মালিকানা নিয়ে জটিলতার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগান ম্যানেজারকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একাংশ। কয়েকজন ম্যানেজারের গাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের বানারহাট থানার আমবাড়ি চা বাগানে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “ওই বাগানের মালিকানা হস্তান্তর নিয়ে প্রক্রিয়া চলছে। তবে বাগানে কী ধরণের গণ্ডগোল হয়েছে তা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।” তবে বাগানের কাজে এ দিন তেমন প্রভাব পড়েনি।
বছর দুয়েক আগে রুগ্ন আমবাড়ি চা বাগানটি দক্ষিণ ভারতের একটি চা শিল্প সংস্থা কেনার প্রস্তাব দেয়। কাগজে কলমে মালিকানা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আজও বাগানটি চালাচ্ছেন পুরনো মালিক পক্ষ। দক্ষিণ ভারতের ওই কোম্পানির পক্ষে পরিদর্শক হিসাবে এক জন প্রতিনিধিকে বাগানে নিয়োগ করেন। চা শ্রমিকদের অভিযোগ, শ্রমিকদের ঘর বাড়ি দীর্ঘ দিন ধরে মেরামতি না হওয়ায় বহু বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বাগানের বহু শ্রমিক অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। পানীয় জল-সহ অবসরপ্রাপ্ত ৫০০ জন শ্রমিক গ্রাচুইটির টাকা পাচ্ছেন না। পুরনো মালিকপক্ষকে বিষয়গুলি জানালেও কিছু হচ্ছে না। নতুন মালিক পক্ষ বাগান হস্তান্তরের কথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ সব নিয়ে বাগানের ১৩০০ শ্রমিকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। গত রবিবার পুরানো মালিক পক্ষের ডায়না চা বাগানের ম্যানেজার সুদর্শন বাবল দক্ষিণ ভারতীয় একটি কোম্পানির এক প্রতিনিধি আমবাড়ি বাগানে বেআইনি ভাবে থাকছেন বলে বানারহাট থানায় অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় পুলিশ বাগানে তদন্ত করতেও আসে। |
সোমবার ডায়না বাগান ম্যানেজার সুদর্শনবাবু তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকা আমবাড়ি বাগানে ঢুকলে কয়েকশো শ্রমিক তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। টানা দেড়ঘন্টা বিক্ষোভ চলার পর তিনি ঘেরাও মুক্ত হন। বাগানের আদিবাসী বিকাশ পরিষদের শ্রমিক নেতা তুলসী মহালি ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লুউ নেতা বুধরাম সিংহ বলেন, “এই বাগানে রেশন আর বেতন ছাড়া কিছু মিলছে না। পুরানো মালিক পক্ষ নতুন মালিক পক্ষের লোককে বাগান থেকে তাড়াতে চেষ্টা করছে। শ্রমিকরা পুরনো মালিক পক্ষের ম্যানেজারকে ঘেরাও করেন।”
দক্ষিণ ভারতীয় ওই কোম্পানির পরিদর্শক মুরলিধরন জানান, সাড়ে ১৮ কোটি টাকা দিয়ে বাগান বিক্রির চুক্তি হয়। অগ্রিম তিন কোটি টাকা নিয়েছে ডায়না বাগানের মালিকপক্ষ। তবে দু’বছর পার হলেও মালিকানা হস্তান্তর করেননি পুরনো মালিপক্ষ। বাগানের পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। আমরা বহু টাকা খরচও করেছি। চা বিক্রির টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। উল্টে আমাদের বাগান থেকে তাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে ডায়না বাগান ম্যানেজার সুদর্শন বাবল বলেন, “দক্ষিণ ভারতীয় প্রতিনিধি শ্রমিকদের উত্তেজিত করছেন। তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে বাগানের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়েছি।” |