|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
পরিশ্রমী সম্পাদনা জরুরি |
বইপোকা |
‘‘বন্দেমাতরম্ গানটায় আমিই সুর দিয়ে, কংগ্রেসে গেয়েছিলাম। এখন কিন্তু মনে একটু সন্দেহ জেগেছে ওটা কি জাতীয় সঙ্গীত হবার উপযুক্ত? আমাদের দেশে মুসলমানের সংখ্যা কম নয়, তারা দেশকে ‘ত্বং হি দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী’ বলে সম্বোধন করবে কি করে?” স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বলিতেছেন, বনফুলকে। অন্তত তাঁহার রবীন্দ্র-স্মৃতি গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের এই কথা লিখিয়াছেন বনফুল। কিন্তু ‘এখন’ অর্থে কখন? বনফুল তারিখ লিখিয়া যান নাই। লিখিবার কথাও নহে, স্মৃতিকথা-র নির্ভার গতি তাহাতে ক্ষুণ্ণ হইত। সেই তারিখ খুঁজিয়া পাঠককে জানাইবার দায়িত্ব সম্পাদকের। বনফুল লিখিতেছেন, ‘...অবাক হয়ে গেলুম রবীন্দ্রনাথের চিঠি পেয়ে। দুর্ভাগ্যক্রমে চিঠিটি হারিয়ে ফেলেছি। তার মর্ম কিন্তু মর্মে গাঁথা আছে।...আগামী অমুক তারিখে এখানে বসন্তোৎসব হবে। তুমি সপরিবারে এলে খুশী হব।’ তারিখটি এবং অন্য বহু প্রসঙ্গ এই গ্রন্থের বাণীশিল্প-সংস্করণে টীকাবিহীন। কেবল বনফুলের টেক্স্ট এবং পিছনে কয়েকটি রবীন্দ্রপত্র ও বনফুলের রবীন্দ্র-বিষয়ক কবিতা ছাপাইয়া গ্রন্থটি সম্পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। কোনও প্রসঙ্গের কোনও টীকা নাই, বনফুল-রবীন্দ্র সন্দর্শনের কোনও দিনপঞ্জি নাই। এবং, এই প্রকারেই গ্রন্থটি ১৯৬৮ হইতে বিভিন্ন প্রকাশনায় ঘুরিয়া চলিতেছে। অথচ রবীন্দ্রসাহিত্য বিষয়ে বিবিধ বিস্তৃত প্রবন্ধরাজি প্রকাশে কোনও বিরাম নাই। ইহাতেই বুঝা যায়, যথার্থ পরিশ্রমী রবীন্দ্রগবেষণার অভাব এক্ষণে কোন পর্যায়ে গিয়াছে। সার্ধশতবর্ষের উদযাপন-উচ্ছ্বাস এক্ষণে স্তিমিত হইয়াছে। এই বার এই অভাবের কারণ বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। তাহা না হইলে দ্বিশতবর্ষে কেবল পুনর্মুদ্রণের পুনরাবৃত্তি উপচীয়মান হইবে। |
|
|
|
|
|