রাস্তার পাশে বালির স্তূপে শুয়ে ছিল একটি কুকুর। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ এক নাগা জওয়ান কুকুরটিকে লক্ষ করে বন্দুকের ট্রিগার টিপে দেন। গুলির ঘায়ে কুকুরটি মরে যায়। বৃহস্পতিবার বার বেলায় এই ঘটনাকে ঘিরে পুরুলিয়া শহরের জেলখানা মোড়ে বড়হাটের কাছে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পথচারী ও বাসিন্দারা নাগা জওয়ানদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তা সামাল দিতে এসে পুরুলিয়ার ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) পিনাকী দত্ত সেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলের বিভিন্ন থানা এলাকার শিবিরে মোতায়েন থাকা জওয়ানরা পুরুলিয়া শহরে মাঝে মধ্যে বাজার করতে আসেন। বৃহস্পতিবার বেলায় একটি গাড়িতে ১২-১৫ জনের নাগাবাহিনীর একটি দল পুরুলিয়া শহরে বাজার করতে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলখানা মোড়ে বড়হাটের কাছে সুপার মার্কেট তৈরির কাজ চলছে। সেখানে বালির স্তূপে শুয়ে ছিল একটি কুকুর। হঠাৎ গাড়ি থেকে নেমে এক জওয়ান সরাসরি কুকুরটিকে গুলি করে। যন্ত্রণায় ছটকাতে ছটকাতে কুকুরটি কিছু দূরে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ভিড়ে ঠাসা এলাকায় হঠাৎ গুলি চলায় পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। নাগা জওয়ানরা গুলি চালিয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ায়, তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। |
ঘটনাস্থলে চলে আসেন পুরুলিয়া সদর থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কুকুরটিকে সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দেন। জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। নাগা বাহিনীর সশস্ত্র পুলিশের কর্মীরাই কুকুরটিকে গুলি করেছেন কি না খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
তবে মাওবাদী দমনে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে মোতায়েন করা নাগাল্যান্ড সশস্ত্র পুলিশের ১১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের নিয়ে ক্ষোভের প্রথম কারণ এটাই নয়। গত কয়েক বছরে জঙ্গলমহলে কিছু বিক্ষিপ্ত গোলমালের সূত্রে রয়েছে এই বাহিনীর জওয়ানদের কার্যকলাপ। ওঁদের নিয়ে প্রথম থেকেই বারেবারে সমস্যায় পড়তে হয়েছে রাজ্য পুলিশের কর্তাদের। আগে বলরামপুর থানা এলাকায় পুলিশের শিবিরে নিজেদের মধ্যে গুলির লড়াইতে মৃত্যু হয় নাগাবাহিনীর এক জওয়ান। পরে তাঁদের ছোড়া গুলিতে বলরামপুরেই মত্যু হয়েছিল পথচলতি দু’জনের। গুলি লেগেছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতেও। সে বারও জেলা পুলিশকে কম সমস্যায় পড়তে হয়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নাগা বাহিনীর জওয়ানদের আরও সংযত হওয়ার জন্য বলা হবে।” |