আফ্রিকা এবং ইউরোপ দুই মহাদেশে ক্রিকেটীয় মিল বিশেষ নেই। পরিবেশ ভিন্ন। বাইশ গজের চরিত্র ভিন্ন। কিন্তু বিলেতের সুইং-বন্ধু উইকেট হোক কিংবা আফ্রিকার মাটিতে জিম্বাবোয়ের মহড়ায় নেমে পড়া তাঁর পারফরম্যান্স বদলাচ্ছে না।
তিনি শিখর ধবন। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘গব্বর’ এখন ‘সিংহ’-ও বটে!
পরিস্থিতি সহজ হোক কিংবা প্রতিকুল, প্রতিপক্ষ রাতারাতি ‘ডেভিড’ থেকে আচমকা ‘গোলিয়াথে’ রূপান্তর ঘটানোর মরিয়া চেষ্টায় নামুক চাই না নামুক, ধবনের কিছুতেই কিছু এসে যাচ্ছে না। শুক্রবার যে জিম্বাবোয়েকে ৫৮ রানে হারিয়ে ভারত সিরিজে ২-০ এগিয়ে থাকল, তারা আজ বিশ্বের অন্যতম দুর্বল দলের মতো খেলেনি। বরং সদ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়ী টিমকেও সময় সময় যথেষ্ট বেকায়দায় ফেলেছে। কিন্তু অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের দেশের দুর্ভাগ্য তাদের টিমে কোনও ধবন ছিল না। যিনি ৬৫-৪ থেকে টিমকে পৌঁছে দেবেন প্রায় তিনশো রানের নিরাপদ আশ্রয়ে। এবং আফ্রিকা মহাদেশেও সেঞ্চুরি করে বুঝিয়ে দেবেন, তিনি ক্রিকেট বিশ্বে থাকতেই এসেছেন। যে কোনও উইকেটে সফল হওয়ার ক্ষমতা রেখে। |
শিখর ধবন: ১২৭ বলে ১১৬। শুক্রবার হারারেতে। ছবি: এপি |
সতেরোটা ওয়ান ডে খেলে ধবনের তৃতীয় সেঞ্চুরি হল। কিন্তু পরিতৃপ্তির দিক থেকে হারারের সেঞ্চুরি উপরের দিকেই থাকা উচিত। একটা সময় পরপর উইকেট পড়ছিল ভারতীয় টপ অর্ডারে। রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে অধিনায়ক বিরাট কোহলি কেউ এ দিন সুবিধা করতে পারেননি। বিরাট আউট হয়ে তো আবার মাঠে বিতর্কও বাঁধিয়ে গেলেন এবং ভারত আচমকাই ৬৫-৪। ওই অবস্থায় দরকার ছিল ঠান্ডা মস্তিষ্কের, যা ভারত পেল এক নয়, একজোড়া। ধবনের ১২৭ বলে ১১৬ (১১X৪, ২X৬) বাড়তি প্রশংসার নিশ্চয়ই দাবি রাখে। পরে ধবন বলছিলেন, “আজ আমার ভাগ্য ছিল সঙ্গে। দু’বার কানায় লেগেও ক্যাচ পড়েছে। আজ ব্যাট করা সহজ ছিল না দীনেশ আর আমার পক্ষে। কিন্তু উইকেটে পড়ে থেকেছি। আশা করছি বহু দিন ধরে আমি ভারতীয় ক্রিকেটের কাজে আসব।” কিন্তু দীনেশ কার্তিকও (৬৯) কিছু কম যাননি। ধবনের সঙ্গে তাঁর ১৬৭ রানের পার্টনারশিপ না হলে বিরাট আজ দিনের শেষে মুখে হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়তেন কি না, কে জানে!
ঘাড়ের উপর ২৯৪ রানের বোঝা থাকলে, বিশ্বের শক্তিশালীদেরই অস্বস্তিতে দেখায়। সাধারণ বুদ্ধিতে সেখানে জিম্বাবোয়ে আর কী বস্তু! কিন্তু দেখা গেল, ধবন-ধমাকার থেঁতলানির পরেও তারা পাল্টা যুদ্ধের রাস্তা থেকে সরে আসেনি। এক উইকেট হারিয়ে একশো রানও তারা তুলে ফেলে। বাকি তিরিশ ওভার। কিন্তু ফ্লাওয়ার-ভাইদের আমলে জিম্বাবোয়ে ব্যাটিং লাইন আপে যে কাঠিন্য দেখা যেত, সিবান্দাদের জমানায় তা আর নেই। তাই উতসেয়া (৫২ ন:আ:), সিবান্দাদের (৫৫) লড়াই স্রেফ ‘চেষ্টা’ হিসেবেই থেকে গেল। তবু জিম্বাবোয়েকে অলআউট করা যায়নি। চাপেও পড়েছে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ।
তা হলে কী দাঁড়াল? হারারেতে দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের জয় এল, কিন্তু বিরাটদের ‘মজা করা’ হল না!
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ২৯৪-৮ (শিখর ১১৬, কার্তিক ৬৯, ভিটোরি ২-২৭)
জিম্বাবোয়ে ২৩৬-৯ (সিবান্দা ৫৫, উনাদকট ৪-৪১, মিশ্র ২-৪৬, সামি ১-৫২)
|
সিএসকে-তে ধোনি আছে বলেই আমাকে আক্রমণ: শ্রীনিবাসন
সংবাদসংস্থা • চেন্নাই |
টি এন নারায়ণস্বামী বক্তৃতা মঞ্চে এন শ্রীনিবাসন। শুক্রবার চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই |
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জন্যই দেশের ক্রিকেটমহলে তাঁর আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংসের প্রতি এত ঈর্ষা, ধারণা এন শ্রীনিবাসনের। ধোনি তাঁর চেন্নাই দলের ক্যাপ্টেন বলেই নাকি তিনি সকলের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠেছেন। শুক্রবার চেন্নাইয়ে এক অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করেছেন আপাতত নির্বাসিত ভারতীয় বোর্ড সভাপতি। তবে বোর্ডের সর্বোচ্চ পদে নিজের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন নিয়ে একটি কথাও বলেননি শ্রীনি। তাঁর জামাই গুরুনাথের বিরুদ্ধে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ। এ জন্য গ্রেফতারও হতে হয় গুরুনাথকে। জামাইয়ের এমন কার্যকলাপের জন্য নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে বোর্ড থেকে আপাতত সরে যেতে বাধ্য হওয়া শ্রীনিবাসন এ দিন এক কলেজের অনুষ্ঠানে সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, “চেন্নাই সুপার কিংসকে সবাই এত ঈর্ষা করে কেন জানেন? ধোনির জন্য। আমার উপর এত আক্রমণ কেন জানেন? কারণ, আমার দলে ধোনি আছে।” তবে সারা অনুষ্ঠানে একবারও বিসিসিআই-এর কার্যকলাপ নিয়ে মন্তব্য করেননি তিনি। ধোনি বন্দনাতেই ব্যস্ত ছিলেন। “ধোনি অসাধারণ নেতা ও সৃষ্টিশীল অধিনায়ক। মাঠে কখনও নিজের আবেগ প্রকাশ করে না। খুব বুদ্ধিমান ক্রিকেটার অথচ অতিসাধারণ মানুষ। গ্যারি কার্স্টেন একবার আমাকে বলেছিলেন, ক্যাপ্টেন হিসেবে ধোনির সমতুল্য কেউ হয়ে উঠতে পারবে না,” বলেন শ্রীনিবাসন। |