সুদীপদের পাশেই শিবসেনা-অগপ
পাহাড় প্রশ্নে শিন্দেকে তির তৃণমূল সাংসদদেরও
কেন্দ্রীয় সরকার তথা কংগ্রেস দার্জিলিঙে নতুন করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বলে আজ ফের অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। গত কাল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছিলেন, আজ সেই সুরেই দিল্লিতে সর্বদল বৈঠকে তৃণমূল সাংসদরাও জানালেন, এ নিয়ে তাঁরা সংসদে সরব হবেন। তাঁদের হুমকি, পশ্চিমবঙ্গ বিভাজনের চক্রান্ত বন্ধ না হলে তাঁরা আসন্ন বাদল অধিবেশন অচল করে দেবেন।
মমতা তথা তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে। মমতার অভিযোগ ছিল, মোর্চা নেতাদের দিল্লি ডেকে পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বলেছেন, দার্জিলিঙকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হবে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এমন কোনও প্রতিশ্রুতি তিনি দেননি। শিন্দের কথায়, “আমি সকলের কথাই শুনি। কাউকে কোনও প্রতিশ্রুতি দিই না।” শিন্দের বক্তব্য, পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে রাজ্য সরকারের পাশেই থাকতে চায় কেন্দ্র। তাই রাজ্য পাহাড়ের জন্য যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল, তা দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোর্চাকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিলেন মমতা। আজ সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল নেতারা এ নিয়ে সরব হওয়ার পরে শিন্দে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান, যদি কোনও নেতা বা প্রতিনিধি দল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান, তা হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাঁদের বাধা দেওয়ার কোনও উপায় নেই। পরে সুদীপ বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমায় ডেকে জানিয়েছেন যে, বিষয়টি কী ভাবে স্পষ্ট করা যায়, তা তাঁরা ভেবে দেখবেন। খুব শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।” শিন্দে পরে বলেন, “যাঁরা পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাঁরা গণতান্ত্রিক পথে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় প্রদর্শন করুন। কেন্দ্র সকলের কথা শোনার জন্য প্রস্তুত।”
সর্বদল বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল ও বাম নেতারা।ছবি: পিটিআই
তেলেঙ্গানার ঘোষণার পরে শুধু গোর্খাল্যান্ড নয়, বড়োল্যান্ড, বিদর্ভ, বুন্দেলখণ্ড, হরিৎপ্রদেশের মতো একাধিক পৃথক রাজ্যের দাবি উঠেছে। আজকের বৈঠকে সুদীপ অভিযোগ করেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে তেলেঙ্গানার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বিভিন্ন রাজ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে। বৈঠকে তৃণমূলের বক্তব্যকে সমর্থন জানায় শিবসেনা এবং অসম গণ পরিষদ। বিরোধীদের বক্তব্য, তেলেঙ্গানা গঠন করে কেন্দ্র বার্তা দিয়েছে যে, যারা বেশি আন্দোলন করবে, তারাই পৃথক রাজ্য পাবে। তাই বাকিরাও আন্দোলনে নেমেছে।
শিবসেনা ও অগপ নেতারা জানান, বিদর্ভের দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। অসমে বড়োল্যান্ডের দাবিতে এক হাজার ঘণ্টার অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। শিন্দের যুক্তি, সকলের দাবি ও ক্ষোভের কথা শুনতে কেন্দ্র তৈরি। যেখানে প্রয়োজন মনে হবে, সেখানে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এখনই যে কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, তার ইঙ্গিত দিয়ে শিন্দে বলেন, “দ্বিতীয় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠনের বিষয়টিও এখন আলোচনার মধ্যে নেই।”
তৃণমূল নেতারা অবশ্য নিজেদের অভিযোগ থেকে সরছেন না। সুদীপ ছাড়াও তৃণমূলের তরফে আজকের বৈঠকে ছিলেন রাজ্যসভার দুই সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এবং কে ডি সিংহ। সুদীপের কথায়, “আমি জানতে চেয়েছি যে, রাজ্যকে না জানিয়ে দার্জিলিঙের নেতাদের বারবার এখানে ডেকে পাঠানোর মানে কী?”
সুখেন্দুবাবু শিন্দেকে জানান, দার্জিলিং নিয়ে কেন্দ্র কী চাইছে, তা স্পষ্ট করে জানাক। তাঁর কথায়, “আমাদের কাছে খবর রয়েছে, তেলেঙ্গানা ঘোষণার ঠিক এক সপ্তাহ আগে পাহাড়ের নেতাদের ডেকে গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।” শিন্দে এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, তেলেঙ্গানার সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলির দাবির সম্পর্ক নেই। তেলেঙ্গানার দাবি সবথেকে পুরনো।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.