ভুল ট্রেনে উঠে মাঝ পথে না নামলে কী বিপদ যে অপেক্ষা করেছিল, ভাবতেই শিউরে উঠছিলেন বছর তেইশের তরুণীটি। শনিবার রাতে পুরুলিয়া স্টেশন ম্যানেজারের অফিসে বসে সে কথাই বলছিলেন আদতে মজফ্ফরপুরের বাসিন্দা মণীষা সিংহ। পরিচারিকার কাজ করা ওই তরুণী মনিবের বাড়ি থেকে পালিয়ে ভুল ট্রেনে চড়ে বসেন। পরে ট্রেনে অন্য এক যুবক তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ফন্দি এঁটেছিল। সেই যুবকের চোখে ফাঁকি দিয়ে শনিবার রাতে নেমে পড়েছিলেন পুরুলিয়া স্টেশনে। তারপর রেলপুলিশ ও স্টেশন ম্যানেজারের সাহায্য পেলেন। ওই রাতেই তাঁরা তরুণীটিকে ফেরার ট্রেনে চড়িয়ে দেন।
জামসেদপুরের বিষ্টুপুর এলাকায় একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন মণীষা। মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে মণীষা বাড়ির গিন্নির কাছে ছুটি চেয়েছিলেন। তিনি নাকচ করায় মণীষা সেখান থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার সাত সকালেই তিনি সেই বাড়ি ছাড়েন। তাঁর কথায়, “টাটানগর স্টেশনে একটা ট্রেন দেখে উঠে পড়ি। চান্ডিল স্টেশনে নেমে মজফ্ফরপুরের ট্রেনের খোঁজ করি। কিন্তু কেউ ঠিক জানাতে পারছিল না। ততক্ষণে ফাঁকা হয়ে যাওয়া স্টেশনে ভয় করতে থাকায় স্টেশন ছেড়ে যাওয়া হাওড়ামুখী চক্রধরপুর ট্রেনে উড়ে পড়ি। খানিকপরে কামরায় থাকা এক যুবক আমার কাছে এসে গায়ে পড়ে আলাপ করে। সে জানায়, আদ্রায় নিয়ে গিয়ে আমাকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু লোকটার ভাবগতিক সুবিধার মনে না হওয়ায় একটা স্টেশনে নেমে পড়ি।”
ওই স্টেশনটি ছিল পুরুলিয়া। স্টেশন ম্যানেজার শ্যামাপ্রসাদ মজুমদার বলেন, “একা একা এই তরুণীকে ঘুরে বেড়াতে দেখে রেলকর্মী ও রেলপুলিশ কর্মীদের সন্দেহ হয়। তরুণীকে তাঁরা আমার কাছে নিয়ে আসেন। সব ঘটনা জেনে হিমাচল প্রদেশে কর্মরত তাঁর স্বামীকে ফোন করি। খাবার খাইয়ে রাতে তাঁকে টাটানগর-ছাপরা এক্সপ্রেসে তুলে দেওয়া হয়।” তিনি জানান, রবিবার দুপুরে ওই তরুণী বাড়ি পৌঁছে ফোন করে সে খবরও জানিয়ে দিয়েছেন। |