বন্ধ ফেরি
দুর্ভোগের যাতায়াত
ংস্কারের কাজ শেষ হয়নি। এক দশকেরও বেশি বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। ফলে সমস্যায় রয়েছেন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। এই অবস্থা হাওড়া বি গার্ডেন ঘাটের।
শালিমার রেল স্টেশনের কাছেই বি গার্ডেন ঘাট। ঘাটটি হাওড়া পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। সংলগ্ন বিই কলেজ, নস্করপাড়া, দানেশ শেখ লেন, লক্ষ্মীনারায়ণতলা, কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দারা কলকাতার ফেয়ারলি ঘাট, বিচালি এবং চাঁদপাল ঘাটে যেতে এখান থেকে ফেরি ধরতেন। কিন্তু ২০০০ থেকে তা বন্ধ রয়েছে বলে বাসিন্দারা জানান। এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা কয়েক কিলোমিটার দূরের নাজিরগঞ্জ ঘাট। যদিও সেখান থেকে ফেয়ারলি বা চাঁদপালে যাওয়া যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিস মণ্ডলের কথায়: “দীর্ঘ এক দশক ধরে ফেরি বন্ধ। খুবই সমস্যায় রয়েছি। গার্ডেনরিচ ছাড়া কলকাতার অন্য জায়গায় যেতে হলে বাসই ভরসা।”
বি গার্ডেন ঘাটের যাত্রী-প্রতীক্ষালয়টিও ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। এক পাশে স্তূপাকার আবর্জনা। নদীর পাড় বাঁধানোর সময়ে পোঁতা খুঁটিগুলি তোলা হয়নি। জোয়ারের সময় এগুলি জলের তলায় চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সুপর্ণা দত্ত বলেন, “মাঝেমধ্যে স্নান করতে আসি। জোয়ারের সময় খুঁটিগুলি দেখা যায় না। অসাবধান হলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।” এ ছাড়া ঘাটের আশেপাশে আলোও পর্যাপ্ত নয়। অভিযোগ, এখানে অবৈধ ভাবে গাড়ি পার্ক করা থাকে। সন্ধ্যা হলেই সমাজবিরোধীদের আনাগোনা শুরু হয়।
গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে (জিএপি) ’০৯-এ শিবপুর, নাজিরগঞ্জ এবং বি গার্ডেন ঘাটের সংস্কারের কাজ শুরু হয়। এর জন্য ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি অর্থ বরাদ্দ করে। পরে গুরুত্ব বুঝে বি গার্ডেন ঘাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়। এর পরেও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “জিএপি-র আধিকারিকদের বলেছিলাম বি গার্ডেন ঘাট থেকে ফেরি চলাচল শুরু করা খুবই জরুরী। এ ছাড়া পাশেই পার্ক তৈরির কথাও ছিল। সেই মতো কাজ শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎই কাজ থমকে যায়। এখন সেখানে অবৈধ পার্কিং হচ্ছে।”
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বলেন, “বি গার্ডেন ঘাট থেকে আগে পর্যাপ্ত যাত্রী হত না। ফলে লোকসান হত। তাই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এখন স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করলে বিষয়টি আলোচনা করে দেখা হবে।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে এরকম কোনও আবেদন পাইনি। আবেদন পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”
জিএপি-র এক আধিকারিক বলেন, “বি গার্ডেন ঘাটের সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। আলো এবং যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের সংস্কারের কাজ এই পরিকল্পনার মধ্যে ছিল না। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের নয়।” ডেপুটি মেয়র কাবেরী মৈত্র বলেন, “আমাদের অর্থের অভাব রয়েছে। অর্থ এলে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। ওখানে অসামাজিক কাজকর্ম ও অবৈধ পার্কিং-এর অভিযোগ পেয়েছি। আমরা পুলিশকে জানাব।” হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “বি গার্ডেন ঘাটের কাছে অবৈধ পার্কিং বা অসামাজিক কাজকর্মের কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।”

ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.