দেশে ফিরতে চান সিরিয়ার শরণার্থীরা
ভোল পাল্টে উদ্বাস্তু শিবির আজ জর্ডনের বড় শহর
মাত্র আট মাইল দূরের সীমান্তর সঙ্গে দূরত্বটা যেন বহু আলোকবর্ষের!
তাই বোধহয় চেয়েও সেই দূরত্ব পার করে উঠতে পারছেন না জর্ডনের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় এক লক্ষ ষাট হাজার সিরিয়াবাসী। প্রত্যেকেই দেশ ছেড়েছিলেন ভয়ানক গৃহযুদ্ধের কোপ এড়াতে। তা-ও প্রায় বছর দুয়েক আগের কথা। কিন্তু সময় বদলালেও দেশের অবস্থায় বিশেষ কিছু পরিবর্তন আসেনি। অগত্যা জর্ডনের জাতারি উদ্বাস্তু শিবিরেই দিন কাটছে তাঁদের।
মাত্র আট মাইল দূরে সিরিয়ার সীমান্ত। অথচ সেই দূরত্ব পার করতে যেন মন চায় না। ভয়, আতঙ্ক আর একরাশ ক্ষোভ নিজের দেশের সঙ্গে দূরত্বটা যেন বাড়িয়েই চলেছে।
তবে আপাতদৃষ্টিতে সে যন্ত্রণার কিছুই নজরে আসে না।
জর্ডনের সেই জাতারি উদ্বাস্তু শিবির। শুক্রবার। ছবি: এপি
প্রায় তিন বর্গমাইল জোড়া জাতারি উদ্বাস্তু শিবির ইতিমধ্যেই আয়তনে জর্ডনের পঞ্চম বড় শহর। রাষ্ট্রপুঞ্জ সাহায্যের হাত বাড়ানোয় সে শহরের চেহারা-ছবি আর পাঁচটা শহরের মতোই। শহরের প্রধান সড়ক ‘শ্যাম্পস এলিসিজ’-এর উপর তৈরি হয়েছে অন্তত হাজার তিনেক ছোট-বড় দোকান, রকমারি রেস্তোরাঁ, খাবারের ছোট্ট দোকান। রয়েছে ট্যাক্সি পরিষেবা, স্কুল, ফুটবলের ময়দান, হাসপাতাল। শিবিরের গভীরে ঢুঁ মারলে যে কোনও বড় শহরের চেনা ছবিটাই উঠে আসবে সাধারণ পর্যটকের সামনে। রাষ্ট্রপুঞ্জের যে সব অফিসারেরা এই শিবির চালানোর দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের বয়ানে, ভিন্দেশে থাকতে থাকতে গৃহযুদ্ধ তথা নারকীয় অত্যাচারের বিভীষিকা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন শিবিরের বাসিন্দারা।
আদৌ বাস্তবটা কি তাই? সম্প্রতি ওই শিবিরের ক’জন শরণার্থীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন আমেরিকার বিদেশসচিব জন কেরি। তাঁর সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। অনুরোধ জানিয়েছেন, অবিলম্বে অতর্কিত হামলা ঠেকাতে সিরিয়ায় একটি ‘নো ফ্লাই জোন’ নির্দিষ্ট করুক আমেরিকা। সাধারণ বাসিন্দাদের বাঁচাতে সে দেশে নিরাপদ এলাকা তৈরি করতেও আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন তাঁরা।
কেরি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
কিন্তু তাতে ক্ষোভ কমেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিবিরের এক মহিলা বাসিন্দার বয়ানে, “আপনারা ইজরায়েলকে সম্মানের চোখে দেখেন। সিরিয়ার বাসিন্দাদেরও কি ওই ভাবে ভাবতে পারেন না?”
তিনি আরও বলেন, “আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। সে দেশ চাইলে আপনি (কেরি) দেশে ফেরার আধ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়ার ছবিটা বদলে যাবে।” কেরির উদ্দেশে মহিলার সতর্কবাণী, “রমজান শেষ হওয়ার আগে পরিস্থিতি না বদলালে এই ক্যাম্প খালি হয়ে যাবে। আমরা সিরিয়ায় ফিরে যাব, ছুরিকে হাতিয়ার করে লড়ব আগ্নেয়াস্ত্রর সামনে।” হেলিকপ্টারে করে গোটা ক্যাম্পের ছবিও দেখেন কেরি। দেখে শুনে তাঁর মন্তব্য, “সমস্ত কিছু জেনেও গোটা বিশ্ব বিষয়টায় হস্তক্ষেপ করছে না, সে নিয়েই ক্ষুব্ধ ওঁরা।”
বাস্তবিক। দু’বছর ধরে উদ্বাস্তুর জীবন কাটাচ্ছেন তাঁরা। কবে যে সেই জীবন শেষ হবে, তা জানা নেই। ভিন্দেশে যতই ভাল থাকার চেষ্টা করুন, নিজের দেশে ফেরার ইচ্ছা স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র।
তবে আট মাইল দূরত্ব পার করে ঠিক কবে দেশে ফিরতে পারবেন তাঁরা, তা শুধু সময়ই জানে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.