পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরনোর পরে রাজ্যের নানা প্রান্তে রাজনৈতিক হিংসার বিরাম নেই।
উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ অশান্তির ছবিটা প্রায় একই রকম। এমনকী, কলকাতা লাগোয়া রাজারহাটেও এসে পৌঁছেছে সেই অশান্তির আঁচ।
বুধবার রাতে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের আলমগঞ্জে এক কংগ্রেসি পরিবারের বাড়িতে চড়াও হয় জনা কয়েক যুবক। হামলায় দুই প্রসূতি-সহ ১০ জন জখম হন। ওই দুই মহিলাকে মালদহ মেডিক্যালে এবং বাকিদের হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “সিপিএম জেলা পরিষদে ১৬টি আসন পাওয়ার পরে সন্ত্রাস শুরু করেছে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে না।” অভিযোগ উড়িয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র দাবি করেছেন, “আমাদের কেউ হামলায় জড়িত নয়।”
আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়িতে বুধবার রাতে সিপিএমের দু’টি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার আগে তৃণমূলও তাদের এক সমর্থকের উপরে হামলার অভিযোগ তোলে সিপিএমের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়, ডেবরা, শালবনি-সহ কয়েকটি এলাকায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। |
ওই রাতেই সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে তেতে ওঠে শান্তিপুরের বেলঘরিয়া-২ পঞ্চায়েতের দিব্যডাঙ্গা গ্রাম। জখম আট জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ সিপিএমের ফুলিয়া লোকাল কমিটির সদস্য সুশীল শীলকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়ি থেকে বোমা-গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ তৃণমূলের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএম। জখম হন কয়েক জন। সাদ্দাম মোল্লা নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে তিন সিপিএম কর্মীর দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে।
রাজারহাটের জ্যাংড়া হাতিয়ারা-২ পঞ্চায়েতের সুলঙ্গরিতে রবীন মল্লিক নামে এক কংগ্রেস নেতার বাড়ি এবং ওই দলের একটি কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে আবার ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার ভাঙ্গামালি এলাকায় ফরওয়ার্ড ব্লকের ময়নাগুড়ির জোনাল সম্পাদক গোপাল সরকারকে এক দল তৃণমূল সমর্থক লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। সিউড়ির কড়িধ্যা হাটতলায় এক বিজেপি কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে এক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি দুপুরে কড়িধ্যা মোড়ে অবরোধ করে। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তিতে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হন ১২ জন। |