ন দৃষ্টি ছিল আশিসবাবুর। তাই নিজের অর্থ দিয়ে কিনে এনেছিলেন বাঁশের তৈরি গোলাকার বেড়া। শিক্ষক মহাশয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষার্থীদের দল স্বেচ্ছায় শ্রমদান করে।
অপর্ণা দাস, জলপাইগুড়ি।
অভয়, অবিনাশ, রোশন, মোহিত, মুনু ও রমনরা আনন্দ মুখরিত হয়েছিল সর্বক্ষণ। মনে হয়েছে এ যেন ওদের ঘরের কাজ। বৃক্ষরোপণ শেষে পথের ধারের চাঁপা গাছের তলায় বসে আলোচনাসভা। আশিসবাবু সরল ভাষায় বৃক্ষের গুরুত্ব উপলব্ধি করান ও বৃক্ষকে ‘বাহ্যিক ফুসফুস’ আখ্যাদান করেন। আলোচনার শেষে ছাত্রছাত্রীর হাতে সামান্য টিফিন তুলে দেওয়া হয়। আড়ম্বরহীন এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল, গাছের প্রতি মমত্ববোধ জাগ্রত করা এবং ত্যাগের শিক্ষা ও শ্রমদানের শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করে সমাজে সঞ্চারিত করা। ছুটির দিনে অনেকে যখন নিজ গৃহকর্মে বা বিশ্রাম নিতে ব্যস্ত তখন শিক্ষকমহাশয়ের এই মহত্‌ কর্মে ভানু মাহাতো ও দুখু ওঁরাও-এর মুখে উচ্চারিত হয়েছিল উচ্চ প্রশংসার ধ্বনি।

সৃজনশীল শুভশ্রী
স্কুলে পড়াকালীন জলরং, প্যাস্টেল কালার নিয়ে মেতে থাকতেন তিনি। অঙ্কনশিল্পে ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত হলেন এগারো ক্লাসে পড়াকালীন। সময়ের স্রোত পেরিয়ে শিল্পধারা ছড়িয়ে পড়ল সুপারি, ক্রিস্টাল, কাঠ, অভ্র-র মতো বহুবিধ শিল্পসামগ্রীর গায়ে গায়ে। নীল সাদা রঙের ছানাপোনা-সহ এক ঝাঁক পেঙ্গুইন বা গণেশ ঠাকুরটি যে সুপারি দিয়ে নির্মিত তা ঠাহর করা মুশকিল। জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরাম, পাউডার কেস থেকে প্যাঁচা তৈরির প্রধান উপকরণ নারকেলের মালা। তার সৃজনশীল প্রকাশভঙ্গির অভাবনীয় নমুনা নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি টি-সেটটি।
লেখা ও ছবি অনিতা দত্ত।
রাজস্থানী মিনিয়েচার কিংবা মোঘল আর্টকে তুলে এনেছেন গ্লাস পেন্টিংয়ে। সাদা সুতো আর রঙিন কাপড় দিয়ে তৈরি করেছেন উত্তরবঙ্গের লৌকিক দেবতা মাসান-এর ছবি। বহু শ্রমে তৈরি তার কাগজের ব্যাগগুলির রীতিমত চাহিদা রয়েছে। পটের গায়ে সেরামিক্সের কাজ তার চর্চিত হাতের নিদর্শন। বানিয়েছেন কত ধরনের কত রকমের ক্রিস্টালের ব্যাগ। রাজস্থানী শিল্পকলাকে রূপ দিয়েছেন গ্লিটার ওয়ার্কসে। তার রচিত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে অ্যামবোস থেকে নিবপেন্টিং। কুমড়ো, লাউ, শসা আর আখরোটের বীজ দিয়ে বানিয়েছেন কিচেন ক্লক। তার সাফল্যের খতিয়ান কম নয়। জেলা স্তরে তিন তিন বার পুরস্কারও রয়েছে তার হেফাজতে। প্রতিভাবান এই শিল্পী হলেন জলপাইগুড়ি শহরের কেরানিপাড়ার বাসিন্দা শুভশ্রী সেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.