লাশের রাজনীতি। এর আগে সমতল দেখেছে। এ বার দেখল দার্জিলিং পাহাড়ও।
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আত্মঘাতী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থক মঙ্গল সিংহ রাজপুতের দেহ নিয়ে দিনভর মিছিল, অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তাল হল পাহাড়। সেই বিক্ষোভের আঁচ সমতলেও পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ওই আত্মঘাতী কর্মীর দেহ নিয়ে শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার চেষ্টা করেন মোর্চা সমর্থকেরা। তবে পুলিশের বাধায় তাদের সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। প্রশাসনের আশঙ্কা, কাল, সোমবার মঙ্গলের অন্ত্যেষ্টি ঘিরে ফের অশান্ত হতে পারে পাহাড়। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য মোর্চা নেতৃত্বকে আগেভাগেই কড়া বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। সুর নরম করার ইঙ্গিত মিলেছে মোর্চার তরফেও।
আত্মঘাতী মোর্চা সমর্থককে নিয়ে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ যে সুর চড়াবেন, সে আশঙ্কা শনিবারই প্রকাশ করেছিল প্রশাসন। কারণ এই মুহূর্তে রাজ্যের কড়া মনোভাবের মুখে যথেষ্ট কোণঠাসা গুরুঙ্গ ও তাঁর সঙ্গীরা। এই অবস্থায় শনিবার মঙ্গলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন গুরুঙ্গ নিজে। ফেসবুকের মাধ্যমে বার্তা পাঠান, সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হবে পাহাড়বাসীকে। |
সমর্থকদের সঙ্গে বিমল গুরঙ্গ। রবিবার। ছবি: রবিন রাই |
বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে রবিবার পথেও নামেন মোর্চা সমর্থকেরা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে মঙ্গল সিংহের দেহ নিয়ে শিলিগুড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু দার্জিলিং মোড়ে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। মোর্চা সমর্থকেরা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে মঙ্গলের দেহ রেখে অবরোধ শুরু করেন। পুলিশ-প্রশাসন ফের কড়া পদক্ষেপ করে। সকলকে গ্রেফতার করা হবে বলে ঘোষণা করে পুলিশ। এর আধ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলের দেহ নিয়ে কালিম্পঙের দিকে রওনা হয়ে যান মোর্চা নেতা-কর্মীরা। সোমবার মঙ্গল সিংহের অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দেওয়ার কথা বিমল গুরুঙ্গের। কিন্তু রাতেই দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন ও পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল দেহ নিয়ে মিছিলের নেতৃত্বে থাকা জিটিএ-র ডেপুটি চিফ অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল রমেশ আলের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা মোর্চা নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অন্ত্যেষ্টির সময়ে কোনও গোলমালের চেষ্টা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে রমেশ আলে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।”
|