জ্বরের প্রকোপ এখনও কমেনি অন্ডালের দীর্ঘনালা গ্রামে। বৃহস্পতিবার মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তাদের সঙ্গে গ্রামে আসেন স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডেঙ্গি বিশেষজ্ঞ বিভূতিভূষণ সাহা-সহ পাঁচজন চিকিৎসকের একটি দল। তাঁরা রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করেন।
বিভূতিভূষণবাবু জানান, এ দিন প্রথমেই তাঁরা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি এই গ্রামের রোগীদের সঙ্গে দেখা করেন। তারপর গ্রামে আসেন। তিনি আরও জানান, ডেঙ্গি, টাইফয়েড এবং ম্যালেরিয়ার মতো জ্বরে কয়েকশো বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এসব শুনেই তাঁরা এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন। ওই গ্রামে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তরফে যে অস্থায়ী চিকিৎসা শিবির গড়া হয়েছে সেখানেও কয়েকঘন্টা কাটান তাঁরা। রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সামনেই ১২ জনকে নতুন করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে ২৯ জন জ্বর নিয়ে সেখানে ভর্তি আছেন। বিভূতিভূষণবাবু জানান, সংগৃহীত রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে চিকিৎসকদের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানান। দুর্গাপুরে ভর্তি আক্রান্তদের সম্পর্কে আইএমএ’র রাজ্য সহ-সভাপতি তথা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক মিহির নন্দী জানান, আইএমএ’র পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ দিন অস্থায়ী স্বাস্থ্য শিবিরে তাঁদের সামনেই স্বাস্থ্য দফতরের আনা একটি মশা মারার কামান পরীক্ষা করে দেখা যায় সেটি অকেজো। সঙ্গে সঙ্গে তা ফেরত পাঠানো হয়। পরে দেখা যায়, স্প্রে করার একটি মেশিন আনা হয়েছে। কিন্তু তাতে যে তিনশো লিটার কেরোসিন তেল প্রয়োজন, তা নেই। অবিলম্বে তেল জোগাড় করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই প্রতিনিধি দলের সামনে এলাকার বাসিন্দারা জানান, ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীদের ব্যবহার খারাপ। ফলে অনেক রোগী অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। আর যাঁদের সঙ্গতি নেই তাঁরা বাধ্য হয়ে সেখানে ভর্তি থাকছেন। পুরো বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তারা। মাস দু’য়েকের মধ্যে এই গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক ছাত্র ও এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার এই সমস্যার প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা অন্ডাল বিডিওর কাছে বিক্ষোভ দেখাতে যান। কোনও আশ্বাস না মিললে তাঁরা গ্রামের অন্ডাল-মাধাইগঞ্জ রাস্তা দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করেন। পরে এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান এলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। |