ক্যারিবিয়ানে পাকিস্তানের সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই গড়াপেটার অভিযোগ নিয়ে তুলকালাম। সন্দেহ করা হচ্ছে ৩-১-এ জেতা পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচ ম্যাচের একদিনের সিরিজের বেশ কয়েকটি ম্যাচে গড়াপেটা করা হয়েছে। ব্রিটিশ মিডিয়ার এমন দাবি ওঠার পরই বিতর্কের ঝড় বইছে। মিডিয়ায় এও বলা হয়েছে, আইসিসি-র দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারদেরও নাকি বেশ কয়েকটি ম্যাচ সন্দেহজনক লেগেছে। যে সন্দেহের পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
• পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বৈধ বেটিং সংস্থাতেও যে ভাবে বেটিং করা হয়েছে তা সন্দেহজনক। অপ্রত্যাশিত কোনও ফলের আগেই একসঙ্গে প্রচুর অর্থের বেটিং হয়েছে।
• সিরিজে বেশ কয়েক বার ‘পাঁচ ওভারের ব্র্যাকেট’-এ কখনও রান প্রায় ওঠেইনি। আবার অনেক সময় এক ওভারেই রানের বন্যা বয়ে গিয়েছে।
• পঞ্চম ওয়ান ডে-তে ক্যারিবিয়ান ইনিংসে ২৯-৩৪ ওভারে ২ রান ওঠে। এর পর শুধু ৩৫তম ওভারেই ওঠে ১৬ রান। ব্যাট করছিলেন ক্রিস গেইল আর মার্লন স্যামুয়েলস। এই স্যামুয়েলসকেই ২০১০-এ টিমের গোপন তথ্য পাচার করার অভিযোগে দু’বছর নির্বাসিত করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড।
• তৃতীয় ওয়ান ডে টাই হবে, এই বাজি রেখে বেটিং হয়েছে কোটি কোটি পাউন্ড। ওই ম্যাচে শেষ ওভারে ওয়াহাব রিয়াজের ৬ বলে ১৪ রান নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান জেসন হোল্ডার।
• পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবা উল হকের ফিল্ডিং সাজানো নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তৃতীয় ওয়ান ডে-র শেষ ওভারের ফিল্ডিং দেখে ‘অবিশ্বাস্য’ লেগেছিল প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান পেসার ও ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপেরও। |
আইসিসি যদিও এই ব্যাপারে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। আইসিসি দুর্নীতি দমন শাখা জানিয়েছে, “কোনও বিষয়ে তদন্ত চললেও তা নিয়ে মন্তব্য করার আমাদের নীতি নেই।’’
তবে, অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি পাকিস্তান বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে এই বিষয়ে তারা চিন্তিত। আইসিসি-র সঙ্গেও পাক বোর্ডের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে। রাতে জানা গিয়েছে, পাক বোর্ড পুরো ব্যাপারটা তদন্ত করে দেখবে।
ক্যারিবিয়ানে সফরকারী পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট যদিও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। বোর্ডের ফতোয়া থাকায় কোনও ক্রিকেটার এই নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি। তবে পাক টিম ম্যানেজমেন্টের এক অফিসিয়াল পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “বাড়াবাড়ির চূড়ান্ত। প্রত্যেক বার যখনই আমাদের টিম ভাল খেলে, একটা সিরিজ জেতে এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়। আমাদের ক্রিকেটারদের মনোবল নষ্ট করার জন্যই এই অভিযোগ করা হচ্ছে।”
পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক রশিদ লতিফ আবার বলেছেন, “ব্রিটিশ মিডিয়ার এই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বোর্ডের।” আর এক প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার মহসিন খান বলেছেন, “আইসিসি সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি এই ব্যাপারে। কোনও জোরালো প্রমাণও নেই। তার পরও এই অভিযোগে যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে। গোটাটাই দুর্ভাগ্যজনক।”
আইসিসি-র তিন টেস্ট খেলিয়ে দেশের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএল, বিপিএল আর এসএলপিএল-এ গড়াপেটার জেরে এমনিতেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে উপমহাদেশের আবহাওয়া। এর মধ্যে পাকিস্তান দল নিয়ে নতুন গড়াপেটা বিতর্ক তৈরি হওয়ার পরিণতি শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায় এখন সেটাই দেখার। |