পঞ্চায়েত ভোট পেরনোর পরেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাজনৈতিক সন্ত্রাস অব্যাহত। বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানিংয়ের জীবনতলার তাম্বুলদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্তপল্লী এলাকায় এক সিপিএম প্রার্থীর বাড়ি ঢুকে তাঁকে মারধর ও তাঁর স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, এখনও এ ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ না হলেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোটের আগে ওই গ্রামের সিপিএম প্রার্থী অরিন্দম মণ্ডলকে তৃণমূল মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাপ দিয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু অরিন্দম গ্রামে না থাকায় তৃণমূল তাঁকে দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে পারেনি। তাঁর দাবি, ভোটে জেতার পর তিনি রাস্তায় বেরোতেই তৃণমূলের লোকজন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। অরিন্দমবাবুর অভিযোগ, “ওরা হুমকি দিচ্ছিল বলে গা ঢাকা দিয়ে ছিলাম। ভোটে কোনও প্রচারই করতে পারিনি। তা সত্ত্বেও মানুষ ভালবেসে আমাকে ভোটে জিতিয়েছেন। সেই রাগে ওরা আমার বাড়িতে মারধর ভাঙচুর করে। এমনকি, আমার স্ত্রীর শ্লীলতাহানিও করে।” তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ক্যানিং ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শওকত মোল্লা বলেন, “যারা এমন করেছে, তারা আমাদের কেউ না। আমাদের দলের বদনাম করতে কিছু সমাজবিরোধী এই কাজ করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেব।” |
ওই রাতেই পাথরপ্রতিমার জিপ্লট পঞ্চায়েতের সত্যদাসপুরেও সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে সর্ংঘষে চার জন সিপিএম সমর্থক জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের পাথরপ্রতিমা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে ওই গ্রামে সিপিএম জিতেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিয়ে এ দিন সকালে গ্রামের এক দোকানে দু’দলের মধ্যে ঝামেলা হয়। তার জেরে এক তৃণমূল সমর্থকের দোকানে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, একই শোধ নিতে রাতে গ্রামের আদিবাসীপাড়ায় চড়াও হয় তৃণমূলের এক দল সমর্থক। কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। চার সিপিএম সমর্থক আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
এলাকায় শান্তি ফেরাতে শুক্রবার দুপুরে পাথরপ্রতিমার ব্লক অফিসে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাতে এলাকার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর। বিডিও অচিন্ত্য হাজরা জানান, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে কর্মীদের সংযত থাকতে আবেদন জানানো হয়েছে। এর পর থেকে এলাকায় যাতে রাজনৈতিক সংঘর্ষ না বাধে, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বৈঠকে। |