ছাত্রীর আচমকা মৃত্যুতে অবরোধ স্কুলপড়ুয়াদের
শম শ্রেণির এক ছাত্রীর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় স্কুলকে দায়ী করে আসানসোলে পথ অবরোধ করল বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। কী কারণে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তা অবশ্য পরিষ্কার জানা যায়নি। আজ, শুক্রবার স্কুলে গিয়ে খোঁজখবর করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আসানসোলে শশীভূষণ গড়াই রোডে একটি হিন্দি মাধ্যম মিশনারি স্কুল ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার সকালে। পুলিশ জানায়, সোফিয়া খাতুন (১৫) নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী স্কুলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও কিছু ক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তার বাবা মহম্মদ ফরিউদ্দিন স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্কুলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য মেলেনি।
ফরিউদ্দিনের অভিযোগ, “আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ প্রার্থনা সভায় দাঁড়িয়ে আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রার্থনার শেষে ক্লাসে ফিরে শ্রেণিশিক্ষিকাকে সে নিজের অসুস্থতার কথা জানায়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সঙ্গে-সঙ্গে হাসপাতালে না পাঠিয়ে বিশ্রাম কক্ষে বসিয়ে রাখেন। অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার পরে সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ আমাকে খবর পাঠানো হয়। আমি গিয়ে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

বিক্ষোভে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় যখন সোফিয়াকে আনা হয়, তার মুখের পাশে গ্যাঁজলা লেগে ছিল। দেহের কোথাও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। শ্বাসপ্রশ্বাস খুব ধীরে বইছিল। মিনিট পনেরোর মধ্যেই সে মারা যায়। নিখিলবাবু বলেন, “এ রকম সংজ্ঞাহীন রোগীকে তাৎক্ষণিক যা যা চিকিৎসা দেওয়া দরকার, যেমন স্যালাইন, অক্সিজেন, জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন সবই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এত দ্রুত মেয়েটি মারা যায় যে আমরা পুরোটা বুঝেই উঠতে পারিনি। সাধারণত বিষক্রিয়ায় এ রকম দ্রুত মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট হাতে না এলে কিছুই বলা যাবে না।”
ফরিউদ্দিনের দাবি, এর আগে সোফিয়ার কোনও রকম অসুস্থতা ধরা পড়েনি। রমজান মাস চলায় সে-ও রোজা রেখেছিল। বুধবার আলো ফোটার আগেই, রাত ৩টে নাগাদ পরিবারের সকলের সঙ্গে সে খাবার খেয়েছিল। পরে সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে স্কুলের পোশাক পড়ে রওনা দেয়। সে ক্ষেত্রে ‘বিষক্রিয়া’ কী ভাবে হয়ে থাকতে পারে, বাড়ির লোকজন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। বাড়ির খাবারে বিষক্রিয়া হয়ে থাকলে অসুস্থ হতে এত বেলা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া, তেমন হলে অন্যেরাও অসুস্থ হতেন। তবে ছাত্রীটি অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে হাসপাতালে পাঠানো হলে তাকে বাঁচানো যেত বলে বাড়ির লোকজন মনে করছেন।
তেমনই মনে করছে সোফিয়ার কিছু বন্ধুও। এ দিন স্কুল খোলা হলেও মৃত্যু সংবাদ জানাজানি হতেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই সোফিয়ার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে বেশ কিছু ছাত্রী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আশপাশের আরও কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। শহরে মিছিল বের করে তারা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মিছিল ভগৎ সিংহ মোড়ে পৌঁছলে জিটি রোড অবরোধ শুরু হয়। ঘন্টাখানেক পরে আসানসোলের সিআই অলোক মিত্র গিয়ে যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। পুলিশ জানায়, মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.