হাতি নিয়েও হস্তক্ষেপ করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার গদারডিহি গ্রামের বাসিন্দা, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শিল্পী কর্মকার ২৭ মে নিজের গ্রামের হাতি সমস্যা নিয়ে মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখেছিল। চিঠির প্রেক্ষিতে বন দফতরকে এলাকার অবস্থা দেখে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কমিশনের রেজিস্ট্রার, বিচারক রবীন্দ্রনাথ সামন্ত বলেন, “শিল্পী লিখেছিল, হাতির উপদ্রবে তার ও এলাকার অন্য পড়ুয়াদের স্কুল বা টিউশনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায় ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর)-কে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।” |
বড়জোড়া রেঞ্জের সরাগড়ার জঙ্গলে থাকা গোটা ১২ রেসিডেন্ট হাতি জঙ্গল সংলগ্ন গদারডিহি, সংগ্রামপুর, হরেকৃষ্ণপুর, ঝরিয়া, লক্ষ্মীনারায়ণপুরের মতো কিছু গ্রাম দাপিয়ে বেড়ায়। বাদ যায় না বড়জোড়া ব্লক সদরও। বিক্ষোভ, পথ অবরোধ, বনদফতরের অফিস ঘেরাওহাতির উপদ্রব ঠেকাতে আন্দোলনও হয়েছে। সমস্যার মেটেনি। শেষে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল শিল্পী। কমিশনের হস্তক্ষেপেই একটা বিহিত হবে বলে আশা গ্রামবাসীদের। শিল্পীর কথায়, “দিনের পর দিন আমাদের ভয় বাড়ছে। হাতি লোকও মারছে। এর থেকে মুক্তি পেতেই আশা নিয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলাম। কাজ হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। তবে যেদিন সত্যিই সমস্যা মিটলে আমাদের হাসি ফুটবে।” ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) সুধীরচন্দ্র দাস বলেন, “বড়জোড়া রেঞ্জে হাতির সমস্যা রয়েছে। তা মোকাবিলায় সচেষ্ট রয়েছি। গ্রামে গ্রামে হুলা পার্টিও গড়া হয়েছে। তবে মানবাধিকার কমিশনের কোনও চিঠি আমার কাছে এখনও আসেনি।”
হাতি নিয়ে নাজেহাল বাঁকুড়ার পাশের জেলা পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরও। বিষ্ণুপুর রেঞ্জ থেকে মঙ্গলবার ভোরে একটি ঢোকে রঘুনাথপুরের গড় পঞ্চকোট পাহাড়ের নীচের জঙ্গলে। হাতিটি উপদ্রবও করছে। হাতিটিকে ঘরমুখো করতে এসেছেন বিষ্ণুপুরের ১৫ হুলাকর্মী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাতি হঠাৎ পথ পাল্টে পাহাড়ের কাঁচা রাস্তা ধরে উপরে ওঠায় শুরু বিপত্তি। শুক্রবার বিকেলে দেখা যায়, হাতিটি প্রায় দেড় হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ে রয়েছে। সেটিকে নামাতে হিমশিম খাচ্ছেন বনকর্মীরা। মশাল জ্বেলে, পটকা ফাটিয়ে ভয় দেখিয়ে হাতিটিকে নামানোর চেষ্টা চলছে। হুলাপার্টির প্রধান নুর ইসলাম মণ্ডল তাই বলছেন, “অন্ধ্রপ্রদেশ ও উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে হাতি তাড়াতে গিয়ে দেখেছি, পাহাড়ে হাতি উঠলে তাকে নামানো কঠিন। ভাল খাবার পেয়ে গেলে থিতু হয়ে যেতে চাইবে।” |