ক্রমাগত বমি ও সেইসঙ্গে পায়খানা। গত দু’দিনে এই ভাবে অসুস্থ হয়ে বসিরহাট-১ ব্লকের নারায়ণপুর গ্রামের ২৪ জন বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য দফতর থেকে ওই গ্রামে চিকিত্সা শিবির খোলা হয়েছে। চিকিত্সকদের একটি দলকেও সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে বলে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত পাণ্ডে বলেন, “গত দু’দিনে ওই এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় ওই এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির খোলা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। তবে রোগের লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে নলবাহিত পানীয় জল দূষণ থেকেই রোগ ছড়িয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ডায়েরিয়া বলেই মনে হচ্ছে। জল দূষণ বন্ধ করার জন্য পিএইচই দফতরের আধিকারিককে বলা হয়েছে। অসুস্থদের বমি, পায়খানার নমুনা সংগ্রহ করতে জেলা থেকে একটি দল আসছে।”
মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কেউ না কেউ অসুস্থ। গ্রামের মুসলিম পাড়া, দফাদার পাড়া, মুহুরি পাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, গত এক সপ্তাহ ঘরে এমন অবস্থা চলছে। রোগের লক্ষণ বলতে ঘন ঘন বমি, পায়খানা। সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জল দূষণের কারণেই গ্রামে রোগ ছড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, “এলাকার কয়েকশো বাসিন্দার জন্য মাত্র তিনটি নলবাহিত পানীয় জলের কল রয়েছে। সেগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। তার উপর এমন জায়গায় কল রয়েছে যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। একটু বেশি বৃষ্টি হলে কলের মুখ ডুবে যায়। ওই নোংরা জল খাওয়ার কারণেই সম্ভবত রোগ ছড়িয়েছে। এ দিন সকালে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত পাণ্ডে আক্রান্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। এক জায়গায় দেখা যায় রাস্তার জলকাদার মধ্যেই মাত্র কয়েক ইঞ্চি উপরে মাথা তুলে আছে পানীয় জলের কল। বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টি হলেই কল ডুবে গিয়ে কাদাজল মিশে যায়। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মাইকে নলবাহী জল না খাওয়ার জন্য প্রচার শুরু হয়েছে। জল ফুটিয়ে তাতে হ্যালোজেন ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অসিতবাবু।
|