|
|
|
|
|
|
|
নানা রকম ২... |
|
টুকরো খবর |
রবির কথায় |
|
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান ‘মুকুলিত কিশলয়’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলা। শিশু রবির একাকীত্ব, কল্পনা, দুঃখ, পিতার সঙ্গে শান্তিনিকেতন ও ডালহৌসি ভ্রমণ, শিক্ষালাভ, মার মৃত্যু শোক, বৌঠান কাদম্বরীর সাহচর্য ও ভানুসিংহের পদাবলী রচনার মাধ্যমে সাহিত্য জগতে প্রবেশ এবং এই ভাবে রবির বড় হয়ে ওঠার কাহিনি কথায় ও গানে শোনা গেল সেদিন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অনবদ্য পাঠ এবং শান্তিনিকেতনের শিল্পী শিঞ্জিনী আচার্য মজুমদারের উদাত্ত কণ্ঠের গান মন ছুঁয়ে গেল শ্রোতাদের। নতুন করে ভাল লাগল শিঞ্জিনীর কণ্ঠে ‘দূরে কোথায় দূরে দূরে’, ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’, ‘গহনকুসুম কুঞ্জ মাঝে’, ‘বিপুল তরঙ্গ রে’। এ ছাড়াও শিঞ্জিনী পরিবেশন করেন ‘আজ নবীন মেঘের’, ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা’, ‘গানের ভিতর যখন দেখি ভুবনখানি’, ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ’, ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পাঠের ফাঁকে ফাঁকে শিঞ্জিনীর গানে রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্নিগ্ধতাকে পুরো মাত্রায় খুঁজে পাওয়া গেল। শিঞ্জিনীর প্রত্যয়িত গায়নে ‘আমার সকল কাঁটা ধন্য করে’, ‘সার্থক কর সাধন’ গানগুলি মুগ্ধ করে। কৃষ্ণা রায়ের সংকলন ও বিন্যাস প্রশংসার দাবি রাখে।
|
সুরের পরম্পরা
বারীন মজুমদার |
কাজী অরিন্দম সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘সুরের পরম্পরা’ অনুষ্ঠানে একক হাওয়াইয়ান গিটার বাদন শোনালেন। পিতার অকাল প্রয়াণে যে যন্ত্রটি তিনি হারিয়ে যেতে দেননি তাকে যে সুরের মাধুর্যে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাই শোনা গেল এ দিন। হৈমন্তী শুক্ল যথার্থই বলেছেন গানও অনেক সময়ই তাঁর বাজনার কাছে হার মেনে যায়। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি ও মূলত ষাট সত্তর দশকের কিছু বাংলা ও হিন্দি গানের চয়নে এ দিন তিনি অনুষ্ঠান সাজিয়েছিলেন। দুর্বাদল চট্টোপাধ্যায়ের সহযোগী যন্ত্রসঙ্গীত পরিচালনায় সঙ্গে ছিলেন সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় (অক্টোপ্যাড), গৌতম সোম, কুনাল দাস (সিন্থেসাইজার), জয় নন্দী (তালবাদ্য), রাজু চট্টোপাধ্যায় (স্প্যানিশ গিটার) ও অঙ্কন রায় (বেস গিটার)। শুরু করলেন মিশ্র মালকোশে আধারিত রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’ দিয়ে। পরেই বাজালেন আহির ভৈরবে নিবদ্ধ নজরুলগীতি ‘অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারী’। এই ভাবে একের পর এক এল ‘এ কী লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ’, ‘শাওন রাতে যদি’, ‘এ শুধু গানের দিন’, ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা’। কাজী অনিরুদ্ধ যথার্থই আখ্যা দিয়েছিলেন ‘সিংগিং গিটার’। সঞ্চালনায় ছিলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ও অভীপ্সা কাজী।
|
সব গানেই পারদর্শী |
রোটারি সদনে আধুনিক, রবীন্দ্রসঙ্গীত, দ্বিজেন্দ্রগীতি শোনালেন স্বরূপ পাল। শিল্পীর ভরাট গলায় ‘ওই মহা সিন্ধুর ওপার থেকে’ গানটি শ্রোতাদের মনে থাকবে বহু দিন। যে কোনও গানেই স্বরূপ কতটা পারদর্শী তা প্রমাণ করলেন পরের আধুনিক গানেই ‘তুমি কি এখন’ শুনিয়ে। আরও দু’টি আধুনিক গানও শুনিয়েছেন তিনি। ‘সারা দিন তোমায় ভেবে’, ও ‘কফি হাউসে’। শিল্পীর চয়নে রবীন্দ্রসঙ্গীতও ছিল। ‘আমায় থাকতে দে না’, ‘স্বপনে দোহে’ অপূর্ব মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন শিল্পী।
|
প্রকৃতি ও রবীন্দ্রনাথ |
নান্দীমুখ আয়োজিত রবীন্দ্রসন্ধ্যায় একক রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনালেন সুকন্যা নাথ। পাঠে ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী। গ্রন্থনায় বাণী বসু। সুকন্যার কণ্ঠে ‘না বুঝে কারে তুমি’, ‘তুমি যেও না’, ‘ওগো আমার’, ‘নীলাঞ্জনছায়া’ অন্য মাত্রা পায়। বর্ষার গানে রবীন্দ্রনাথ যে ভাবে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন তেমনটা বোধহয় আর কোনও ঋতুর গানে নয়। ‘আজি ঝড়ের রাতে’, ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’ প্রভৃতি গানগুলি যেন আরও বেশি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে শিল্পীর কণ্ঠে।
|
প্রাণবন্ত নৃত্য
স্বাতী বসু |
|
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে গুরু গিরিধারী নায়েকের পরিচালনায় ‘ওড়িশি আশ্রম’ উপস্থাপন করল এক ওড়িশি সন্ধ্যা। ওড়িশি নৃত্যধারার রীতি অনুসারে অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘মঙ্গলাচরণ’ বা ‘ত্রিখণ্ডী প্রণাম’ নয়নাভিরাম হয়ে উঠেছিল। নতুন ভাবে উপস্থাপিত ‘মঙ্গলাচরণ’ গিরিধারী নায়েকের সৃজনশীলতার পরিচায়ক। ‘মোহনা’য় তিথি দাস বেশ প্রাণবন্ত। তান ও বোল সহযোগে নজরুলগীতি ‘শ্যামাতন্বী আমি’র ওড়িশি আঙ্গিকে নৃত্যরূপে সুজাতা নায়েক অনবদ্য। ভীষণ পরিচ্ছন্ন সুজাতার মুদ্রা। ওঁর স্নিগ্ধ অভিনয় ভাবও রসসমৃদ্ধ। গিরিধারী নায়েকের সুযোগ্যা কন্যা সুজাতা দর্শকের আশা বাড়িয়ে দিয়েছেন। মনে থেকে যাবে শিশুশিল্পী অহনা বসুর ‘অভিনয়’। প্রিয়া সরকার ও সুমেধা সেনগুপ্তের ‘অরুণকান্তি কে গো’, মহাশ্বেতা মজুমদার গুপ্তের ‘বৈঠে সোচে ব্রিজবান’ শিল্পীদের স্বকীয়তা ও দক্ষতার স্বাক্ষর বহন করে। সর্বশেষ ‘শিবতাণ্ডব’-এ সুজাতা সহ মেঘলীন দাস পুরকায়স্থ ও পৃথা দাস মহাপাত্র দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন। অনুষ্ঠানে পাখোয়াজ সহযোগে ছিলেন গিরিধারী নায়েক। কণ্ঠসহযোগে দেবাশীষ সরকার।
|
শুধু দশটি চিঠি, দশটি গান
শিখা বসু |
রবীন্দ্রজীবনে নারীপ্রবাহ অবিরল। ‘সে নারী বিচিত্রবেশে মৃদু হেসে খুলিয়াছে দ্বার’। কখনও সে নারী মরাঠি মেয়ে আনা, কখনও নতুন বৌঠান, কখনও বিলেতের লুসি কিংবা জাপানের তোমি বা কাশীর রানু। এমনই দশ জন নারীকে বেছে নিয়ে বাচিক শিল্পী কাজল সুর সম্প্রতি নিবেদন করলেন ‘দশ নারীর হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ’ (পৃথ্বীরাজ সেন)। গানে, পাঠে, নৃত্যে সমৃদ্ধ এই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের মূল দায়িত্বে ছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুছন্দা ঘোষ ও অনন্যা ঘোষ। ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ সুছন্দার কণ্ঠে এক বিশেষ প্রাপ্তি। দশ নারীর দশটি চিঠিতে মনের ভাব প্রকাশ করেন সুস্মেলী দত্ত (কাদম্বরী দেবী), অপর্ণা লাহা, পূজা লাহা, সীমিকা রায়, তাপসী, প্রিয়াংকা, রেবেকা, প্রিয়দর্শিনী, মালবিকা ও কাকলি। সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিচালনা সহ ভাষ্য পাঠের দায়িত্বে ছিলেন কাজল সুর। দশটি রবীন্দ্রগান, দশটি চিঠি এবং নৃত্যের এই সংকলনটি শ্রোতাদের কাছে সত্যিই খুব উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল।
|
অন্য মাত্রায় |
সম্প্রতি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী স্বাতী পাল শোনালেন বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত।
এ দিন শুরু করলেন ‘বাজো রে বাঁশরি’, ‘এসো এসো আমার ঘরে’ গান দু’টি দিয়ে। মধুমিতা বসু ও রেশমি চট্টোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় শিল্পীর গাওয়া সেই সব গানেরই সূত্র ধরিয়ে দেওয়ায় অনুষ্ঠানটির মাধুর্য এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। পরবর্তীতে শোনা গেল আরও সাতটি গান। এই গানগুলিও ছিল শিল্পীর নিজস্ব চয়ন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘প্রেমের মিলন দিনে’, ‘আমার মল্লিকা বনে’, ‘আমরা দু’জনা’, ‘ওগো কাঙাল’ প্রভৃতি। শেষ তিনটি গানে শিল্পীর চূড়ান্ত আবেগ পৌঁছে যায় ‘আমার প্রাণের পরে’, ‘ভরা বাদরে’, ‘বসন্তে বসন্তে’। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন রামকুমার মুখোপাধ্যায়। |
|
|
|
|
|