জুনের প্রথম সপ্তাহেই রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন, কিন্তু পুজোর আগেও এসটিকেকে রোড সংস্কারের কাজ শুরু হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এসটিকেকে রোডের কাটোয়া থেকে ছাতনি পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। রাস্তা জুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত, বেশির ভাগ জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। ফলে প্রতিদিনের যাতায়াতে গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে বলে মালিকদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, প্রতিদিনই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। এই সমস্ত অভিযোগে কাটোয়া বাস মালিক সমিতির তরফে গত কয়েক মাসে চারবার ওই রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধও করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও প্রশাসনের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসটিকেকে রোডের ওই ১৯ কিলোমিটার সংস্কার করার জন্য রাজ্য সরকার ৩০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। মে মাসে থেকেই কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল পূর্ত দফতর। কিন্তু নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গা পেতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে পূর্ত দফতরকে চিঠি দেয় ঠিকাদার। পরে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা নিজে ঠিকাদারগোষ্ঠীকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে রাস্কা সংস্কারের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন। |
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জুনের মাঝামাঝি ছোট বড় গর্ত বোজানোর জন্য রাস্তায় ঝামা ইট ফেলা হয়, উঁচু-নীচু অংশ সমানও করা হয়। কিন্তু ওইটুকুই। তারপর থেকে আর কোনও কাজ হয়নি বলে নিত্যযাত্রী ও এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, বৃষ্টি শুরু হতেই ঝামা উঠতে শুরু করেছে। ফের গর্ত তৈরি হচ্ছে রাস্তায়। তাঁদের ক্ষোভ, এসটিকেকে রোড গ্রামের রাস্তাকেও হার মানাচ্ছে। রাস্তার বেশির ভাগ অংশ প্যচপেচে কাদায় ভরা ফলে হাঁটাই দায় হয়ে পড়েছে।
কাটোয়া বাস মালিক সমিতি তো বটেই রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ লরি মালিক সমিতিও। তারাও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়েছেন। লরি মালিক সমিতির সম্পাদক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেই ফেললেন, এটা নাকি রাজ্য সড়ক! অবস্থা যা দেখছি তাতে অজ পাড়াগাঁয়ের রাস্তার হালও এর থেকে ভাল।” অথচ ওই রাস্তা দিয়ে দূরপাল্লার বাস ও লোকাল বাস মিলিয়ে প্রতিদিন ৭০-৭৫টি বাস যাতায়াত করে। এছাড়া প্রায় চারশো মালবাহী গাড়িরও নিত্য যাতায়াত। বীরভূম থেকে বালি-পাথর এসটিকেকে রোড দিয়েই হুগলি, নদিয়া, কলকাতায় সরবরাহ করা হয়। লরি মালিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা খারাপ থাকায় এখন দিনে হাতে গোনা কয়েকটি মালবাহী গাড়ি যাতায়াত করে। বীরভূমের গাড়িগুলি ঘুরে বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াত করে। বাস মালিক ও লরি মালিক সমিতির অভিযোগ, রাস্তা সংস্কার হচ্ছে না বলে ব্যবসার যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি যাত্রী ও কর্মচারীরাও ইষ্টনাম জপতে জপতে ওই রাস্তা পার করছেন।
কিন্তু রাস্তা সংস্কারে দেরি হচ্ছে কেন? পূর্ত দফতর (সড়ক) সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের টালবাহানা থাকায় ঠিকাদারগোষ্ঠী রাস্তা সারানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। তাছাড়া ভোট শেষ হতে হতে বর্ষাও পড়ে গিয়েছে। ওই দফতরের কাটোয়ার সহকারী বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু দাশগুপ্ত বলেন, “ঝামা-মোরাম দিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযুক্ত করে দেওয়া হবে। পরে বর্ষার শেষে অর্থাৎ পুজোর সময় পুরোদমে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।” |