এক ঝলকে...
পৃথিবী
অশান্তির আবর্তে
• কায়রো • শুক্রবারের নমাজের পর শহরের নানা প্রান্তের মসজিদ থেকে অনেকগুলো মিছিল বেরোল। অন্তত তিরিশটি হবে। সবই গিয়ে মিলিত হল একই জায়গায়: কায়রোর শহরের পুব দিকে রবা-আল-আদউইয়া মসজিদের সামনের চত্বরে। সেখানে কয়েক দিন ধরেই চলছে শাসনকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ। মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুর্সিকে সরিয়ে সেনাবাহিনী মিশরের দখল নিয়েছিল ৩ জুলাই। এই এক মাসে এক দিনও মিশর শান্ত থাকেনি, বিক্ষোভশূন্য থাকেনি। গত সপ্তাহে যেন বিক্ষোভের সুর আরও চড়ল। সঙ্গে পাল্লা দিল কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জের প্রাবল্যও।
বিক্ষোভের মূল নেতারা মুসলিম ব্রাদারহুডের, তবে সকলেই সেই দলের সদস্য নয়। দেশের ছোট বড় নানা ধর্মীয় ও উগ্রবাদী সংগঠন এক হয়েছে ছত্রতলে, নিজেদের নাম দিয়েছে ‘অ্যান্টি-ক্যু’ অ্যালায়েন্স (সেনা-অভ্যুত্থান বিরোধী বাহিনী)।
সরকারের দাবি, যত তাড়াতাড়ি শান্তি ফিরবে, তত দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে এগোনো যাবে। বিক্ষুব্ধদের দাবি, গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে সামরিক অভুত্থান হয়েছে— এই পরিস্থিতিতে কোনও মতেই সেনাবাহিনীর আদেশ শোনা হবে না।
সন্দেহ হয় যে, মুখে যা-ই বলা হোক, দুই পক্ষই চায় অবস্থা উত্তরোত্তর খারাপ হোক, অশান্ততর হোক। সেনা-কর্তৃপক্ষ তার সুযোগ নিয়ে ইসলামি নেতাদের টপাটপ ধরে জেলে পুরবে। আর ইসলামি বিক্ষুব্ধরা চেষ্টা করবে, গণতন্ত্রের বিনষ্ট সম্ভাবনার ধুয়ো তুলে আরও বেশি জনসমর্থন বাড়ানোর। এই মরণখেলায় কে হারে কে জেতে, তাই দেখার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা এখন। তবে একটা কথা ঠিক, মরণখেলার উন্মাদনার চোটে ক্রমেই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে মিশরবাসীর গণতন্ত্রের আশা।

বয়স আঠারো = চল্লিশ গ্রাম
• মন্টেভিডিয়ো • এ বার থেকে ওষুধের দোকানেই মিলবে মারিহুয়ানা, অর্থাৎ বিশুদ্ধ গঞ্জিকা। বয়স আঠারোর বেশি হলেই মাসে চল্লিশ গ্রামের কোটা। যথেষ্ট, জানাচ্ছেন ‘বিশেষজ্ঞরা’। উরুগুয়ের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ইতিমধ্যেই প্রস্তাবটি পাশ হয়ে গিয়েছে। এর পর ঘরে-ঘরে গাঁজার চাষ করার অনুমতি মিলবে। কিন্তু সেই পাতা বেচতে হবে সরকারের কাছেই। সরকার ওষুধের দোকানের মাধ্যমে তা বিক্রি করবে। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন?
উরুগুয়ের সরকারের দুটো যুক্তি। এক, এখন বে-আইনি পথে সব রকম ড্রাগ-এরই ব্যবসা চলে। গাঁজার মতো কম ক্ষতিকারক নেশা আইনি হলে প্রশাসনের পক্ষে নেশার সমস্যা সামাল দেওয়া সহজ হবে। দুই, এই জাতীয় ছুটকো সমস্যা নিয়ে মাথা না ঘামাতে হলে পুলিশ বড় অপরাধের তদন্তে বেশি মন দিতে পারবে। রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছে, ১৯৬১ সালের ‘সিঙ্গল কনভেনশন অন নার্কোটিক ড্রাগস’ অনুযায়ী উরুগুয়ে এই কাজ করতে পারে না। এ দিকে দেশের সাধারণ মানুষ তুমুল খুশি। ট্যুরিস্টদের কাছে অবশ্য এর ‘বিক্রয় নিষিদ্ধ’!

নজরবন্দি
ব্র্যাডলে ম্যানিং কে? এই সেই মার্কিন-সেনা-বিভাগের প্রাক্তন সদস্য যিনি নিয়মিত ভাবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নামক সাংবাদিকটিকে একের পর এক অত্যন্ত গোপনীয় মার্কিন গোয়েন্দা-তথ্যের ফাইল পাঠিয়ে দিতেন। তাঁর সেই প্রেরিত বিপুল তথ্যভাণ্ডারের জোরেই অ্যাসাঞ্জ দুনিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ‘উইকিলিকস্’-এর বোমায়।
অ্যাসাঞ্জ এখন লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে স্বনির্বাসিত। আর ম্যানিং? গত বছর দুয়েক তিনি আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন, অতীব নিষ্ঠুর ব্যবহার করা হত জেলে তাঁর সঙ্গে। সম্প্রতি তাঁর বিচার শেষ হল। রায় বেরোল: ১৩৬ বছরের জেল। ভয়ানক বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তিনি, তার জন্য এই শাস্তি। তবে কি না দেশের শত্রুপক্ষকে সরাসরি সক্রিয় সহায়তা করেননি, তাই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।
অবশ্য ১৩৬ বছরের নিষ্ঠুরতার জেল, নাকি মৃত্যুদণ্ড, কোনটা বেশি খারাপ, কে বলবে। এ দিকে শত্রুকে সাহায্য করেননি ম্যানিং, এমন কথা বলার পর পরই বিচারকরা জানাচ্ছেন, এত সুদূরপ্রসারী তাঁর কুকার্যের কুফল যে পাকিস্তানে বিন লাদেন-এর হত্যার পর মার্কিন সেনারা নাকি ওসামার বাড়িতে উইকিলিকস্-থেকে-প্রাপ্ত বহু নথিপত্র পেয়েছিলেন। এই দাবি দিয়ে কী প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে বোঝা কঠিন নয়। ম্যানিং শত্রপক্ষকে প্রত্যক্ষ সাহায্য না করলেও পরোক্ষ সাহায্য যথেষ্টই করেছেন! বিন লাদেনের মতো লোককে ‘সাহায্য’ করেছেন যিনি, তাঁর কি জেলে বসেও মানবাধিকার প্রত্যাশা করা সাজে? নিশ্চয়ই না! গোপন সরকারি নথি অবৈধ ভাবে সাংবাদিকদের কাছে চালান করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, মার্কিন দেশে এই আইনটি তৈরি হয়েছিল ১৯১৭-য়। প্রেসিডেন্ট ওবামার আগে মাত্র তিন বার আইনটি ব্যবহার হয়েছে। আর ওবামার আমলে? ইতিমধ্যেই সাত বার। এই সাতের এক যদি ম্যানিং হন, আর এক জন স্নোডেন। স্নোডেন পলাতক, রুশ আশ্রয়ে। ম্যানিং-এর বিচার বুঝিয়ে দেয়, স্নোডেনকে কোনও ভাবে ধরতে পারলে কী ঘটবে তাঁর কপালে!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.