গ্রামের বাইরে যেতে গেলে নদী পার হতেই হবে। এ ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে কাটিয়ে আসছেন মহম্মদবাজার ও সাঁইথিয়া ব্লকের ১১টি গ্রামের বাসিন্দারা। বর্ষার সময় যাতায়াতের সমস্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর বন্যা হলে তো কথাই নেই। কুলতোড়, নহসিংহপুর-সহ ওই ১১টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত রাজনৈতিক দলগুলিও। সমস্যা মিটছে না।
তিলপাড়া জলাধারের পর ময়ূরাক্ষ্মী নদী যেখানে দু’ভাগ হয়েছে তার সামনের গ্রামগুলি (দুমোহিনী, মাঝিপাড়া, ভেজেনা, বেহিড়া, নরসিংহপুর, শিমুলিয়া, নামোবড়াম, উপবড়াম, বেহিড়া, কাঠুনিয়া) মহম্মদবাজার ব্লকের মধ্যে পড়ে। ঘাষবেড়া, গোবিন্দপুর, কুলতোড় সাঁইথিয়া ব্লকের অধীন। তাঁদের অবস্থার কথা তুলে ধরলেন গোবিন্দপুরের আবুল কালাম। তিনি বলেন, “আমাদের কী দুর্দশা ভাবতে পারেন। নদীর কথা মাথায় রেখে আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহে মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু এমনই ভাগ্য যে, ওই সময় বৃষ্টিতে নদী ভরে গেল। বর্ধমানের পান্ডবেশ্বরে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পাত্রপক্ষ নদীর কাছে এসে আটকে পড়ে। কোথাও নৌকা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত গুড়ের গড়াইয়ের খোঁজ করা হয়। তা আনতে আনতে ৪-৫ ঘণ্টা লেগে গেল। যা অবস্থা তাতে এই গ্রামের ছেলেমেয়েদের বাইরে বিয়ে দেওয়া খুবই কষ্টের।”
ওই সব গ্রামের সমীর পাল, লক্ষ্মণচন্দ্র মণ্ডল, রেজিনা বিবি, মহম্মদ মোস্তাফার আক্ষেপ, “দীর্ঘদিন থেকে প্রশাসনের কাছে একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসছি। সকলেই দেখছি দেখছি করে কাটিয়ে দিচ্ছেন। বাস্তবে কেউ কিছুই করে না। আসলে আমাদের এই গ্রামগুলির দিকে ফিরে তাকানোর সময় নেই প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে নেতামন্ত্রীদের। এলাকার সিপিএম বিধায়ক ধীরেন বাগদির কাছে একাধিকবার সেতুর দাবি জানিয়েছি। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” তাঁদের প্রশ্ন, “অসুখ হলে প্রয়োজনে সাঁইথিয়া বা সিউড়ি নিয়ে যাব কী করে বলতে পারেন? এলাকার ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করবে কী করে? অন্য সময় প্রয়োজনে একটা নৌকা খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ ভোটের সময় প্রশাসনের তরফে নৌকার ব্যবস্থা করে রাখা হয়।” ধীরেন বাগদি বলেন, “ওখানে সেতুর খুবই প্রয়োজন। ইতিপূর্বে বিধানসভায় বলেছি। যাতে সেতু হয় ফের বিধানসভায় বিষয়টি তুলব।” |